ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রেমের মঞ্চেও অভিজ্ঞ তারা

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২ আগস্ট ২০১৭

প্রেমের মঞ্চেও অভিজ্ঞ তারা

কোহলি-আনুশকার প্রেম, রোমাঞ্চ বছর চারেক হতে চলল। ২০১৪ সালে একসঙ্গে স্যাম্পুর বিজ্ঞাপনের পর যেটি ব্যাপকভাবে চাউর হয়। পত্রিকা, টেলিভিশন, শুটিং স্পট, মাঠ ও মাঠের বাইরে সমানে আলোচনায় উঠে আসে দুই অঙ্গনের গ্লামার জুটি। হোটেলে রাত কাটানো, কোহলির জন্য আনুশকার শ্রীলঙ্কা, এমনকি ইংল্যান্ডে ছুটে যাওয়া। বিদেশ সফর থেকে ঘরে না ফিরে কোহলির সরাসরি আনুশকার বাসায় চলে যাওয়া। ভারতীয় বোর্ডের পক্ষ থেকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া নিয়ে গুঞ্জন। কখনও আবার সংবাদ সম্মেলনে আনুশকাকে নিয়ে প্রশ্ন করায় কোহলির ক্ষেপে যাওয়া। এসবই ২০১৪-২০১৬, এই সময়কার ঘটনা। এরপর খবর বেরোয়, মানিয়ে চলতে না পেরে দুই তারকার রোমাঞ্চের ইতি ঘটেছে। দু’জনের পক্ষ থেকেও এমন ইঙ্গিতপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করা হয়। এরপর কোহলি ভারতের অধিনায়ক হওয়ার পর দলকে ওড়াচ্ছেন। আচরণেও বেশ পরিবর্তন এসেছে। আনুশকার সঙ্গে পুরনো সম্পর্কটাও নাকি নতুন করে জোড়া লেগেছে। যুবরাজ সিং- হ্যাজেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে একসঙ্গে উপস্থিত হন। সম্প্রতি গ্রেট শচীন টেন্ডুলকের বায়োপিক ‘শচীন ঃ এ বিলিন ড্রিমস’Ñএর বিশেষ প্রদর্শনীতে হাজির হন কোহলি-আনুশকা। কিন্তু আগের মতো অত আলোচনা নেই, মিডিয়ায় উল্টা-পাল্টা কথাও আর সেভাবে চাউর হচ্ছে না। তাহলে কি প্রেম-রোমাঞ্চের ক্ষেত্রেও অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছে এ জুটি? শচীনের প্রিমিয়ারে তারকা ক্রিকেটাররা সবাই দলের জার্সি পরে এসেছিলেন। আনুশকাও তাঁর প্রেমিকের পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে একটি জাম্পস্যুট গায়ে চাপান! এর আগে যুবরাজ সিং ও হ্যাজেলের বিয়েতেও বিরাট-আনুশকা একসঙ্গে সব অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন। সম্প্রতি ক্রিকেটার জহির খান ও অভিনেত্রী সাগরিকার বাগদানেও ছিল তাঁদের উজ্জ্বল উপস্থিতি। শচীনের ছবির উদ্বোধনীতে আরও উপস্থিত ছিলেন অমিতাভ বচ্চন, ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন, আমির খান, শাহরুখ খান, অভিষেক বচ্চন, রণবীর সিংসহ অনেকে। ভারতীয় ক্রিকেটারদের প্রেমের বিষয়টি বেশ পুরনো। ভারতীয় অভিনেত্রীদের সঙ্গে পাকিস্তানী ক্রিকেটারদের প্রেমের গুঞ্জনও উঠেছে অনেকবার। তবে বিরাট কোহলি ও আনুশকা শর্মার মতো এতটা খোলামেলা প্রেম আর কারও ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। দু’বছর ধরে বলিউডের এ অভিনেত্রীর সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করেছেন ভারতের ক্রিকেটার বিরাট কোহলি। এমনকি এক সময় তাদের দুজনকে ভারত ক্রিকেট বোর্ড ‘স্বামী-স্ত্রী’ হিসেবেও বিবেচনা করেছে। ভারতীয় ক্রিকেটাররা নিজের স্ত্রীদের দেশের বাইরে সফরে নিয়ে যেতে পারবেন কিনা তা নিয়ে মাঝে একটা বিতর্ক উঠেছিল। সেখানে অন্য খেলোয়াড়দের স্ত্রীর সঙ্গে কোহলির গার্লফ্রেন্ড আনুশকা শর্মাকেও অনুমতি দেয়া হয়। ২০১৫ অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে ভারতের ব্যর্থতার জন্য কোহলির সঙ্গে আনুশকার উপস্থিতিকে দায়ী করেন অনেকে। প্রেমের ক্ষেত্রে তারা কখনও রাখঢাক রাখেননি। সবার সামনেই একসঙ্গে হাত ধরে ঘুরছেন, হোটেলে একরুমে থেকেছেন, একসঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছেন, এমনকি প্রকাশ্যে চুমুও খেয়েছেন। কিন্তু সেই প্রেমেই আবার ভাটা পড়ে। গত বছরই শোনা যায় তাদের সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে। যখন নিজের একটি ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে কোহলি লেখেন, ‘হার্টব্রোকেন’। এতে ফলোয়াররা হুমড়ি খেয়ে পড়ে। সবাই বুঝতে পারেন, আনুশকার সঙ্গের সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ায় কোহলি নিজেও ভেঙ্গে পড়েছেন। এটা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টির পর কয়েক ঘণ্টা পর ছবিটি সরিয়ে ফেলেন কোহলি। এরপর আরেকটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘মানুষের ভাবে মনে হচ্ছে, আগের ছবি মুছে দিয়ে আমি অন্যায় করে ফেলেছি। হা.. হা.. সরি। এই আমি আবার ছবি দিলাম!’ ‘মুম্বাই মিরর’ তখন সংবাদ প্রকাশ করে, ২০১৬ সালের শুরুতে আনুশকাকে সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দেন কোহলি। কিন্তু আনুশকা সরাসরি সেটি প্রত্যাখ্যান করেন। দুজনেরই বয়স কম এবং সামনে আরও অনেক পথ এগোতে হবে বলে বিয়েতে মত দেননি আনুশকা। এছাড়া দুজনের মধ্যে গত মাস খানেক সম্পর্ক মোটেও ভাল যাচ্ছে না। সালমান খানের সঙ্গে ‘সুলতান’ সিনেমার শুটিংয়ে আনুশকা তখন খুবই ব্যস্ত। কোহলিকে মোটেও সময় দিতে পারছেন না। অথচ আনুশকার সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য বিশ্বকাপের আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষের টি২০ সিরিজ থেকে ছুটি নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ছুটি নিয়েও সেটা কাজে লাগাতে পারেননি। আর ওই বিষয়টি নিয়েই তাদের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু বলে জানায় ‘মুম্বাই মিরর’। দুজনই একে অপরের টুইটার ও ইনস্টাগ্রাম থেকে আনফলো করলে সেটি আরও তীব্র রূপ পায়। এখন আর ফেসবুক-টুইটারে সরব নন কেউ। অধিনায়ক কোহলি ব্যস্ত ভারতের গুরুদায়িত্ব নিয়ে। আর আনুশকা সিনেমায়। আবার শচীনের মতো গ্রেটের অনুষ্ঠানে ঠিকই একসঙ্গে হাজির হচ্ছেন। তাহলে কি ভেতরে ভেতরে অনেক অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছেন? রোমান্স সম্পর্কে কোহলির তুলনায় আনুশকা একটু বেশিই ম্যাচিউরড। স্যাম্পুর সেই বিজ্ঞাপনের পরই এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি বিরাটের সঙ্গে অভিসারে মেতে উঠিনি। তবে তাঁর সঙ্গে আমার দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।’ আনুশকা আরও বলেন, ‘বিরাট খুবই ভদ্র ও মার্জিত একজন মানুষ। হ্যাঁ, মাঝেমধ্যে আমাদের দেখা-সাক্ষাত হয়। মুম্বাইয়ে পা রাখলে তিনি আমার কাছে আসেন। আমি মনে করি, এটা খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা। বন্ধুদের মধ্যে তো দেখা-সাক্ষাত হবেই। কিন্তু আমি নিশ্চিত করেই বলতে পারি, আমরা প্রেমের সম্পর্কে জড়াইনি।’ শুধু তা-ই নয়, ওই সময় আনুশকা তাঁর এ্যাপার্টমেন্ট ভবনের লিফটে এক মহিলার সামনে বিরাটের ঠোঁটে চুমু খেয়েছেন বলেও খবর চাউর হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টিকে বেমালুম অস্বীকার করেন এই ‘ব্যান্ড বাজা বারাত’ তারকা। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আনুশকা হাসতে হাসতে বলেন, ‘চুমু খাওয়া তো দূরের কথা, কাউকে আলিঙ্গন করার অভ্যাসও আমার নেই। ছবির সেটে সবাই যখন একে অন্যকে আলিঙ্গন করে, তখন খুবই অস্বস্তি অনুভব করি আমি!’
×