ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

থ্রিডি প্রিন্টারে তৈরি সাবেকী গহনা

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ২৮ জুলাই ২০১৭

থ্রিডি প্রিন্টারে তৈরি সাবেকী গহনা

থ্রিডি প্রিন্টার ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, সাধারণ মানুষের নাগালেও চলে আসছে। জার্মানির এক শিল্পী ঐতিহাসিক গয়নার প্রেরণার ভিত্তিতে বর্তমান যুগের উপযোগী ডিজাইনে এমন সৃষ্টিকর্মে মেতে উঠেছেন থ্রিডি প্রিন্টার জোরকদমে চলছে এবার তাকে একটি গয়না প্রিন্ট করতে দেয়া হয়েছে। ঘণ্টাতিনেক পর গয়না প্রস্তুত হয়ে গেলে সেটি জার্মান শিল্পী সিলভিয়া ভাইডেনবাখের সংগ্রহে স্থান পাবে। তাঁর সৃষ্টিকর্ম আসলে চারিপাশের পরিবেশের প্রতিফলন কখনো তা সামুদ্রিক কোরাল হতে পারে, কখনও বা ক্যালেডোস্কোপ। ভাইডেনবাখ জার্মানির দক্ষিণে সোনা ও রুপার গয়না তৈরির কাজ শিখেছেন। কয়েক বছর আগে পর্যন্তও তিনি চিরায়ত পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট কিছু বস্তু তৈরি করতেন তিনি বলেন, ‘রুপার গয়না তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়ে শুরু করেছিলাম। মৌলিক চিরায়ত সাজসরঞ্জাম নিয়ে কাজ করতে শিখেছিলাম। মাথায় যে আইডিয়া রয়েছে, তা প্রথমে কাগজে এঁকে তারপর তার রূপান্তর ঘটানোর শিক্ষা নিয়েছিলাম।’ তিনি ‘হ্যাপটিক আর্ম’ নিয়ে কথা বলছেন, যা আসলে এক ডিজিটাল টুল সেটি দিয়ে কম্পিউটারে ভার্চুয়াল বস্তুর মধ্যে রদবদল ঘটানো যায়। মাটির তাল থেকে মূর্তি তৈরির জন্য যে টুল ব্যবহার করা হয়, এটা অনেকটা তার মতো। সিলভিয়া ভাইডেনবাখ বলেন, ‘এখানে আমি বস্তুটির জন্য মাটির তালের পরিমাণ টের পাই। আমি আরও উপকরণ যোগ করতে পারি, বাদ দিতে পারি, কতটা নরম বা শক্ত হবে– তা স্থির করতে পারি।’ ভাইডেনবাখ বর্তমানে লন্ডন শহরে ভিক্টোরিয়া এ্যান্ড এ্যালবার্ট মিউজিয়ামে আর্টিস্ট-ইন-রেসিডেন্স হিসেবে কাজ করছেন। আগামী নবেম্বর মাসে ‘গয়নার বাক্স’ নামে তাঁর এক থ্রিডি সৃষ্টিকর্ম জিলবার্ট কালেকশন অফ ডেকোরিটিভ আর্টস-এ প্রদর্শিত হবে মিউজিয়ামের প্রতিনিধি শার্লট জনসন বলেন, ‘সিলভিয়া যে সংবেদনশীলতার সঙ্গে ঐতিহাসিক উপকরণ নিয়ে কাজ করেন, সে কারণে আমরা তাঁকেই বেছে নিয়েছি। তবে তিনি ‘হিস্টোরিসিস্ট’ নন। তিনি আসলে ইতিহাস থেকে প্রেরণা নিয়ে দারুণ সব নতুন সৃষ্টি করতে পারেন।’ সিলভিয়া ভাইডেনবাখ নিজে বলেন, ‘অতীতের সৃষ্টি আমার কাছে এটা বিশাল প্রেরণা। চিনামাটির মতো উপকরণের ক্ষেত্রে নিখুঁত কাজ, উপকরণের প্রয়োগ এবং কিছুটা প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সত্যি বিস্ময়কর। আমি এমন অনেক দৃষ্টান্ত দেখতে পাই। এর মধ্যে অনেক ফ্যাশন কোম্পানিও তাদের পণ্য তৈরি করতে থ্রিডি প্রিন্টার ব্যবহার করতে শুরু করেছে। এমনকি প্রিন্টারে জুতোও তৈরি হচ্ছে। যেমন নেদারল্যান্ডসের ডিজাইনার ইরিস ফান হ্যারপেন স্থপতি রেম কোলহাসের সঙ্গে মিলে একজোড়া থ্রিডি বুটজুতাসহ এক শিল্প সৃষ্টি করেছেন। স্টুডিওয় ফিরে ভাইডেনবাখ আরেকটি বস্তু প্রিন্ট করতে দিচ্ছেন। অবশ্যই এই সব প্রযুক্তি আপডটেড সফটওয়্যার ও শক্তিশালী ইন্টারনেট সংযোগের ওপর নির্ভর করে। এর মধ্যে একটিতে গোলমাল হলেই গোটা প্রক্রিয়া বানচাল হয়ে যায়। প্রায় তিন ঘণ্টা পর ব্রেসলেট বা হাতের বালার প্রোটোটাইপ প্রস্তুত সিলভিয়া বলেন, ‘আমার মনে হয়, থ্রিডি প্রিন্টিং সম্পর্কে প্রাথমিক বিস্ময় কেটে গেছে। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই প্রযুক্তি রয়েছে। গত ১০ বছর ধরে আমরা তার নাগাল পাচ্ছি। বর্তমানে উপকরণের ব্যবহার, আরও সূক্ষ্ম কাজ, বিভিন্ন উপকরণের সমন্বয় দেখার মতো। ধাতু প্রিন্টিং নিয়েও আমার আগ্রহ রয়েছে, যা খুবই বিরল হতে পারে।’ থ্রিডি পদ্ধতিতে তৈরি গয়নার মাধ্যমে ভাইডেনবাখ বর্তমান যুগের চেতনা। সূত্র : বিবিসি
×