ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

শীতের আগেই ডোকলাম থেকে সেনা প্রত্যাহার

প্রকাশিত: ১৯:৩৪, ২৯ জুলাই ২০১৭

শীতের আগেই ডোকলাম থেকে সেনা প্রত্যাহার

অনলাইন ডেস্ক ॥ অবশেষে সন্ধির ইঙ্গিত। ভুটানের ডোকলাম-এ ভারত ও চিনের দীর্ঘ টানাপড়েনের মধ্যে বোঝাপড়া সম্ভব হয়েছে। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ও চিনের স্টেট কাউন্সিলার ইয়াং জিয়েচির মধ্যে আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে আগামী অক্টোবর মাসে শীত পড়ার আগেই ভারত ও চিন— দু’দেশই ডোকলাম থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে। বেজিংয়ে ব্রিকসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের বৈঠকে গিয়ে গত দু’দিন ধরে জিয়েচির সঙ্গে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন ডোভাল। দিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, ভারত ও চিনের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে যে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে জি-২০ দেশগুলির বৈঠকের সময়ে সেনা তোলার সিদ্ধান্ত কার্যকরী হবে। ডোভাল ও জিয়েচির আলোচনার পরে যদিও ভারত ও চিন— দু’দেশের তরফেই সরকারি ভাবে কোনও কথা বলা হয়নি। তবে এখন কোনও কথা না বললেও সেনা তোলার আগে ভারত ও চিন এই বিষয়ে একটি প্রস্তাব নিতে চলেছে। দিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, ডোকলাম-এ আপাতত স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে। অর্থাৎ, ভুটানের ভুখন্ডে চিন ও ভারতের সেনা যে ভাবে মুখোমুখি রয়েছে, সেই পরিস্থিতিই বহাল থাকছে। চিনের পক্ষ থেকে ডোভালকে বলা হয়েছে, ১ সেপ্টেম্বর চিনা সেনা পিপলস লিবারেশন আর্মির বার্ষিক দিবস। তার আগে সেনা তুললে তাদের জাতীয়তাবাদে আঘাত লাগবে। আবার ডোকলাম-এ ১ অক্টোবর নাগাদ শীত পড়ে গেলেও সেখানে সেনা পোস্ট রাখার ক্ষেত্রে চিনের অসুবিধা রয়েছে। কারণ, এলাকাটি চিনা সেনার সাপ্লাই লাইন থেকে বেশ কিছুটা দূরে। চিনও তাই ওই এলাকায় আলাদা পোস্ট রাখতে চায় না। তবে দু’পক্ষই ঠিক করেছে, এখন সমঝোতা সূত্রকে ঘোষণা না করে মোদীর বেজিং সফরের আগে সিদ্ধান্তের কথা সরকারি ভাবে জানানো হবে। যাতে ওই সময়ে সীমান্ত জটিলতা কেটে যাওয়ার বিষয়টি দু’দেশই বড় করে দেখাতে পারে। এ বছরের শেষে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেস। তার আগেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে ফেলতে চাইছে বেজিং। ফলে সীমান্তে আচমকা কিছু ঘটে না গেলে এই মুহূর্তে এটাই ঠিক হয়েছে যে এখন সন্ধির এই রোডম্যাপেই এগোবে ভারত ও চিন। বেজিংয়ে আজ চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিন ফিং ডোভাল-সহ ব্রিকসের দেশগুলির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি বলেন, ‘‘ব্রিকসের দেশগুলি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আর্থিক, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি। দেশগুলির পারস্পরিক যোগাযোগ ও আর্থিক সমঝোতা সবাইকেই শক্তিশালী করতে পারে।’’ চিনা প্রেসিডেন্টের মতে, ব্রিকসের দেশগুলি পরস্পরের প্রতি আস্থা অর্জন করতে সফল হয়েছে। এর আগে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের ওই বৈঠকে ডোভাল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই জোরালো করতে চিন-সহ ব্রিকসের দেশগুলির উদ্দেশে প্রস্তাব দেন। পাক জঙ্গি জইশ-ই-মহম্মদের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী আখ্যা দিতে রাষ্ট্রপুঞ্জে নয়াদিল্লির প্রস্তাব দীর্ঘ দিন থেকেই আটকাচ্ছে চিন। এ নিয়ে আমেরিকার মতো দেশ ভারতের পক্ষে থাকলেও বেজিং তাদের কট্টর অবস্থান থেকে সরে আসেনি। পাকিস্তানের পাশে এসেই দাঁড়িয়েছে তারা। এ বার বেজিংয়ে দাঁড়িয়েই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিলেন নয়াদিল্লির প্রতিনিধি অজিত ডোভাল। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×