ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শ্যালিকাকে জবাই, স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম- অতঃপর আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৯ জুলাই ২০১৭

শ্যালিকাকে জবাই, স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম- অতঃপর আত্মহত্যা

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ নগরীর কাউনিয়া পুরানপাড়া এলাকায় ছয় বছরের শিশু শ্যালিকাকে জবাই করে হত্যার পর স্ত্রীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে সজীব মৃধা (২৫) নামের এক ঘাতক। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার ভোরে। আহত সুমাইয়াকে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যাকারী ঘাতক সজীব মৃধা উজিরপুর উপজেলার ধামুরা গ্রামের শফিজউদ্দিন মৃধার পুত্র। পেশায় ভ্যানচালক। নিহত শিশু সাদিয়ার মা পারুল বেগম বলেন, তার স্বামী সিদ্দিক সিকদারের গ্রামের বাড়ি সজীবদের বাড়ির পাশের বাড়ি। দীর্ঘদিন থেকে তারা সপরিবারে কাউনিয়ার পুরানপাড়া মুহাম্মদ আলী খানের বাসায় ভাড়া থাকেন। দুই বছর আগে সজীব তার বড় কন্যা সুমাইয়াকে বিয়ে করে। সম্প্রতি সজীবের মা সখিনা বেগমের জ্বালাতনে অতিষ্ঠ সুমাইয়া বরিশালে তার কাছে এসে টেক্সাইল মিলে চাকরি নেয়। তিনি আরও বলেন, আটদিন পূর্বে মেয়ের জামাতা সজীব তাদের বাসায় বেড়াতে আসে। বৃহস্পতিবার রাতে মাছ ধরার কথা বলে শ্যালিকা সাদিয়াকে বাসার পাশের বাগানে নিয়ে যায় সজীব। এরপর রাত ১২টার দিকে সুমাইয়াকেও (১৯) ওই বাগানে নেয়া হয়। পারুল বেগম আরও জানান, রাত তিনটা পর্যন্ত তারা বাসায় ফিরে না আসায় তাদের খোঁজাখুঁজি করে ভোর চারটার দিকে ওই বাগানে গিয়ে একটি চালতাগাছের সঙ্গে জামাতা সজীবের গলায় ফাঁস দেয়া ঝুলন্ত লাশ এবং গাছের নিচে রক্তাক্ত জখম ও অচেতন অবস্থায় সুমাইয়াকে পরে থাকতে দেখেন। একই সময় তার ছোট মেয়ে সাদিয়াকে পাশের একটি ডোবায় জবাই করা অবস্থায় লাশ দেখে তিনি চিৎকার শুরু করলে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এসে পুলিশকে খবর দেয়। কাউনিয়া থানার ওসি মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে নিহত শ্যালিকা ও দুলাভাইয়ের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন। অপরদিকে মুমূর্ষু অবস্থায় সুমাইয়াকে উদ্ধার করে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওসি আরও জানান, আহত সুমাইয়ার ঘারে ও মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। তার মুখে ইট দিয়ে আঘাত করে থেঁতলে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু ও একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ ধারণা করছেন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহের জের ধরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এদিকে জ্ঞান ফিরে আসার পর শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে হাসপাতালে ভর্তি সুমাইয়া বেগম সাংবাদিকদের বলেন, কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার স্বামী সজীব প্রথমে তাকে ইট দিয়ে মুখে আঘাত করে। এতে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলার পর কি হয়েছে তা সে কিছুই বলতে পারছে না।
×