ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মশা নিধনে ঢাকা দক্ষিণ সিটির বাজেট বেড়েছে দেড়গুণ

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ২৯ জুলাই ২০১৭

মশা নিধনে ঢাকা দক্ষিণ সিটির বাজেট বেড়েছে দেড়গুণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মশা নিধনে সিটি কর্পোরেশনের ব্যর্থতা নিয়ে খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর সমালোচনার প্রেক্ষিতে এই খাতে বাজেট দেড় গুণেরও বেশি বাড়িয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন। কর্পোরেশনের আগামী এক বছরের ঘোষণা করা বাজেটে তিনি মশা নিধনের জন্য রেখেছেন ২৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। গত বছর এই খাতে বরাদ্দ ছিল ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। পরে সংশোধনী বাজেটে বা বাড়িয়ে ১৭ কোটি করা হয়। সম্প্রতি আগামী এক বছর কর্পোরেশনের জন্য তিন হাজার ৩৩৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করেন মেয়র খোকন। এতে মশা নিধন ছাড়াও ১০ খাতে ব্যয় বাড়ানো হয়। আগের বছর বাজেট ছিল তিন হাজার ১৮৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। গত বছরের বাজেটে মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য শুরুতে যে ১১.৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়, তাতে মশার ওষুধ কিনতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ কোটি টাকা, কচুরিপানা/আগাছা পরিষ্কার ও পরিচর্যার জন্য ব্যয় ধরা হয় ত্রিশ লাখ টাকা। বাকি টাকা ধরা হয় ফগার/হুইল/স্প্রে মেশিন পরিবহনে। তবে শেষ পর্যন্ত খরচ হয় ১৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১৫ কোটি ৯৬ কোটি টাকা খরচ হয় মশার ওষুধ কিনতেই। ঘোষিত বাজেটে মশা নিয়ন্ত্রণে যে ব্যয় ধরা হয়েছে তার মধ্যে ওষুধ কিনতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ কোটি ৪২ লাখ টাকা। তবে কচুরিপানা/আগাছা পরিষ্কার ও পরিচর্যার ব্যয় আগের মতোই রাখা হয়েছে ৩০ লাখ টাকা। ফগার/হুইল/স্প্রে মেশিন পরিবহনে এবার ব্যয় ধরা হয়েছে দুই কোটি ৮৮ লাখ টাকা। মেয়র খোকন বলেন, ‘মশক নিয়ন্ত্রণ সিটি কর্পোরেশনের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। নগরবাসীদের মশার উপদ্রব থেকে রক্ষাকল্পে আমরা মশার ডিম নিধনে লার্ভিসাইডিং এবং পূর্ণাঙ্গ মশক নিধনে ফগিং কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকি। বর্ষা মৌসুমে সাধারণত এর প্রকোপ বেশি দেখা দেয়। এই সময়ে আমরা নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি মশার প্রকোপ রোধে স্পেশাল কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকি। মশাবাহিত রোগ চিকুনগুনিয়া সম্পর্কে মেয়র বলেন, ‘সম্প্রতি রাজধানীতে ভাইরাসজনিত চিকুনগুনিয়া প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ বছর থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে পানি জমে এডিস মশার জন্ম নেয়। এ মশার কামড়েই চিকুনগুনিয়া দেখা দেয়। আমরা এ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটার সঙ্গে সঙ্গে চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধ এবং জনসচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করি।’ ‘বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়ায় চিকুনগুনিয়ার উপদ্রব কমে আসতে শুরু করেছে’Ñ উল্লেখ করে মেয়র জানান, চিকুনগুনিয়া আক্রান্তদের জন্য বিনামূলে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ পাঠানোর লক্ষ্যে কল সেন্টার চালু করা হয়েছে। গত রবিবার পর্যন্ত এই কল সেন্টারে পাঁচ হাজার ৯৬৫টি কল এসেছে। তবে এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণের আওতাধীন এলাকা থেকে এসেছে চার হাজার ৪০১টি কল। এর মধ্যে বাড়িতে গিয়ে ডাক্তার ৭৬২ জনের সেবা দিয়েছে, ৪৩৫ জনকে ওষুধ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ২৩৭ জনকে টেলিফোনে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আর সিটি কর্পোরেশন ৯০ জনকে কলব্যাক করেও কোনা সাড়া পায়নি। এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র খোকন বলেন, ‘আমি জানি সড়কের অবস্থা খুব খারাপ। মশার জন্য অন্যদিকে নজর দিতে পারছি না।’ এ সময় মেয়র মশা নিধনের নানা ধরনের কার্যক্রম আলোচনা করে মেয়র বলেন, টকশোতে দেখা যায়, অনেকেই বলছেন মশার ওষুধ থেকে কেরসিনের গন্ধ আসে। আসলে কেরসিন দিয়ে মেশিন চালানোয় ওই গন্ধ আসে, আর মশার ওষুধে পরিমাণ মতোই পানি মেশানো হয়।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে সাঈদ খোকন বলেন, ‘কেরসিন দিয়ে মশার ওষুধ তৈরি করা হয়। এ জন্য কেরসিনের গন্ধ আসে। মশা নিধনের জন্য ৯৯ দশমিক ৪০ শতাংশ কেরসিনের মধ্যে দশমিক ৬০ শতাংশ কেমিক্যাল মিলিয়ে মশার ওষুধ তৈরি করা হয়, যা ডব্লিউএইচও (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা) থেকে স্বীকৃতি।’
×