ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নেত্রকোনার কলমাকান্দা-ঠাকুরাকোনা সড়ক যেন চাষের জমি

প্রকাশিত: ২৩:৪৪, ৩১ জুলাই ২০১৭

নেত্রকোনার কলমাকান্দা-ঠাকুরাকোনা সড়ক যেন চাষের জমি

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা ॥ ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন এবং দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় জেলার অতি গুরুত্বপূর্ণ কলমাকান্দা-ঠাকুরাকোনা সড়কটি এখন চাষের জমিতে পরিণত হয়েছে। সড়কের বেশীরভাগ অংশের পিচ-সুড়কি উঠে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে বিশাল বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দ। আর এসব গর্ত ও খানাখন্দের ওপর দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায় সময় আটকে পড়ছে যানবাহন। ঘটছে দুর্ঘটনা। জানা গেছে, নেত্রকোনা সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা থেকে কলমাকান্দা সদর পর্যন্ত সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) আওতাধীন এ সড়কটি নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। কলমাকান্দা থেকে জেলা সদরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী এ সড়ক দিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্যও নির্ভর করে এ সড়কটির ওপর। তাছাড়া শ্যামগঞ্জ-দুর্গাপুর সড়কটি অনেক আগেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় দুর্গাপুর উপজেলার লোকজনও জেলা সদরে যাতায়াতের জন্য এখন এ সড়কটি ব্যবহার করেন। অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ভ্রমণপিপাসুরা এ সড়ক দিয়ে দুর্গাপুর-কলমাকান্দার পাহাড়ী জনপদ এবং আদিবাসীদের জীবনধারা দেখতে যান। এছাড়াও এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাকের সাহায্যে দুর্গাপুর ও কলামাকান্দার বিভিন্ন নদীর সিলিকা বালি এবং কয়লা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ২১ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের প্রায় ১৮ কিলোমিটারই ভেঙ্গে গেছে। সবচেয়ে বেশী খারাপ অবস্থা উড়াদীঘি, নিশ্চিন্তপুর, ধলপুর, তেঘরিয়া, হিরাকান্দা, গোমাই, আশারানী, পাবই, গুতুরা, পাঁচউড়া, বাহাদুরকান্দা এলাকার। এসব এলাকা রীতিমতো মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বিকল্প সড়ক না থাকায় চরম ঝুঁকি নিয়ে শত শত ট্রাক, বাস, টেম্পু, সিএনজি, ব্যাটারিচালিত রিক্সাসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করছে সড়কটিতে। নিরূপায়ে যাত্রীরাও জীবনের ঝুঁকি নিতে বাধ্য হচ্ছেন। আমিরুল ইসলাম নামে এক বাস চালক জানান, আগে সড়কটি পাড়ি দিতে সর্বোচ্চ ৪৫ মিনিট সময় লাগতো। এখন আড়াই ঘন্টায়ও যাওয়া যায় না। প্রায় সময় গাড়ি আটকে পড়ে। চাকা ও নাট-বল্টু বিকল হয়ে যায়। নেত্রকোনা সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী আমিন আহমেদ নামে জানান, আগে কলমাকান্দা থেকে বাসে গিয়ে ক্লাস করতাম। রাস্তা নষ্ট হওয়ার কারণে এখন আর তা সম্ভব হয় না। ফলে বাধ্য হয়ে জেলা শহরের একটি মেস-বাড়িতে উঠেছি। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক রাইমিন মিয়া জানান, মাঝে মাঝে সরকারী লোকজন রাস্তার গর্তগুলোতে কিছু খোয়া ও বালু ফেলে যায়। কিন্তু দু’দিন যেতে না যেতেই আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। এদিকে সড়কটি অতি অপ্রশস্ত হওয়ায় অনেক সময় দু’টি বাস-ট্রাক ক্রসিং করতে পারে না। এ কারণে সড়কটি আরও প্রশস্ত করারও দাবি আছে স্থানীয়দের। সওজ বিভাগের স্থানীয় নির্বাহী প্রকৌশলী দিদারুল আলম তরফদার জানান, ‘আপাতত ইট, খোয়া ও বালু দিয়ে সড়কটি সচল রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়া সড়কটি স্থায়ীভাবে সংস্কার ও প্রশস্ত করার জন্য ডিপিপি (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোফাইল) প্রস্তুত করা হয়েছে। শীঘ্রই তা মন্ত্রনালয়ে জমা দেয়া হবে। আশা করা যায় দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি পাশ হবে।
×