ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়েই যোদ্ধার স্বীকৃতি পাচ্ছেন এক নকশাল!

প্রকাশিত: ০৪:০১, ৩০ জুলাই ২০১৭

মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়েই  যোদ্ধার স্বীকৃতি পাচ্ছেন এক নকশাল!

নিজস্ব সংবাদদাতা, নড়াইল, ২৯ জুলাই ॥ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছেন স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে নকশালরে দায়িত্ব পালনকারী এক ব্যক্তি। কালিয়া উপজেলার খাশিয়াল গ্রামের মিজানুর রহমান বিশ্বাস অর্থ ও প্রভাব খাটিয়ে সদ্যসমাপ্ত উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাইবাছাই কমিটির প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। বিষয়টি জানাজানি হবার পর প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় কয়েক মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমানকে তালিকা থেকে বাদ দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন। জানা গেছে, কালিয়া উপজেলার খাশিয়াল ইউনিয়নের খাশিয়াল গ্রামের মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান বিশ্বাস অর্থ ও প্রভাব খাটিয়ে সদ্যসমাপ্ত উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাইবাছাই কমিটির প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। এ ঘটনায় জয়নগর ইউনিয়নের সাবেক কমান্ডান মোল্যা সোহরাব হোসেনসহ কয়েকজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা অভিযুক্ত মিজানুর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেবার অনুরোধ জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধকালে মিজানুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল) এর নকশাল বাহিনীর সদস্য ছিল এবং খাশিয়াল গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক সরদারকে ১৯৭১ সালে হত্যা করেছিল মিজানুর রহমান। আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে সেই সময় ছোট থাকায় এবং তার বাবা ওই গ্রামের নতুন বাসিন্দা হওয়ায় লোকবলের ভয়ে কোন মামলা করেনি। অনলাইনে কালিয়া উপজেলা থেকে বাছাইকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মিজানুর রহমান বিশ্বাসের নাম ঢাকা জামুকা অফিসে পাঠানো হয়েছে। ইপিসিপি (এমএল) নকশাল মিজানুর রহমান বিশ্বাসকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা লজ্জা ও দুঃখজনক। এ বিষয়ে কালিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ তরিকুল ইসলাম মন্নু জানান, মিজানুর রহমান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। তিনি নকশাল ছিলেন। কিন্তু সদ্যসমাপ্ত উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাইবাছাইয়ে মিজানুর রহমান অর্থ ও প্রভাব খাটিয়ে কমিটির প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন কালিয়া উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (বর্তমানে ঝিনাদহ জেলার মহেশপুর উপজেলায় কর্মরত) কামরুল ইসলাম বলেন, কাগজপত্র যাচাই করে মনে হয়েছে মিজানুর রহমান মুক্তিযোদ্ধা। তাই আমি সুপারিশ করেছি। তবে তার (মিজানুর রহমান) ব্যাপারে আমার কাছে সুপারিশ ছিল। কমিটির সাত সদস্যের সম্মতিতেই এটা করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিজানুর রহমান বিশ্বাস বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা। আমি স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি।মুজিব বাহিনীর সার্টিফিকেট আছে। জমি নিয়ে বিরোধের কারণে একটি মহল বিভিন্নভাবে আমাকে হয়রানি করছে।
×