ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা

পুঁজিবাজারে লেনদেন কমেছে ৩৮.৬৩ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৬:২০, ৩০ জুলাই ২০১৭

পুঁজিবাজারে লেনদেন কমেছে ৩৮.৬৩ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সমাপ্ত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব ধরনের মূল্যসূচক বাড়লেও কমেছে লেনদেন। আলোচ্য সপ্তাহে লেনদেন কমার পরিমাণ ছিল ৩৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ। ঢাকা স্টক একচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, গত সপ্তাহে লেনদেন হয় ৩ হাজার ১১৭ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার, যা এর আগের সপ্তাহে ছিল ৫ হাজার ৭৯ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার। সে হিসাবে গত সপ্তাহে লেনদেন কমেছে ১ হাজার ৯৬২ কোটি ১১ লাখ টাকা বা ৩৮.৬৩ শতাংশ। এদিকে, গত সপ্তাহে আলোচিত ঘটনার মধ্যে ছিল আগামী ছয় মাসের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা। এ মুদ্রানীতিতে পুঁজিবাজারের জন্য বিশেষ কোন নির্দেশনা নেই। তবে নতুন এ নীতিতে বেসরকারী খাতের ঋণপ্রবাহ কিছুটা কমানোর আশ্বাস দেয়া হয়েছে। এছাড়া সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোরও সুপারিশ করা হয়েছে। সার্বিকভাবে এ মুদ্রানীতি কিছুটা ইতিবাচক পুঁজিবাজারের জন্য। তাই তেমন কোন নেতিবাচক প্রভাব না পড়লেও বিনিয়োগকারীরা সতর্কভাবে নতুন করে শেয়ার কেনা-বেচা করছেন। এছাড়া ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বীমা কোম্পানিগুলোর অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ শুরু হয়েছে। সেটিরও প্রভাব বাজারে ছিল। সমাপ্ত সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯১ দশমিক ৯২ শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ৩ দশমিক ৩২ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২ দশমিক ৮০ শতাংশ। ডিএসইর ডিএসইএক্স সূচক বেড়েছে দশমিক ৫৬ শতাংশ বা ৩২.৬০ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই৩০ সূচক বেড়েছে দশমিক ৩৪ শতাংশ বা ৭.৩১ পয়েন্ট। অপরদিকে শরিয়াহ বা ডিএসইএস সূচক বেড়েছে দশমিক ৩০ শতাংশ বা ৩.৯৫ পয়েন্ট। গত সপ্তাহে ডিএসইর সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) কমেছে। আগের সপ্তাহের চেয়ে পিই রেশিও কমেছে দশমিক ২০ পয়েন্ট বা দশমিক ৬২ শতাংশ। ডিএসইর তথ্যানুযায়ী, আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইতে পিই রেশিও অবস্থান করছে ১৬ দশমিক ০৬ পয়েন্টে। এর আগের সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ১৬ দশমিক ১৬ পয়েন্ট। বিশ্লেষকদের মতে, পিই রেশিও যতদিন ১৫-এর ঘরে থাকে ততদিন বিনিয়োগ নিরাপদ থাকে। সপ্তাহ শেষে খাতভিত্তিক ট্রেইলিং পিই রেশিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, ব্যাংক খাতের পিই রেশিও অবস্থান করছে ৯.১ পয়েন্টে, সিমেন্ট খাতের ২৬.৩ পয়েন্টে, সিরামিক খাতের ২৫ পয়েন্টে, প্রকৌশল খাতের ২৩.১ পয়েন্টে, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২৮.১ পয়েন্টে, জ্বালানি ও বিদ্যুত খাতে ১৩.৪ পয়েন্টে, সাধারণ বীমা খাতে ১২.৯ পয়েন্টে, তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে ২৭.৫ পয়েন্টে। এছাড়া পাট খাতের পিই রেশিও মাইনাস ২২.১ পয়েন্টে, বিবিধ খাতের ৩০.৪ পয়েন্টে, এনবিএফআই খাতের ১৯.৭ পয়েন্ট, কাগজ খাতের মাইনাস ৪৪.৪ পয়েন্টে, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ১৯.৩ পয়েন্টে, সেবা ও আবাসন খাতের ১৭.৪ পয়েন্টে, চামড়া খাতের ১৮.১ পয়েন্টে, টেলিযোগাযোগ খাতের ১৬.৪ পয়েন্টে, বস্ত্র খাতের ২৮.৪ পয়েন্টে এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের ২৫.২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৩৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৮৬টি কোম্পানির, কমেছে ১১৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৮টির। আর লেনদেন হয়নি দুটি কোম্পানির শেয়ার। সাপ্তাহিক লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলোÑ লঙ্কা-বাংলা ফাইন্যান্স, ইফাদ অটো, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, গ্রামীণফোন, শাহজিবাজার পাওয়ার, ফু-ওয়াং ফুড, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ ও ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড। দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলোÑ রূপালী ব্যাংক, সাফকো স্পিনিং, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, হাক্কানী পাল্প, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, মুন্নু সিরামিক ও ফাইন ফুড। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলোÑ আইসিবি এএমসিএল ২য় মিউচুয়াল ফান্ড, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, বিডি অটোকার, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স, প্রগেসিভ লাইফ, ফাস ফাইন্যান্স, ব্র্যাক ব্যাংক, বিডি ফাইন্যান্স, ভানগ্যার্ড মিউচুয়াল ফান্ড ও পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।
×