ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইয়াং-অজিত দোভাল বৈঠকের পর চীন নমনীয়

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ২৯ জুলাই ২০১৭

ইয়াং-অজিত দোভাল বৈঠকের পর চীন নমনীয়

চীন ও ভারতের মধ্যে দোকলাম সীমান্ত অঞ্চলের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার উভয় দেশের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠানের পর এ অঞ্চলে উত্তেজনা হ্রাসের লক্ষ্যে জোরদার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা গ্রহণের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। টাইমস অব ই-িয়া। প্রাথমিকভাবে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও চীনের স্টেট কাউন্সিলর ইয়াং জেচির মধ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ইয়াং জেচি চীনের নীতিনির্ধারক পরিষদ স্টেট কাউন্সিলের একজন প্রভাবশালী সদস্য এবং চীনা কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে তাকে পররাষ্ট্রসংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিনিধি পর্যায়ে বৈঠকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। শুক্রবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ভারতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার বৈঠক হয়েছে। এর আগে স্টেট কাউন্সিলর ইয়াং জেচির সঙ্গে তার বৈঠক কতটুকু ফলপ্রসূ হলো তা সে দেশের সরকারী বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার মন্তব্য প্রতিবেদন থেকে আভাস পাওয়া যায়। প্রকাশিত এসব প্রতিবেদনের মাধ্যমে চীনা কর্তৃপক্ষের নমনীয় মনোভাব উঠে এসেছে। যেমন প্রকাশিত প্রতিবেদনের এক অংশে বলা হয়েছে, ‘দুটি দেশ যেহেতু আজন্ম প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, তাই তাদের নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।’ সিনহুয়া তার প্রতিবেদনে সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতি এড়ানোর পক্ষে জোরালো যুক্তি উপস্থাপন করে বলে, পাশ্চাত্য দেশগুলোসহ বিশ্বের অর্থনৈতিক কর্মকা-ের ওপর সম্ভাব্য ভারত-চীন যুদ্ধ অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কিন্তু সিনহুয়ার এসব মন্তব্য সম্প্রতি চীনের গ্লোবাল টাইমসে প্রকাশিত উস্কানিমূলক বক্তব্যের পরিপন্থী বলে মনে হচ্ছে। গ্লোবাল টাইমসও সরকারী মুখপত্র বলে বিবেচিত হয়। এতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতকে চীনা ভূখ-ে অনুপ্রবেশকারী বলে অভিযুক্ত করা হয়। সিনহুয়াতে পরিবেশিত মন্তব্যে বলা হয়েছে, ভুটান নিয়ন্ত্রিত মালভূমিতে সড়ক নির্মাণকে কেন্দ্র করে চীনের সামরিক শক্তি প্রদর্শনের ফলে যে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছিল তা দুটি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিরসন করা যেতে পারে। এতদিন পর্যন্ত চীনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল যে, ভারতের সঙ্গে একটি অর্থবহ আলোচনার পূর্বশর্ত হচ্ছে বিরোধপূর্ণ এলাকা থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার। কিন্তু অজিত দোভালের সঙ্গে ইয়াং জেচির বৈঠক অনুষ্ঠানের পর সরকারী সংবাদমাধ্যমে এই প্রথমবারের মতো সৈন্য প্রত্যাহারের কোন পূর্বশর্ত জুড়ে দেয়া হয়নি। তবে সিনহুয়ার পক্ষ থেকে একটি বাড়তি মন্তব্য করা হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে- দু’দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক এ সীমান্ত উত্তেজনার সময় ভারতীয় পক্ষের কৌশলগত আস্থাহীনতা প্রকাশ পেয়েছে। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো মানসম্মত শিক্ষার অভাব, দুর্নীতি ও স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতা ভারতকে পশ্চাৎপদ করে রেখেছে। ভারতের বোঝা উচিত যে, চীন ভারতীয় জনগণের কল্যাণ কামনা করে এবং একটি শক্তিশালী ভারতের সঙ্গে দেশটি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যেতে চায়।
×