ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণা, নাইজেরীয় চক্র আটক

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ২৮ জুলাই ২০১৭

ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণা, নাইজেরীয় চক্র আটক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার সঙ্গে জড়িত নাইজিরিরার একটি প্রতারক চক্রের চার নাইজিরীয় নাগরিকসহ সাত জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, নাইজিরিরার নাগরিক জন আগডি ইউজিও (৩৮), মাইকেল ইউজিনি ব্রাউন (৩৮), আফেজ (২৭) ও নামডি কেলভিন (৩৫) এবং জন আগডি ইউজিওর কথিত বাংলাদেশী স্ত্রী লিজা আক্তার (২৩), প্রতারক চক্রের বাংলাদেশী সদস্য মহসিন শেখ (২৪) ও তাসমিয়া পারভীন শিমু (২০)। বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন জানান, মেইল বা মেসেজে বাংলাদেশীদের সঙ্গে প্রথমে যোগাযোগ করে নাইজিরিয়ান প্রতারকরা। এরপর কেউ তাদের ফাঁদে পা দিলে তার সঙ্গে আস্তে আস্তে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। বাংলাদেশীকে জানায়, তার কাছে প্রচুর অর্থ আছে। এসব টাকা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে সে আগ্রহী। ব্যাংকে টাকা থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে ব্যাংক একাউন্টের নম্বরও দেয়। এমন কথায় বিশ্বাস করে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে গেলে তার কাছে টাকা চাওয়া হয়। এরপর শুরু হয় বাংলাদেশীর কাছ থেকে নানা কৌশলে টাকা আদায়। এমনই প্রতারণার ফাঁদে পড়েন কামরুজ্জামান নামে একজন। ফেসবুকে তার সঙ্গে পরিচয় হয় প্রিসকা খালিফা নামের এক বিদেশীর। ওই নারী জানায়, তার ড. ডেভিড উইলসন খালিফার নামে লন্ডনের একটি ব্যাংক একাউন্টে প্রায় চার মিলিয়ন ডলার জমা রয়েছে। এত টাকা তোলার জন্য বিশ্বস্ত লোক ও কিছু টাকা প্রয়োজন। প্রিসকা খালিফার ফাঁদে পা দেন তিনি। এরপর প্রিসকা তাদের বাংলাদেশী প্রতারক চক্রের সদস্য লিজা ও মহসিনের মাধ্যমে তাদের এ্যাকাউন্টে কয়েক ধাপে প্রায় সাড়ে ২৫ লাখ টাকা কৌশলে নেয়। প্রতারক চক্রের সদস্যদের কারও কারও নামে ১০ থেকে ১২টি এ্যাকাউন্টও রয়েছে। এদের মধ্যে লিজার একটি এ্যাকাউন্ট থেকে গত এক মাসে কোটি টাকার ওপরে ট্রানজেকশন হয়েছে। এসব টাকা দেশের বাইরে পাচার হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদের সঙ্গে বেশ কিছু অসাধু মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীর যোগসাজশ রয়েছে। চক্রটি বাংলাদেশে আসার পর গার্মেন্টস বা অন্য ব্যবসার আড়ালে এসব প্রতারণা করে। এরা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এদের ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলে বা লুকিয়ে ফেলে। ফলে আটক করার পর তাদের পরিচয় জানা যায় না। মামলায় সাজা হলেও ছাড়া পাওয়ার পর তাদের নতুন ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায় না। অবৈধ বিদেশীদের আইনের আওতায় আনতে দ্রুত অভিযান চালানো হবে। সংবাদ সম্মেলনে ডিবির উত্তর ও পূর্ব বিভাগের উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম, মোহাম্মদ নুরুন্নবী এবং ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ ইউসুফ আলীসহ ডিবি পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×