ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এই সরকারের অধীনে ও এই কমিশনের মাধ্যমে আগামী নির্বাচন ॥ তোফায়েল

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ৩০ জুলাই ২০১৭

এই সরকারের অধীনে ও এই কমিশনের মাধ্যমে আগামী নির্বাচন ॥ তোফায়েল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ২০১৯ সালের ১৯ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তার মানে, আগামী বছরের শেষ তিন মাসের কোন এক সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, সবারই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা উচিত। তিনি বলেন, ‘সহায়ক সরকার চাই, ওইটা মানি না’ এ ধরনের কোন দাবিতে কাজ হবে না। এই সরকারের অধীনে এবং এই নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে ২০১৯ সালের ১৯ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে। নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে বলেও দাবি করেন তিনি। বিএনপিকে উদ্দেশ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অহেতুক ২০১৪, ২০১৩, ২০১৫ সালের মতো হরতাল, অবরোধ ও নাশকতা করে এবং মানুষ খুন করে লাভ হয় না। তিনি বলেন, ‘আশা করি, স্বাভাবিক অবস্থার মধ্যে দেশ চলবে। সব রাজনৈতিক দল আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর কার্যালয়ের এ্যাপারেল ক্লাবে ‘ডিজিটাল আরএমজি ফ্যাক্টরি ম্যাপিং ইন বাংলাদেশ’ (ডিআরএফএম-বি) শীর্ষক প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈয়দ সাদ আন্দালিব, সিএ্যান্ডএ বাংলাদেশের মহাব্যবস্থাপক শান্তনু সিনহা, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা উন্নয়ন কেন্দ্রের (সিইডি) উপদেষ্টা রহিম বি তালুকদার, ডিআরএফএম-বি প্রকল্পের পরিচালক পারভীন সুলতানা হুদা। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ডিআরএফএম-বি প্রকল্পের অধীনে বাংলাদেশের সব পোশাক কারখানার সমন্বয়ে একটি ডিজিটাল মানচিত্র করা হবে। সেটিকে গুগল ম্যাপে সংযুক্ত করা হবে। এছাড়া প্রতিটি কারখানার বিস্তারিত তথ্য-কারখানার ভৌগোলিক অবস্থান, শ্রমিক সংখ্যা, কোন ধরনের পণ্য তৈরি হয়, কারখানা ভবনের ধরন, নিকটবর্তী হাসপাতাল ও ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, ট্রেড ইউনিয়ন আছে কি নেই ইত্যাদি তথ্য থাকবে। প্রকল্পের ব্যবস্থাপক পারভীন সুলতানা হুদা প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী চার বছরে এটি বাস্তবায়িত হবে। ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল ম্যাপ পুরোপুরি চালু করা সম্ভব হবে। এর আওতায় দেশের ২০টি পোশাক উৎপাদনকারী জেলার ১০৪টি উপজেলার পোশাক কারখানাগুলো ডিজিটাল ম্যাপের মধ্যে আসবে। ফলে পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে দেশের এই খাত সম্পর্ক সহজে জানা যাবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সহায়তা করছে ব্র্যাক ইউএসএ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংশ্লিষ্ট সকল কারখানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ডিজিটাল ম্যাপে নিয়ে আসা হবে। কারখানার মৌলিক তথ্যগুলোর সঙ্গে কারখানা পণ্যের ধরন, উৎপাদন ধরন, নারী ও পুরুষ শ্রমিক, ক্রেতা কারা, কারখানার অনুমোদন ও সনদ, ফায়ার সিস্টেম, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কতদূর, নিরাপত্তা কমিটি, ট্রেড ইউনিয়ন তথ্য সব থাকবে। এ সম্পর্কে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল ম্যাপের মাধ্যমে আমাদের পোশাক খাত সম্পর্কে সহজে জানা যাবে। এটি বর্তমান সরকারের ডিজিটাল কার্যক্রমের আরেকটি ধাপ। অধ্যাপক সাদ আন্দালিব বলেন, দেশের পোশাক খাত নিয়ে গবেষণার অভাব রয়েছে। কিন্তু আমাদের গবেষণা করতে হবে আগামী ১০, ১৫ বা ২০ বছর পর পোশাক খাত কোথায় যাবে। এজন্য একটি গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠান করা জরুরী। এসময় তিনি দেশের মানবসম্পদকে শ্রমনির্ভর থেকে জ্ঞাননির্ভর করে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। শান্তনু সিং বলেন, ডিজিটাল ম্যাপ পোশাক খাতে স্বচ্ছতা আনবে। অনেক দেশ এমনটি এখনও চিন্তা করেনি। কিন্তু বাংলাদেশে সেটি হচ্ছে। বাংলাদেশ এখানেও নেতৃত্ব দিবে। বাংলাদেশ উৎসের জন্য বড় বাজার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ পাচ্ছে। সিদ্দিকুর রহমান বলেন, রানা প্লাজা ও তাজরীনের পর পোশাক খাতের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। আমরা সবুজ কারখানাও করছি। কিন্তু এসব বাদ দিয়ে শুধু আমাদের খারাপ দিকগুলো বলা হয়। আমাদের কিছু লোক, শ্রমিক নেতা এবং তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা বিদেশে দেশের পোশাক খাত নিয়ে শুধু নেতিবাচক কথা বলেন। সেটিই যেন তাদের লক্ষ্য। তাদের কাছে, পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা যেন শুধু লুটপাট করেন। তারা যে অর্থনীতির জন্য কিছু করছেন, মানুষকে চাকরি দিচ্ছেন সেটি দেখেন না।
×