ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিপিএল ফুটবলে প্রতিপক্ষ ফরাশগঞ্জ

ঢাকা আবাহনীর লক্ষ্য আজ পূর্ণ পয়েন্ট

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২ আগস্ট ২০১৭

ঢাকা আবাহনীর লক্ষ্য আজ পূর্ণ পয়েন্ট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথম ম্যাচে ড্র করতে করতে বেঁচে গেছে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। নবাগত সাইফ স্পোর্টিংয়ে আরেকটু হলেই পা হড়কাচ্ছিল তারা। কিন্তু ম্যাচ টেম্পারমেন্ট এবং অভিজ্ঞতার জোরে খেলায় জিতে যায় তারা (৩-২)। কিন্তু এমনটা ঘটেনি ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাবের বেলায়। নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারা ০-২ গোলে হেরে গেছে চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের কাছে। আজ আবাহনী-ফরাশগঞ্জ উভয়দলই পরস্পরের মুখোমুখি হচ্ছে সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। ‘সাইফ পাওয়ার ব্যাটারি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে’র দশম আসরে আজ দল দু’টির শক্তির পর্যালোচনা করলে স্পষ্টতই যোজন ব্যবধানে এগিয়ে থাকবে ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’ খ্যাত আবাহনী। তারা চাইবে ফরাশগঞ্জকে হারিয়ে পূর্ণ তিন পয়েন্ট অর্জন করতে। তবে ফুটবলে যেহেতু কোন কিছুই অসম্ভব নয়, সেহেতু ‘লালকুঠী’ খ্যাত ফরাশগঞ্জ যদি পচা শামুকের ভূমিকা পালন করে আবাহনীর পয়েন্ট নষ্ট করতে পারে তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আবাহনী হচ্ছে গত লীগের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন। আর ফরাশগঞ্জ ২০১৪-১৫ মৌসুমের লীগে পয়েন্ট টেবিলের সর্বশেষ স্থানে থেকে অবনমিত হয়েছিল (সেবার আবাহনী হয়েছিল চতুর্থ)। সেবার প্রথম সাক্ষাতে আবাহনী ঠিকই হোঁচট খেয়েছিল ফরাশগঞ্জের (০-০) কাছে। ফিরতি লড়াইয়ে অবশ্যই পরিষ্কার ব্যবধানে জিতেছিল আবাহনীই (৩-০)। ফরাশগঞ্জ যেহেতু শক্তির নিরিখে অনেক পিছিয়ে আবাহনীর চেয়ে তাই স্বভাবতই তাদের ওপর প্রত্যাশার কোন চাপ থাকবে না। বরং উল্টোটাই থাকবে আবাহনীর ওপর। লীগ হচ্ছে লম্বা রেসের মতো। এখানে ধারাবাহিকতা ধরে রাখাটাই হচ্ছে আসল ব্যাপার। আর এই কাজটি যারা সুচারুভাবে করতে পারে শিরোপার মালিক তারাই হয়। স্বাধীনতার পর এই কাজটিই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানের সঙ্গে সবচেয়ে বেশিবার করে দেখিয়েছে আবাহনী। তারা লীগ শিরোপা জিতেছে মোট ১২ বার। আর পেশাদার লীগ চালু হবার পর এখানেও তারা সবচেয়ে বেশিবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পাঁচবার। আবাহনীকে এখন প্রমাণ করতে হবে ‘মুকুট পরার চেয়ে তা ধরে রাখা কঠিন।’ এবারের লীগে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারে তিনবারের চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানম-ি এবং একবারের চ্যাম্পিয়ন শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র। দুটো ক্লাবই বড় বাজেটের বিনিময়ে এবার দলগঠন করেছে। দেশের ফুটবলের সবচেয়ে বড় দুটি নামের একটি ঢাকা আবাহনী। অপরটি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। বিগত বছরগুলোতে মোহামেডানের অবস্থা যেখানে শোচনীয় সেখানে আবাহনীর আছে ঈর্ষণীয় সাফল্য। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত আবাহনীই প্রথম ক্লাব যারা তৎকালীন ঢাকা লীগ (১৯৭২-৯২) এবং বর্তমানে পেশাদার লীগ (২০০৭ থেকে চলমান) উভয় ক্ষেত্রেই প্রথম হ্যাটট্রিক শিরোপা জেতে। ঢাকা লীগে জেতে ১৯৮৩, ১৯৮৪ ও ১৯৮৫ সালে। আর পেশাদার লীগে ২০০৭, ২০০৮ ও ২০০৯ সালে। গত মৌসুমে আবারও লীগ জিতে দীর্ঘ আট মৌসুমের লীগ-বন্ধ্যাত্বের অবসান ঘটায় তারা। শুধু তাই নয় জিতে নেয় চলতি মৌসুমসূচক আসর ফেডারেশন কাপেরও শিরোপা। এ আসরটি জিতেও তারা শিরোপা সংখ্যায় ছুঁয়ে ফেলে মোহামেডানকে (১০ বার)। এছাড়া স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে হেরে না গেলে ১৯৮২ সালের মোহামেডান এবং ২০১২-১৩ সালের শেখ রাসেলের পর তৃতীয় ক্লাব হিসেবে এক মৌসুমে ‘ট্রেবল’ জিততে পারতো। তবে এবার লীগ ও স্বাধীনতা কাপের শিরোপা জিতে সেই অপ্রাপ্তি ঘোচাতে চায় তারা। তরুণ আর অভিজ্ঞদের নিয়ে দল দারুণ ভারসাম্যপূর্ণ হওয়ায় এবারও শিরোপা ধরে রাখার ব্যাপারে আশাবাদী আবাহনীর ক্রোয়েশিয়ান কোচ দ্রাগো মামিচ। আর খেলোয়াড়রাও চান নিজেদের সর্বোচ্চটা নিংড়ে দিতে। গতবারের দলটার চেয়ে এই দলটা একেবারেই ভিন্ন। অভিজ্ঞ আর তারুণ্যের মিশ্রণে দারুণ ভারসম্যপূর্ণ দল আবাহনী। তারা কি এবার পারবে অভীষ্ট লক্ষ্য হাসিল করতে?
×