ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্বস্তির জয়ে আবাহনীর শুরু

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ২৯ জুলাই ২০১৭

স্বস্তির জয়ে আবাহনীর শুরু

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আরেকটু হলেই পয়েন্ট খোয়াতে বসেছিল তারা। দু’বার এগিয়েও গিয়েছিল। কিন্তু নবাগত প্রতিপক্ষ বীর বিক্রমে দু’বারই সমতা ফেরালে প্রচ- চাপে পড়ে যায় গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে খেলা শেষ হবার মাত্র কয়েক মিনিট আগে আবারও গোল করে ম্যাচ জিতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে তারা। এ যেন ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ার মতোই। হ্যাঁ, শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিকেলে এমন দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। ঢাকা আবাহনী লিমিটেড ৩-২ গোলে হারায় সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডকে। বিজয়ী দল খেলার প্রথমার্ধে এগিয়ে ছিল ২-১ গোলে। ‘সাইফ পাওয়ার ব্যাটারি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ’ ফুটবলের এমন জমজমাট-উপভোগ্য ম্যাচের আগে প্রধান অতিথি হিসেবে লীগের উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়। ‘মুকুট পরার চেয়ে তা ধরে রাখা কঠিন।’ এই প্রবাদটিই এখন ভুল প্রমাণ করার চ্যালেঞ্জ নিতে যাচ্ছে ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’ খ্যাত ঢাকা আবাহনী। শুক্রবারের ম্যাচে আগে দুই গোল করে তেমনটাই জানান দিয়েছিল তারা। কিন্তু বিরতির ঠিক আগে এবং বিরতির পর তাদের অগোছাল খেলা এবং জোড়া গোল হজম দেখে খেলা দেখতে আসা আবাহনীর সমর্থকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে গিয়েছিল। ডাগ আউটে ক্রোয়েশিয়ান কোচ দ্রাগো মামিচেরও তাই। দ্বিতীয়ার্ধে যেন মাঠে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না ১২ বারের লীগ শিরোপাধারী আবাহনীকে। শেষ পর্যন্ত জয়সূচক গোলটি করে সমর্থকদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয় মামিচের শিষ্যরা। তবে তাদের খেলায় যে প্রচুর ভুল ছিল সেগুলো কাটিয়ে উঠতে আরও কাজ করতে হবে মামিচকে, এতে কোন সন্দেহ নেই। এবারের মৌসুমে কাগজে-কলমে অন্যতম শক্তিশালী দল হিসেবে গণ্য করা হচ্ছিল সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবকে। শুক্রবারের ম্যাচে তারা যেভাবে পিছিয়ে পড়েও সমতায় ফিরেছিল তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। কিন্তু আবাহনীর কাছে ম্যাচ টেম্পারমেন্টেই হেরে যায় বন্দরনগরীর দলটি। আশা জাগিয়েও হতাশাজনকভাবে হেরে যায় তারা। অথচ এবারের ফেডারেশন কাপে গ্রুপ পর্বে তারা ঠিকই ১-১ গোলে ড্র করে রুখে দিয়েছিল আবাহনীকে। শুক্রবারও হয়তো পারতো, কিন্তু ভাগ্যের দোষে আর ফিনিশিংয়ের ব্যর্থতায় তা আর হলো না। তবে তাদের আক্রমণাত্মক খেলা প্রশংসা করার মতো। ২১ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় আবাহনী। বাঁপ্রান্ত থেকে লেফট ব্যাক ওয়ালী ফয়সালের বাঁ পায়ের উড়ন্ত ক্রসে বক্সের ভেতর লাফিয়ে উঠে হেডে গোল করেন গত মৌসুমের শেখ জামাল ধানম-ির জার্সিতে ৯ গোল করা ঢাকা আবাহনীর নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড এমেকা ডার্লিংটন (১-০)। ২৪ মিনিটে পেনাল্টি পায় আবাহনী। সাদ উদ্দিন আর এমেকা পরস্পরের সঙ্গে বল দেয়া-নেয়া করতে করতে ঢুকে পড়েন সাইফের বক্সে। তাদের ডিফেন্ডার রহমত মিয়া সাদকে থামাতে গিয়ে অবৈধভাবে ফেলে দেন। বিধিসম্মত না হওয়ায় পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি মিজানুর রহমান। আর তা থেকে গোল করতে কোন ভুল করেননি এমেকা (২-০)। ৪২ মিনিটে নিশ্চিত গোলের সুযোগ হাতছাড়া করে আবাহনী। ডানপ্রান্ত থেকে ওয়ালী ফয়সালের পাস হাল্কাভাবে জালে ঠেলে দিতে পারলেই ছিল নিশ্চিত গোল। কন্তু সহজ সুযোগটা হেলায় নষ্ট করেন মিডফিল্ডার সোহেল রানা। তার গড়ানো কৌণিক শট পোস্ট ঘেঁষে চলে যায় বাইরে। ইনজুরি টাইমে সতীর্থের হেড থেকে তপু বর্মন হেডে আবাহনীর জাল কাঁপান (১-২)। ব্যবধান কমায় সাইফ। বিরতির পর ৫০ মিনিটে আবারও গোল করে ম্যাচে সমতা আনে সাইফ। কলম্বিয়ান ডেইনারের ক্রসে মিডফিল্ডার সোহেল রানার হেড জড়ায় জালে (২-২)। ৮৫ মিনিটে ডিফেন্ডার রায়হানের লম্বা থ্রোতে ডিফেন্ডার নাসিরুদ্দিন হেডে গোল করে আবারও এগিয়ে দেন আবাহনীকে (৩-২)। শেষ পর্যন্ত আর ম্যাচে ফেরা হয়নি নবাগত সাইফের। ৩-২ গোলের হার মেনে নিয়ে একরাশ হতাশা সঙ্গী করেই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।
×