ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বব্যাংক দুই প্রকল্পে চার হাজার ৫৬০ কোটি টাকা ঋণ দেবে

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৩০ জুলাই ২০১৭

বিশ্বব্যাংক দুই প্রকল্পে চার হাজার ৫৬০ কোটি টাকা ঋণ দেবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য, পুষ্টি এবং জনসংখ্যা সেবার উন্নয়নে সহজশর্তে ৫৭ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। প্রতি ডলার ৮০ টাকা হিসাবে এর পমিাণ প্রায় চার হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। দুটি প্রকল্পে এ অর্থ ব্যয় করা হবে। এগুলো হলোÑ হেলথ সেক্টর সাপোর্ট প্রজেক্ট এবং ডিজিটাইজিং ইমúিøমেন্টেশন মনিটরিং এ্যান্ড পাবলিক প্রকিউরমেন্ট প্রজেক্ট। শনিবার বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। সহজশর্তের এ ঋণে সার্ভিস চার্জ দিতে হবে শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ। ছয় বছরের রেয়াতি মেয়াদসহ ৩৮ বছরে পরিশোধ করতে হবে। ঢাকায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান বলেন, প্রকল্প দুটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন হবে। ফলে সাধারণ মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা সহজে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে। এছাড়া কার্যকর সরকারী কেনাকাটার মাধ্যমে সরকারী সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে। ফলে সরকারের উচ্চ মধ্য আয়ের দেশে যাওয়ার পথ সুগম হবে বলে আশা করছি। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, হেলথ সেক্টর সাপোর্ট প্রজেক্টটি বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংক ঋণ দেবে ৫১ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় চার হাজার ১২০ কোটি টাকা। প্রকল্পটির মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা পদ্ধতির ক্ষেত্রে বেশকিছু সংস্কার নিয়ে আসা হবে। সেই সঙ্গে মানসম্মত জরুরী স্বাস্থ্যসেবাগুলো জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে। বিশেষ করে সিলেট এবং চট্টগ্রাম বিভাগের যেসব এলাকার মানুষ জাতীয় গড়ের তুলনায় স্বাস্থ্যসেবা কম পাচ্ছেন, সেসব এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে গুরুত্ব দেয়া হবে। এ দুই বিভাগে বছরে প্রায় এক লাখ ৪৬ হাজার মাকে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনা হবে। এর মাধ্যমে নির্ধারিত টিকাগুলো নিশ্চিত করা হবে। প্রায় ৫০ লাখ শিশুকে টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্বব্যাংক ২০১৭ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত হেলথ সেক্টর প্রোগ্রামের আওতায় ১৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা করবে। এর সঙ্গে ১৫ মিলিয়ন রয়েছে গ্লোবাল ফাইন্যান্সিং ফ্যাসিলিটির অনুদান। এ কর্মসূচীর মাধ্যমে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু রোধ, নবজাতক ও গর্ভকালীন প্রস্তুতিসেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য বাস্তবায়ন করা হবে। অন্যদিকে ডিজিটাইজিং ইমপ্লিমেন্টেশন মনিটরিং এ্যান্ড পাবলিক প্রকিউরমেন্ট প্রজেক্টটি বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংক ঋণ দেবে পাঁচ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৪শ’ ৪০ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারী ক্রয় কার্যক্রম উন্নয়নের পাশাপাশি উন্নয়ন প্রকল্পের তদারকিতে প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বর্তমানে প্রতি বছর সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কেনাকাটা করে থাকে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ কেনাকাটাই হয় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে (এডিপি)। এ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের চলমান ই-জিপি কার্যক্রমকে সম্প্রসারিত করা হবে। এটি প্রায় ১৩শ’ সরকারী প্রতিষ্ঠানে ই-জিপি চালু করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। এছাড়া প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগে একটি অনলাইন প্লাটফর্ম তৈরি করা হবে, যেখান থেকে যে কোন উন্নয়ন প্রকল্পের আর্থিক ও ভৌত অগ্রগতি সম্পর্কে জানা যাবে। তাছাড়া জনগণকে সরকারী ক্রয় কাজের তদারকিতে কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত করা হবে। বিশ্বব্যাংকের টাস্ক টিম লিডার জাফরুল ইসলাম বলেন, ২০০২ সাল থেকে বিশ্বব্যাংক সরকারী ক্রয় ব্যবস্থায় একটি পরিবর্তন আনতে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ইলেক্ট্রনিক প্রকিউরমেন্ট চালু করা হয়। এ প্রকল্পটির মাধ্যমে নাগরিক সম্পৃক্ততা বাড়িয়ে জবাবদিহিতা ও সরকারী সম্পদের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।
×