ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামের রাস্তায় গাড়ির বদলে নৌকা

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ২৯ জুলাই ২০১৭

চট্টগ্রামের রাস্তায় গাড়ির বদলে নৌকা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চট্টগ্রাম মহানগরীর ব্যস্ত সড়কে যন্ত্রচালিত যানবাহনের পরিবর্তে এবার নৌকা চলাচল করেছে। সম্প্রতি দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে থেমে থেমে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হয়। এর ফলে নগরীর অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ডুবে যায় অধিকাংশ সড়ক। বৃষ্টির পানির সঙ্গে যোগ হয় জোয়ারের পানি। এর ফলে জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে নগরীর লক্ষাধিক মানুষ। নগরীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় থেমে যায় জীবনযাত্রা। চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাতের পানিতে প্লাবিত থাকায় এই এলাকায় অবস্থিত চট্টগ্রাম কর অঞ্চল দফতরের কর্মকর্তারা নিয়মিত চলাচলের জন্য নৌকা কিনে নিয়েছেন। বৃষ্টির সময় সরকারী কর্মকর্তারা ব্যস্ত সড়কে যন্ত্রচালিত গাড়ির পরিবর্তে নৌকা দিয়ে চলাচল করছেন। আগ্রাবাদ সিডিএ-১ নম্বর সড়কে হাতেখড়ি স্কুলের বিপরীতে কর অঞ্চল-৪ এর কার্যালয়। সেখান থেকে আগ্রাবাদ মূল সড়কের কাছে ভ্যাট অফিসের কাছে যাওয়া আসার কাজেই এই নৌকায় যাতায়াতের সুবিধা নিয়েছেন কর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পাশাপাশি আয়কর দিতে আসা নাগরিকদেরও এই নৌকায় চড়তে দেখা গেছে। এছাড়া অতিরিক্ত বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে রহিম ম্যানশনের ছয়তলা ভবনটির সামনের সড়কটি নিয়মিতই কোমর থেকে হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায়। যার কারণে বাধ্য হয়েই নৌকা কিনতে হয়েছে তাদের। এ অঞ্চলে কর্মরত কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, আগ্রাবাদ সিডিএ এলাকার প্রায় প্রতিটি সড়কের নিয়মিত দৃশ্য এটি। কোন সড়কে কোমর পানি, কোনটিতে হাঁটু পানি ওঠে। এই এলাকায় কর্মরত সরকারী অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আগ্রাবাদ বাদামতলী এলাকায় নেমে সিডিএ এলাকার ভ্যাট অফিসের সামনে এসে পানির কারণে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে রিক্সা নিতে হয়। প্রতিদিনের এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে দুই সপ্তাহ আগে লাল রঙের নৌকাটি কেনার কথা স্বীকার করেন কর অঞ্চল-৪ এর কমিশনার আহমেদ উল্লাহ। তিনি বলেন, প্রায় প্রতিদিনই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও করদাতাদের আসা-যাওয়াসহ দাফতরিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ জন্যই নৌকাটি কেনা হয়েছে। তিনি জানান, দুই সপ্তাহ আগে চট্টগ্রামের কুমিরা এলাকা থেকে প্রায় ২৬ হাজার টাকায় নৌকাটি কেনা হয়। যাত্রী নেয়ার পর নৌকাটিকে কর অফিসের একজন দারোয়ান ঠেলে অথবা দাঁড় বেয়ে চালিয়ে নিয়ে যান। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া দফতরের কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ জানান, অমাবশ্যার সময় জোয়ারের পানির উচ্চতা বেড়ে যায়। বৃষ্টি, জোয়ার ও অমাবশ্যার কারণে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে চট্টগ্রাম নগরীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। গত সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগরীর আগ্রাবাদ, চাক্তাই, নাসিরাবাদ, খাতুনগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও কোমর বা বুক ছুঁই ছুঁই পানি। রীতিমতো পানিতে থৈ থৈ করেছে চট্টগ্রাম মহানগরী।
×