ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন এ্যাওয়ার্ড পেলেন পুতুল

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২৭ জুলাই ২০১৭

ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন এ্যাওয়ার্ড পেলেন পুতুল

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক এ্যাডভাইজরি প্যানেলের বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশের অটিজম বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিদের কল্যাণে নিরবচ্ছিন্ন ও উদ্ভাবনীমূলক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন এ্যাওয়ার্ড’-এ ভূষিত হয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাকে এই এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বরাত দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, প্রিন্সটন ক্লাব অব নিউইয়র্কে আয়োজিত সিমা কলাইনু নামে নিউইয়র্ক ভিত্তিক একটি শিশু অটিজম কেন্দ্র ও স্কুল এবং এর আন্তর্জাতিক সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘আই কেয়ার ফর অটিজম’ এর বার্ষিক প্রাতরাশ অনুষ্ঠানে এ এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। মঙ্গলবার সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের পক্ষে এ্যাওয়ার্ডটি গ্রহণ করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। উল্লেখ্য, সিমা কলাইনু নিউইয়র্কের প্রথম শিশু অটিজম কেন্দ্র ও স্কুল যা ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানটি এ পর্যন্ত জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে নিউইয়র্কের ৫টি বোরোর সকল সম্প্রদায়ের অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত সহস্রাধিক শিশুকে তাদের অটিজম সেন্টার, স্কুল ও হোম সার্ভিসের সেবা দিয়ে আসছে। এ্যাওয়ার্ড গ্রহণকালে রাষ্ট্রদূত মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে অটিজম ও অন্যান্য নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার আক্রান্ত মানুষের অধিকার রক্ষা ও কল্যাণে কাক্সিক্ষত সফলতা অর্জন করে চলেছে। তিনি আরও বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সায়মা ওয়াজেদ হোসেনকে অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারের ক্ষেত্রে ‘গ্লোবাল রিনাউন্ড চ্যাম্পিয়ন’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া গতমাসে সংস্থাটির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক কার্যালয় এ অঞ্চলের ১১টি দেশের জন্য সায়মা ওয়াজেদ হোসেনকে অটিজম বিষয়ক ‘শুভেচ্ছা দূত’ হিসেবে নিয়োগ দেয়। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের এপ্রিলে ভুটানে অনুষ্ঠিত অটিজম বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অটিজম ও অন্যান্য নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিজঅর্ডারের জন্য ‘থিম্পু ডিক্লারেশন’ গ্রহণে সায়মার অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশে অটিজম বিষয়টি সামনের সারিতে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক কার্যালয় ২০১৪ সালে মিস সায়মাকে এক্সিলেন্স ইন পাবলিক হেলথ্্ এ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করে। ‘ঢাকা ঘোষণা’ এবং সাউথ এশিয়ান অটিজম নেটওয়ার্ক (সান) প্রতিষ্ঠায় তার প্রচেষ্টা অটিজমকে এ অঞ্চল এবং অঞ্চলের বাইরে সামনের সারিতে এনে দিয়েছে। এই এ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মোমেন সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের একটি সংক্ষিপ্ত বার্তা পাঠ করেন। বার্তাটিতে সায়মা ওয়াজেদ বলেন, অটিজম সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সিমা কলাইনু’র এই স্বীকৃতির জন্য আমি সম্মানিত বোধ করছি। অটিজম সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সিমা কলাইনু’র মতই বাংলাদেশ ও এশিয়া অঞ্চলে এ সংক্রান্ত পেশার মানুষের জন্য পরিকল্পিত এবং ব্যাপকভিত্তিক প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টিতে আমি কাজ করছি। অটিজম কোন ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও আর্থ-সামাজিক সীমারেখার মধ্যে আবদ্ধ নয় একারণেই এর জন্য বিশেষ ধরনের সেবা ও কর্মসূচীর প্রয়োজন রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একজন শুভেচ্ছা দূত হিসেবে অটিজম নেটওয়ার্ক নিয়ে আমি সকলের সঙ্গে কাজ করতে চাই। রাষ্ট্রদূত দাবি করেন, অটিজম বিষয়ক জাতীয় সচেতনতা সৃষ্টি, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও অটিজমের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে তার জন্য বাংলাদেশ গর্ব করতে পারে। তিনি আরও বলেন, অটিজম বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে যদি রাজনৈতিক সদিচ্ছা যুক্ত হয় তাহলে তা অটিজম এবং এ সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ নিয়ে বেঁচে থাকা মানুষের জীবনে বৈচিত্র্য নিয়ে আসতে পারে। এ প্রাতরাশ অনুষ্ঠানে সায়মা ওয়াজেদ হোসেনসহ নিউইয়র্ক সিটির কাউন্সিল মেম্বার ব্রাডল্যান্ডার, কাউন্সিল মেম্বার মার্ক লেভিনি, নিউইয়র্ক সিটির কাউন্সিলের স্পিকার মেলিচ্ছা মার্ক-ভিভারিতো’র কমিউনিটি লিয়াজোঁ কার্যালয়ের কর্মী মিজ জেনি বার্গার ও কলবি হেয়ার্ড নামে নয় বছর বয়সের একটি অটিস্টিক বালককেও এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, নিউইয়র্কের এই শিশু অটিজম কেন্দ্র ও স্কুল সম্মানিত সকল এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তদের অটিস্টিক শিশুদের আঁকা চিত্রকর্ম এ্যাওয়ার্ড হিসেবে প্রদান করে।
×