ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কেনিয়ায় আদিবাসীদের সঙ্গে বসতি স্থাপনকারীদের দ্বন্দ্ব

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২৮ জুলাই ২০১৭

কেনিয়ায় আদিবাসীদের সঙ্গে বসতি স্থাপনকারীদের দ্বন্দ্ব

কেনিয়ার মধ্যাঞ্চলে এওয়াসো নাইরো নদীর প্রবাহিত কাদা এলাকার পর উচ্চভূমি লাইকিপিয়ায় এক সঙ্কীর্ণ জরাকীর্ণ সেতুর কাছে অত্যন্ত উত্তপ্ত শিলার ওপর বসে আছেন দুই রাখাল। তারা তাদের গবাদিপশুগুলোকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য অন্যের ব্যক্তিগত ভূমিতে প্রবেশ করে কেন নিয়মিত আইন ভঙ্গ করেছেন তার জবাবদিহিতার জন্য বসিয়ে রাখা হয়েছে। সামবুরু গোত্রের লেঘারিংগি লেটিমালো (২৮) বলেন, আমরা সেখানে গেছি ভূমি গ্রাস করতে নয়। গেছি আমাদের পশু চরানোর জন্য, অন্য কোন কারণে নয়। লেটিমালোর গায়ের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড টি-শার্ট এবং তার গলায় ঝোলানো একটি থলেতে মোবাইল ফোন সেট। লেটিমালা বলেন, আমাদের ওপর আক্রমণ চালানোর জন্য যারা পুলিশ ডাকছেন তাদের মধ্যে একজন এখানে বসতি স্থাপনকারী শ্বেতাঙ্গ রয়েছেন। লাইকিপিয়ায় সহিংসতার সূচনা হয় এ বছর। ক্ষুদ্র ও বড় খামারের মালিকদের ওপর হামলা চালায় সশস্ত্র রাখালরা। সহিংসতায় নিহত হয় কয়েক ডজন লোক এবং কয়েকশ’ লোক গৃহচ্যুত হয়। অসন্তোষ প্রশমিত করার জন্য সরকার নির্দেশিত নিরাপত্তা অভিযান এ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। এ অসন্তোষের জন্য কেউ কেউ অনাবৃষ্টিকে দায়ী করেছেন, অন্যরা দায়ী করেছেন রাজনীতিকে। হামলার বিবরণ ছড়িয়েছে ব্যাপকভাবে। সহিংসতার শিকার হয়েছে প্রধানত কৃষ্ণাঙ্গ কেনীয়রা। শে^তাঙ্গ ভূমি মালিকদের মতোই তাদের বাস খামারের এক অংশে। মার্চে ব্রিটিশ খামার মালিক ও সাবেক সেনাসদস্য ত্রিস্তান ভুর্সপুই হত্যা এবং এপ্রিলে ইতালীয় লেখক ও সংরক্ষণবাদী কুকি গলম্যানের ওপর গুলিবর্ষণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কিন্তু যুবক সামবুরু বুধবার নদীর পাশে ক্রোকোডাউলজ ব্রিজে বসে ভাবছিলেন যে, তারা শিকার। তারা পরিস্থিতির শিকার, তারা লোভ ও স্বার্থপরতার শিকার। তারা বলেছেন, অপর্যাপ্ত বৃষ্টির কারণে চারণ ভূমি পাওয়ার জন্য তারা বেড়া কেটেছেন। তারা নিজস্ব জীবিকা সংরক্ষণের জন্য খামার মালিক ও সংরক্ষণকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। তারা অন্যায়ভাবে তাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকেও অভিযুক্ত করেন। লেটিমারো বলেন, আমরা সেখানে আমাদের পশু চরাতে গেলে পুলিশ আমাদের ওপরে আক্রমণ চালায়। আমরা সেখানে লড়াই করতে বা অবস্থান করার পরিকল্পনা নিয়ে যায়নি। আমরা সেখানে গেছি বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত ঘাস সংগ্রহের জন্য। তিনি স্বীকার করেন, তারা ৫০টি গরু ও ২০০টি ছাগলকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য অবৈধভাবে সেখানে প্রবেশ করেছেন এবং অন্যের জমিতে যাওয়ার জন্য তারা দায়ী। তিনি বলেন, পুলিশ গুলি করে তার দুটি গাভী মেরেছে। তার সঙ্গী রাখাল ৩০ বছর বয়স্ক লোকিমানিকী লেকাল স্বীকার করেন, আইন থাকা সত্ত্বেও, আমাদের কাছে কোন বিকল্প পথ ছিল না। আমরা শুধু শুধু বসে থেকে আমাদের গবাদিগুলোকে মরতে দিতে পারি না। এ দুই ব্যক্তি জোর দিয়ে বলেন, অনাবৃষ্টির কারণেই গবাদিপশুগুলো নিয়ে তারা ব্যক্তিগত খামারে প্রবেশ করেছেন এবং তাদের কাজে কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কাজ করেছে এ কথা তারা অস্বীকার করেন। কেনিয়ায় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৮ আগস্ট। লেকাল বলেন, ঘাসের জন্য অন্যের ভূমিতে যাওয়ার জন্য আমাদের কেউ প্রভাবিত করেননি। আমরাই, আমরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিই এবং খামারগুলোতে প্রবেশ করি আমাদের গবাদিপশুগুলো নিয়ে। এএফপি
×