ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঋণাত্মক হিসাবে লেনদেন নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ২৮ জুলাই ২০১৭

ঋণাত্মক হিসাবে লেনদেন নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে ঋণাত্মক মূলধনধারী বিনিয়োগ হিসাবে শেয়ার কেনাবেচার সুযোগ আগামী ১৮ আগস্ট শেষ হচ্ছে। মার্জিন রুলস সংশ্লিষ্ট ধারা শিথিল করে আবারও বাড়তি সময়ের জন্য ওই সুযোগ দেয়া হবে কি-না তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সূত্রে জানা গেছে, ঋণাত্মক মূলধনধারী বিনিয়োগ হিসাবে লেনদেনের সুযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করবেন তারা। কয়েক দফায় এ সুবিধা দেয়ার ফলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান (ব্রোকার) ও বিনিয়োগকারী প্রকৃতপক্ষে কতটুকু উপকৃত হয়েছেন, বাজারে এর কী প্রভাব পড়েছে তা মূল্যায়ন করার পরই কেবল সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। উল্লেখ, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর ৩(৫) ধারা অনুযায়ী কোন বিনিয়োগকারীর ডেবিট ব্যালেন্স ১৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে ওই হিসাবে শেয়ার কেনাবেচা বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু ২০১০ সালের ধস পরবর্তী বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় কয়েক দফা ধারাটির কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) নতুন করে স্থগিতাদেশের জন্য বিএসইসির কাছে আবেদন করে। এর পরপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিএসইসির কমিশন বৈঠকে ওই ধারাটির কার্যকারিতা ৬ মাস স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়। সে মেয়াদ আগামী ১৮ আগস্ট শেষ হচ্ছে। আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাটির কার্যকারিতা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো না হলে ১৯ আগস্ট থেকে ঋণাত্মক মূলধনধারী হিসাবে আর লেনদেন করা যাবে না। এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোঃ সাইফুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বদ্ধপরিকর বিএসইসি। বিএসইসির প্রত্যেকটি সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে নিয়ে থাকে। তিনি বলেন, ঋণাত্মক মূলধনধারী হিসাবের বিষয়টি কমিশনের নজরে আছে। সর্বশেষ মেয়াদ বাড়ানোর অবস্থার মূল্যায়ন করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবে কমিশন। উল্লেখ্য, মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর ৩(৫) ধারা অনুসারে ঋণাত্মক মূলধনধারী হিসাবে গ্রাহক নিজে শেয়ার কেনাবেচা করতে পারেন না। কেবল ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান এই ধরনের হিসাবের শেয়ার বিক্রি করে তার ঋণ সমন্বয় করে নিতে পারে। ২০১০ সালের ধসের পর বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় বিএসইসি আলোচিত আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাটির কার্যকারিতা কয়েক দফা স্থগিত করে। উল্লেখ, মার্জিন ঋণ হচ্ছে বিশেষ ধরনের ঋণ সুবিধা। শেয়ার কেনার জন্য ব্রোকার হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক গ্রাহককে এই ঋণ দিয়ে থাকে। বিএসইসি প্রণীত মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর আওতায় এই ঋণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তবে যে সময়টি বিএসইসি বাড়িয়েছে তা শুধু ব্রোকার হাউসের জন্য প্রযোজ্য। অন্যদিকে মার্চেন্ডাইজাররা সবসময় নেগেটিভ ইক্যুইটির হিসাবে লেনদেন করতে পারেন। সময় বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের সঙ্গে মার্চেন্ট ব্যাংকের কোন সম্পর্ক নেই। ২০১০ সালের পর থেকে টানা দর পতনে অসংখ্য মার্জিন এ্যাকাউন্টে বিনিয়োগকারীর মূলধন ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। ওই সব এ্যাকাউন্টে থাকা শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম এমন জায়গায় নেমে আসে যে, অনেক ক্ষেত্রে তা বিনিয়োগকারীর নিজস্ব মূলধনের পরিমাণ কমে যায়। আইন অনুসারে এমন এ্যাকাউন্টে লেনদেন নিষিদ্ধ।
×