ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দেড় বছরে ৭০ কোটি টাকা ব্যয়

তারাবো পৌরসভা উন্নয়নে মেয়রের ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ২৯ জুলাই ২০১৭

তারাবো পৌরসভা উন্নয়নে মেয়রের ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ

মীর আব্দুল আলীম, রূপগঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভাকে মডেল ও উন্নয়ন করতে মেয়র হাসিনা গাজী ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। পৌরসভার সন্ত্রাসী কর্মকা-, মাদক ব্যবসা ও সেবন নির্মূল, বাল্যবিয়ে, এসিড নিক্ষেপ, নারী ও শিশু নির্যাতন, যৌতুক, ইভটিজিংসহ সামাজিক নানাব্যাধি প্রতিরোধে সভা, সমাবেশ, উঠান বৈঠক, ফেস্টুন, ব্যানার ও লিফলেট বিতরণ করে তিনি সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তুলছেন। এছাড়া গত দেড় বছরে তারাবো পৌরসভার প্রায় ৭০ কোটি টাকার উন্নয়ন করেছেন। উন্নয়নমূলক কাজ করতে তিনি দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এসব উন্নয়ন মূলক কর্মকা-ের মধ্যে রয়েছে সড়ক, ড্রেন, কালভার্ট সংস্কার ও নির্মাণ, পানি সরবরাহ প্রকল্প বাস্তবায়ন, জলাবদ্ধতা নিরসন, সড়ক বাতি স্থাপন, সেচ খাল সংস্কার ও খনন, ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংস্কার এবং নতুন ভবন নির্মাণ, মশক নিধন, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সীমানা প্রাচীর স্থাপন। এছাড়া শীঘ্রই পাইপ লাইন স্থাপনসহ ১০০ কোটি টাকার পানি সরবরাহ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। আরও বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। তবে পৌরবাসী উন্নয়নে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য তারা দাবি জানিয়েছেন। ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত তারাবো পৌরসভার অব্যাহত উন্নয়নে পৌরসভাটি এখন প্রতিষ্ঠিত শিল্পাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। অর্থনৈতিক অবকাঠামোর পরিবর্তনে সাধারণ মানুষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। ২০১৩ সালের ৩ জুন পৌরসভাটিকে প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত করা হয়। ২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে হাসিনা গাজী এলাকার উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সপ্তাহের সাতদিনই তিনি এলাকায় অবস্থান করে এসব উন্নয়নমূলক কর্মকা-ে অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন। পৌরসভার সূত্রে জানা গেছে, সড়ক ও গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ২৮ কোটি ৩২ লক্ষাধিক টাকার কাজ করেছেন। পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ সংস্কার ও নির্মাণে ব্যয় করেছেন ১০ কোটি ১৬ লক্ষাধিক টাকা। গ্রামে গ্রামে সাবমারসিবল স্থাপন করে বাড়ি বাড়ি পানি সরবরাহ করতে খরচ করেছেন ৪১ লাখ ৬১ হাজার টাকা। কালভার্ট নির্মাণে ব্যয় করেছেন ১ কোটি ৯০ লক্ষাধিক টাকা। জলাবদ্ধতা নিরসনে সেচ পাম্প বসানোসহ খরচ করেছেন ৭৮ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সড়ক বাতি স্থাপনে ব্যয় করেছেন ২ কোটি ১৭ লক্ষাধিক টাকা। পর্যায়ক্রমে পৌরসভার সব রাস্তা এ প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। সেচ খাল সংস্কার ও নির্মাণে ব্যয় করেছেন ১২ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংস্কারে ব্যয় করেছেন ১৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। বিদ্যুত লাইন মেরামতে ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকার ব্যয় করেছেন। বেশ ক’টি স্থানে পৌরসভার সীমানা প্রাচীর নির্মাণে ব্যয় করেছেন ৭ লাখ ২১ হাজার টাকা। এছাড়া সৌন্দর্যবর্ধন, সফটওয়্যার সরবরাহ, মোটরসাইকেল ক্রয়সহ নানাবিধ উন্নয়নে প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। এদিকে দারিদ্রবিমোচনে পৌরসভার ৫০ দরিদ্র মহিলাকে আত্মকর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণসহ সেলাই মেশিন এবং ৮০ কৃতী ছাত্রী ও ৫০ বিধবা মহিলাকে এককালীন অনুদান প্রদান করা হয়। বিশেষ প্রকল্পের আওতায় ২০ কোটি টাকার রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য কাজ চলছে। ইউজিপ-৩ প্রকল্পের আওতায় ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকার উন্নয়ন কাজ চলছে। ৭ কোটি টাকায় আধুনিক অডিটোরিয়াম নির্মাণের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। জলবায়ু পরিবর্তন ফান্ডের অর্থায়নে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে। যমুনা ব্যংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পার অনুদানে প্রতিদিন গ্রামে গ্রামে মশক নিধন অব্যাহত আছে। সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক এর বিশেষ বরাদ্দে পৌরসভার ১৫ কিলোমিটার সড়ক পাকা করা হয়েছে। প্রতিদিনের ময়লা আবর্জনা নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে। আধুনিক ৪টি গার্ডেস ট্রান্সফার স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। পৌর যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে এলাকার উন্নয়ন হয়। তারই অংশ হিসেবে তারাবো পৌরসভার উন্নয়ন হচ্ছে। মেয়র হাসিনা গাজীর অক্লান্ত পরিশ্রমে এলাকার মাদক সেবন ও ব্যবসা বন্ধ করা হয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসন করতে পারলেই পৌরসভার শতভাগ সফলতা আসবে। অত্যাধুনিক মেশিনের সাহায্যে মশক নিধন অব্যাহত থাকলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে। তারাবো পৌরসভার কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম মনির বলেন, পৌরসভার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামোগত বৈপ্লবিক উন্নয়ন হয়েছে। পৌরসভার মেয়র হাসিনা গাজী বলেন, আমি তারাবো পৌরবাসীর উন্নয়নে কাজ করছি। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় বছর সময়ের মধ্যে ৭০ কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। শীঘ্রই আরও ১০০ কোটি টাকার পানি সরবরাহ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। মাদক ব্যবসা নির্মূলে সকলে এগিয়ে আসলে শতভাগ সফলতা আসবে। তবে জলাবদ্ধতা নিরসনে চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি অবিলম্বে এ সমস্যা দূর করা যাবে। সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে রূপগঞ্জের দুটি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নের ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় দীর্ঘদিনের অবহেলিত তারাবো পৌরসভার উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে।
×