ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্ব সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপে ক্যারিয়ারের ১৩তম স্বর্ণপদক জিতলেন যুক্তরাষ্ট্রের বিস্ময় এই তারকা

আবার স্বর্ণ জিতলেন লিডেকি

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ২৯ জুলাই ২০১৭

আবার স্বর্ণ জিতলেন লিডেকি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিস্ময়ের আরেক নাম কেটি লিডেকি। বারবার নিজের বিশ্বরেকর্ড ভাঙ্গা-গড়ার মাধ্যমে যেমন সবাইকে চমক উপহার দিয়েছেন, তেমনি আগেরদিন ফেবারিট হয়েও পরাজয়ের মাধ্যমে সবাইকে বিস্মিত করেছিলেন। ২০০ মিটার ফ্রিস্টাইলে চ্যাম্পিয়ন হতে না পারার আক্ষেপ অবশ্য ঘুচিয়েছেন। বিশ্ব সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপসের ক্যারিয়ারে ১৩তম স্বর্ণপদক জিতেছেন মহিলাদের ৪ী২০০ মিটার ফ্রিস্টাইল রিলেতে। তবে মেয়েদের ৫০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ের পর মাত্র ০.০১ সেকেন্ড পিছিয়ে থেকে হৃদয়ভাঙ্গা পরাজয়বরণ করেছেন চীনের ফেবারিট ফু ইউয়ানহুই। তবে ২০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে স্বর্ণ জিতেছেন স্পেনের মিরিয়া বেলমন্টে। পুরুষদের ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইলে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালেব ড্রেসেল এবং ২০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলেতে তারই স্বদেশী চেজ ক্যালিজ স্বর্ণপদক জয় করেছেন। এবার হয়তো দুঃখটা ভালভাবেই ভুলে যেতে পারবেন লিডেকি। অন্যতম ফেবারিট এবং বিশ্বরেকর্ডধারী হয়েও মহিলাদের ২০০ মিটার ফ্রিস্টাইলে সবাইকে বিমূঢ় করে দেয়া পরাজয়বরণ করেছিলেন। তবে ২০ বছর বয়সী এ মার্কিন স্বর্ণকন্যা জানিয়েছেন এমন পরাজয় তাকে আরও অনুপ্রাণিত করবে ভবিষ্যতে। সেই ভবিষ্যতের জন্য বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। রাত পেরোতেই আবার উজ্জীবিত হয়ে আক্ষেপ ভোলার মতো সাফল্য পেয়ে গেছেন। দলগত ৪ী২০০ মিটার ফ্রিস্টাইল রিলেতে স্বর্ণপদক জিতেছেন যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে। এটি তার বিশ্ব সাঁতারের ক্যারিয়ারে ১৩তম স্বর্ণপদক। যুক্তরাষ্ট্রের মেয়েরা ৭ মিনিট ৪৩.৩৯ সেকেন্ড সময় নিয়ে শেষ করে চ্যাম্পিয়ন হয়। চাইনিজ মেয়েরা ৭ মিনিট ৪৪.৯৬ সেকেন্ড সময় নিয়ে দ্বিতীয় এবং অস্ট্রেলিয়া ৭ মিনিট ৪৮.৫১ সেকেন্ড টাইমিংয়ে তৃতীয় হয়। জয়ের পর লিডেকি বলেন, ‘গতকালের পরাজয় নিয়ে এখন আমার আর কোন হতাশা নেই। সতীর্থদের ওপরও আমার অনেক আস্থা ছিল যে আমরা একজোট হয়ে সফল হতে পারব।’ সবমিলিয়ে চলতি আসরে ৫টি পদক জেতা হলো লিডেকিরÑ চারটি স্বর্ণ ও একটি রৌপ্য। তৃতীয়বারের মতো তিনি বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিচ্ছেন। এই প্রথম রৌপ্য জিতেছেন, প্রতিবারই সবগুলো ইভেন্টে স্বর্ণ জিতেছিলেন তিনি। এবার বিশ্ব সাঁতারে কিংবদন্তি মাইকেল ফেলপস, তার চরম প্রতিপক্ষ স্বদেশী রায়ান লোচেট এবং মেয়েদের ইভেন্টে নেই মিসি ফ্র্যাঙ্কলিন। তবে এরপরও একের পর এক রেকর্ড ভাঙ্গা-গড়ার খেলা চলছে। ফেলপস-লোচেটের উত্তরসূরি হিসেবে এখন পর্যন্ত সেভাবে কেউ নিজেদের প্রমাণ করতে পারেননি। তবে তাদের স্বদেশী চেজ ক্যালিজ কিছুটা ইঙ্গিত দিয়ে যাচ্ছেন তাদের অভাবটা পূরণ করার। ২০০ মিটার মিডলেতে ১ মিনিট ৫৫.৫৬ সেকেন্ড টাইমিংয়ে তিনি স্বর্ণপদক জিতেছেন। জাপানের তরুণ কোসুকি হাগিনো জিততে পারেননি। তিনি ১ মিনিট ৫৬.০১ সেকেন্ড সময় নিয়ে রৌপ্য জয় করেন। আর চীনের ওয়াং শুন ১ মিনিট ৫৬.২৮ সেকেন্ড টাইমিংয়ে ব্রোঞ্জ জয় করেন। ২০১৬ রিও অলিম্পিক এবং ২০১৩ সালে বার্সিলোনা বিশ্ব আসরে রৌপ্য জয়ের পর অবশেষে স্বর্ণপদক ছোঁয়ার সৌভাগ্য হলো ক্যালিজের স্বল্প দূরত্বে। এর আগে ২০০ মিটার মিডলেতে একক আধিপত্য ছিল ফেলপসের। তিনি ২০০৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত সবগুলো অলিম্পিকে স্বর্ণ জিতেছিলেন এই ইভেন্টে। আর লোচেট ২০০৯ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত বিশ্ব আসরে এই ইভেন্টে রাজত্ব করেছেন। এই দু’জনকে দেখেই আরও বেশি অনুশীলনে জোর দিয়েছিলেন বলে দাবি করলেন ক্যালিজ। তিনি বলেন, ‘আমি তাদের মতো সাঁতরানোর স্বপ্ন নিয়ে বেড়ে উঠেছি। তারা দু’জন বিশ্বসেরা। তাদের কোন বিকল্প হয় না। তবে এখন আমি জিততে পেরে খুবই সন্তুষ্ট। তবে আমি মনে করি ৪০০ মিটারে আমি বেশি ভাল। ওটাই আমার প্রাথমিক লক্ষ্য। কিন্তু আজকের জয়টা ভবিষ্যতে ২০০ ও ৪০০ মিটারে বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’
×