ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চার মাসের মধ্যে আইন

২শ’ গ্রামের বেশি ইয়াবা বহন করলে শাস্তি মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ২৭ জুলাই ২০১৭

২শ’ গ্রামের বেশি ইয়াবা বহন করলে শাস্তি মৃত্যুদণ্ড

মোয়াজ্জেমুল হক/এইচএম এরশাদ ॥ প্রায় দুই দশক ধরে মরণনেশা মাদক ইয়াবার নীল দংশনে বাংলাদেশ দংশিত। এই ইয়াবার উৎপাদন প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে। এর অবাধ ব্যবহার চলছে বাংলাদেশে। মিয়ানমার টু বাংলাদেশ এর প্রধান রুট। বিলম্বে হলেও সরকার ইয়াবার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। ইতোমধ্যে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের সীমানা বিভাজনে নাফ নদে রাতের বেলা মৎস্য শিকার বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা কার্যকর হয়েছে। এখন দ্রুতগতিতে মাদক নিয়ে আইন সংশোধনের কার্যক্রমও চূড়ান্ত হয়েছে। ইয়াবাকে ‘এ’ ক্যাটাগরির মাদক হিসেবে চিহ্নিত করে পাশাপাশি সীসা জাতীয় মাদককেও এ আইনের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। পুরো বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। ২শ’ গ্রামের অধিক ইয়াবা যাদের কাছে পাওয়া যাবে তাদের জন্য মৃত্যুদ- এবং ক্ষেত্রবিশেষে যাবজ্জীবন কারাদ-ের বিধান করা হচ্ছে। এখন যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটি আইনে পরিণত হবে। বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের মাদকের ব্যবহার রয়েছে; যার মধ্যে সবচেয়ে মরণঘাতী হিসেবে রয়েছে হেরোইন, কোকেন, মরফিন। এর সঙ্গে দুই দশকজুড়ে যুক্ত হয়ে আছে ইয়াবার আগ্রাসন। ইয়াবার সেবন সকল মাদককে ছাড়িয়ে গেছে। এর নীল দংশনে একাকার হয়ে গেছে যুব সমাজসহ দেশের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। পরিস্থিতি দিন দিন অবনতিশীল। আগামী ২০২০ সালের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের মাদক সেবনকারীর সংখ্যা কোটিতে পৌঁছে যাবে বলে গবেষণা থেকে বেরিয়ে এসেছে। ফলে সরকার মাদকের অপব্যবহার রোধে যে জিরো টলারেন্স নিয়ে কাজ করছিল সে থেকে আরেক ধাপ এগিয়ে আইন সংশোধনের মাধ্যমে ইয়াবার ব্যবহারে শ্রেণীভেদে মৃত্যুদ-ের আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। বুধবার ছিল মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস-২০১৭। এর একদিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঘোষণা দিয়েছেন: ইয়াবার ভয়াবহতা রোধে মাদকবিরোধী যে নতুন আইন হচ্ছে তাতে এর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের বিধান রাখা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ ঘোষণা সমাজের সকল স্তরে ইতিবাচক হিসেবে গৃহীত হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব জামাল উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, বিদ্যমান আইনে ইয়াবার বিষয়টি উল্লেখ নেই। ইয়াবার যে আগ্রাসন তার পরিণাম চিন্তায় এনে এটিকে ‘এ’ ক্যাটাগরির মাদক হিসেবে বিবেচনায় রাখা হয়েছে খসড়া আইনে। এছাড়া সীসা জাতীয় মদককেও নতুন আইনে যুক্ত করা হচ্ছে। তিনি জানান, ১৯৯০ সালে প্রণীত মাদকবিরোধী আইন সংশোধনের যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাতে মাদক বিরোধী সংজ্ঞায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। এ পরিবর্তনে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে ইয়াবাকে। সর্বোচ্চ ২৫ গ্রাম পর্যন্ত মাদক ব্যবহারের যে বিদ্যমান আইন রয়েছে তাতেও বিভিন্নভাবে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করা হচ্ছে।
×