ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সরকার ও প্রশাসনের মধ্যে সেতুবন্ধ গড়ে তোলার নির্দেশ মন্ত্রীদের

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২৭ জুলাই ২০১৭

সরকার ও প্রশাসনের মধ্যে সেতুবন্ধ গড়ে তোলার নির্দেশ মন্ত্রীদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ সরকার ও প্রশাসনের মধ্যে সেতুবন্ধন গড়ে তোলা, নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক ও সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়াসহ ডিসিদের বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন মন্ত্রীরা। এদিকে জেলা প্রশাসকগণ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জাতিসংঘ মিশনে পাঠানোর পাশাপাশি দ্বিতীয় দিনে আবারও মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ক্ষমতা অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে বিভিন্ন অধিবেশনে এই নির্দেশ দেয়া হয়। হাইকোর্ট অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করলেও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন জেলা প্রশাসকরা। ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত কার্য অধিবেশনে তারা আবারও এই অবস্থান জানালে তাতে সায় দেন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামও। জেলা প্রশাসক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কাছেও তারা একই দাবি জানিয়েছিলেন। বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের বিপরীত অবস্থানের মধ্যে গত ১১ মে দেয়া এক রায়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করে। তবে এই বিষয়টির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এখনও হয়নি। জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়ে মন্ত্রীকে প্রশ্ন রাখেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত অব্যাহত রাখার বিষয়ে ডিসিদের পক্ষ থেকে লিখিত প্রস্তাব ছিল, এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘অবকোর্স’। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জাতিসংঘ মিশনে পাঠাতে ডিসিদের প্রস্তাব ছিল, সে বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না- এ প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে সৈয়দ আশরাফ বলেন, লিখিত প্রেস ব্রিফিং দিয়ে জানানো হবে। ঢাকায় তিন দিনের সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন এই জেলা প্রশাসকরা। বিভাগীয় কমিশনার ‘গ্রেড-১’ করার বিষয়ে বৈঠকে কোন আলোচনা হয়নি বলে জানান তিনি। বরগুনার ইউএনওকে নাজেহালের বিষয়ে বৈঠকে কেউ কোন কথা বলেননি বলেও জানান মন্ত্রী আশরাফ। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, (বরিশাল ও বরগুনা ডিসি) বদলি করা রুটিন কাজ। জেলা প্রশাসকদের জন্য রাজনৈতিক কোন নির্দেশনা ছিল কি না- এক সাংবাদিক প্রশ্ন করলে আশরাফ বলেন, এটা তো পলিটিক্যাল বিষয় না। যাদের সঙ্গে কথা বললাম, তারা সবাই সিভিল সার্ভেন্ট। তারা কোন পলিটিক্যাল পার্টির না, সাংবাদিক কিংবা মিডিয়ারও না। মাঠ পর্যায়ের এই কর্মকর্তাদের সঙ্গে বার্ষিক মতবিনিময়ের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, গতবার কি অর্জন করলাম, আগামীতে কী প্রকল্প গ্রহণ করা হবে, মাঠ পর্যায়ের যারা এখানে আসেন তাদের কাছ থেকেও মতামত নেয়ার সুযোগ হয়। সরকারের সঙ্গে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে সেতু তৈরি করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের সভাপতিত্বে সব বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তারা এই কার্য অধিবেশনে অংশ নেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিত্যপণ্যের দাম সব সময় স্বাভাবিক ও মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশনা দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। বুধবার সচিবালয়ে ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত কার্য-অধিবেশন শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের একথা বলেন। তিনি বলেন, মুক্ত বাজার অর্থনীতি হলেও ভোক্তা অধিদফতর আছে, ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে হবে। জেলায় জেলায় বাণিজ্য কেন্দ্র আছে সেখানে গিয়ে নতুন ট্রেড লাইসেন্স করে যেন ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে। বর্তমান সরকার ‘জন বান্ধব ও ব্যবসা বান্ধব’। ব্যবসায়ীরা যেন হয়রানির শিকার না হয়, তারা যাতে অধিকতর উৎসাহ নিয়ে রফতানি বৃদ্ধি করতে পারে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে ডিসি সম্মেলনে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সপ্তম পঞ্চম-বার্ষিকী পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি ২০২১ সালে রফতানি হবে ৬০ বিলিয়ন ডলার। এই লক্ষ্যে পৌঁছতে আমাদের পণ্যের বহুমুখী করার সিদ্ধান্ত আমরা গ্রহণ করেছি। তিনি বলেন, আমাদের একটা ঘোষণা আছে এক জেলা এক পণ্য। ১৪টি পণ্য নির্ধারিত হয়েছে, সেই পণ্যগুলো যেন আমরা রফতানি করতে পারি সে ব্যাপারে ডিসিরা বাস্তব পদক্ষেপ নেবেন। ওইসব পণ্যকে আমরা ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেব। আগামী দিনগুলোতে যাতে দেশের আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে সব কিছুই স্বাভাবিক থাকে সেজন্য জেলার প্রধান হিসেবে জেলা প্রশাসকরা সকলের সঙ্গে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন এমন প্রত্যাশা রেখে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ডিসিরা নিষ্ঠা, সততা ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করবেন সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। তারা যেসব প্রস্তাব করেছেন সেগুলো আমরা সমাধান করার চেষ্টা করব। দেশের অগ্রগতি ধরে রাখতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। বৈঠকে ডিসিরা কোন সমস্যার কথা বলেননি জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দায়িত্ব পালন করতে গিয়েও কোন সমস্যার কথা কোন ডিসিই বলেননি। আমি বলেছি আপনারা মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছেন, কারো দয়ায় আপনারা চাকরি পাননি, সুতরাং আপনারা নিষ্ঠার সঙ্গে, সততার সঙ্গে, দক্ষতার সঙ্গে কাজ করবেন। মনে রাখবেন একজন জেলা প্রশাসক একটা জেলার প্রধান ব্যক্তি। সেই হিসেবে আপনি নিষ্ঠার সঙ্গে, নিরপেক্ষভাবে আপনার কাজ করবেন এটিই আমাদের তরফ থেকে চাওয়া। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গ নিয়ে ডিসিদের সঙ্গে কোন কথা হয়নি বলেও জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের সভাপতিত্বে সব জেলা প্রশাসক এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সচিবসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা এই কার্য অধিবেশনে অংশ নেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্বাচনকে সামনে দেশের স্বাস্থ্য খাতসহ সব খাতের উন্নয়ন তুলে ধরতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে স্বাস্থ্য খাতে ঈর্ষণীয় সফলতা এসেছে। স্বাস্থ্য খাতের সফলতা আজ বিশ্বের অনেক দেশের রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ খাতের অবকাঠামো হয়েছে মজবুত। শিশু ও মাতৃ মৃত্যুহার হয়েছে হ্রাস। নতুন নতুন মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তোলার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার মডেল হিসেবে চলছে প্রায় তেরো হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক। শুধু উন্নয়ন ঘটালেই হবে না, এসব বাস্তবচিত্র দেশবাসীকে জানানোর ক্ষেত্রে তৎপর থাকাও জরুরী হয়ে পড়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় ডিসি সম্মেলন থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিচব (স্বাস্থ্যসেবা) সিরাজুল হক খান এবং সচিব (চিকিৎসা শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ) সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, দেশের স্বাস্থ্যসেবা অনেক এগিয়েছে। জেলা প্রশাসকরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকে। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার এই উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে জেলা প্রশাসকদের প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানানো হয়েছে। সম্মেলনে জেলা প্রশাসকরা জেলা পর্যায়ে চিকিৎসকসহ বিভিন্ন সংকটের কথা মন্ত্রীকে জানালে শীঘ্রই ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগ করা হবে বলে তাদের জানান। পাশাপাশি অন্যান্য যেসব সমস্যা রয়েছে সেগুলোর সমাধান করা হবে বলেন তাদের নিশ্চিত করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের যে কোন ধরনের পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হয় যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে। তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন সে বিষয়ে তাদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিসি সম্মেলনে চিকুনগুনিয়া নিয়ে কোন দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে কোন আলোচনা সেখানে হয়নি। তাছাড়া ঢাকার বাইরে কোথাও চিকুনগুনিয়ার কোন কোন সমস্যা নেই। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় আগামী আগস্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বড় বন্যার আশঙ্কা করছেন পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। এ বন্যা মোকাবেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বুধবার সচিবালয়ে ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন পানিসম্পদ এবং কৃষি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত কার্য-অধিবেশন শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের একথা জানান। পানিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, বেশিরভাগ নদীর পানি বিপদসীমার নিচে আছে। জলাবদ্ধতা আর বন্যার পার্থক্য কিন্তু আপনাদের বুঝতে হবে। সাধারণত বড় বন্যা হয় যখন যমুনার পানি, পদ্মার পানি এবং মেঘনার পানি এক সঙ্গে বাড়ে। যদি তখন অমাবস্যা থাকে, তখন বন্যার প্রকোপ হয়। এবার ইতোমধ্যে দ্বিগুণ বৃষ্টি হয়েছে। সেজন্য আমরা একটা ওয়ার্নিং দিয়ে রাখছি যে (বড় বন্যার) একটা সম্ভাবনা আছে। আর এই বন্যাটা হয় আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে। সেটার জন্য একটা প্রস্তুতি নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিশেষভাবে বলা হয়েছে। যেসব বাঁধ দুর্বল সেগুলোকে ঠিক করতেও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, জানান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, বন্যা অর্থ যেটা আমরা বোঝাই, সেই বন্যা কিন্তু এখনও কোথাও হয়েছে বলে আমার জানা নাই। যেটা হচ্ছে সেটা হচ্ছে বাঁধের বাইরের জায়গা যেগুলো আছে সেগুলো এবং এই জায়গাগুলো কিন্তু রাখা হয়েছে নদীর পানি প্রবাহের জন্যই। বন্যা হয়েছে যমুনার যে চরগুলো আছে সেখানে, বন্যা এখন হচ্ছে চট্টগ্রামের দিকে। সম্মেলনে ডিসিরা নদী ভাঙ্গন নিয়ে কথা বলেছেন জানিয়ে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, নদী ভাঙ্গনেই, নদীর একটা জিনিস আমরা বুঝতে চাই না, নদীগুলোর ক্যাচমেন্ট এরিয়ার ৯৩ ভাগ কিন্তু বাংলাদেশের বাইরে। ভারতে কিন্তু বন্যা হয়েছে, বন্যায় লোকও মারা গেছে, বাংলাদেশে কিন্তু সে রকম ঘটনা ঘটেনি। ভাঙ্গনের যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো আমরা দেখছি। ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা খুব ব্যয়সাপেক্ষ বিষয়। যে রিসোর্স আছে সেই রিসোর্সের মধ্যে করার চেষ্টা করছি। আমরা বিভিন্ন জায়গায় প্রকল্প নিয়েছি। এর সঙ্গে খনন ও ড্রেজিং যোগ করেছি। আগামীতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মোট বাজেটের অর্ধেক অর্থ ড্রেজিংয়ের জন্য ব্যয় করা হবে। নারী ও শিশু নারী ও শিশুদের নির্যাতনকারীরা যেন কোনভাবেই পার না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশ দিয়েছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বুধবার সচিবালয়ে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত কার্য-অধিবেশনে প্রতিমন্ত্রী ডিসিদের এই নির্দেশ দেন। অধিবেশন শেষে চুমকি সাংবাদিকদের বলেন, নারী ও শিশুর প্রতি কোথাও সহিংসতা হলে- যারা সহিংসতা করবে তারা যেন কোনভাবেই পার না পায় সেদিকে খেয়াল রাখার কথা বলেছি। কোথায়, কখন, কোন ঘটনা ঘটবে- সব সময় কারও পক্ষেই জানা সম্ভব না। বাল্যবিয়ের হার কমে আসায় সন্তোষ প্রকাশ করে এজন্য ডিসিদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের যে কয়টা চ্যালেঞ্জ আছে তার মধ্যে একটি হলো বাল্যবিয়ে। বাল্যবিয়ের ব্যাপারে আশাব্যঞ্জক বিষয় হলো, বাল্যবিয়ে নিয়ে সর্বশেষ যে রিপোর্ট এসেছে- সেখানে বাল্যবিয়ে আমরা যেভাবে প্রত্যাশা করছি, সেটা (বাল্যবিয়ে) অনেকাংশে কমে এসেছে। সিলেট বিভাগে বাল্যবিয়ে অনেক কমে গেছে জানিয়ে চুমকি বলেন, এজন্য তাদের ধন্যবাদ দিয়েছি। প্রত্যেক ডিসিকে আমরা দিকনির্দেশনা দিয়েছি আপনারা প্রত্যেকে এ ব্যাপারে বেশি সক্রিয় হবেন। বিয়ে বন্ধ করাটাই মূল কাজ নয়। কেন বিয়ে দিচ্ছে, কী সমস্যার কারণে বিয়ে দিচ্ছে সেটাও আমাদের সমাধান করতে হবে। যতক্ষণ না সেটা সমাধান না করছি, লুকিয়ে লুকিয়ে বাল্যবিয়ে দেবেই। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা শুধু বাল্যবিয়ে বন্ধ করেই বাহবা নেব না, বাল্যবিয়েটা কেন হচ্ছে সেই কেনর সমাধন করতে হবে। এ বিষয়ে আমরা বিশেষভাবে ডিসিদের নির্দেশনা দিয়েছি। বাল্যবিয়ে নিয়ে সরকারের হাতে আসা সর্বশেষ প্রতিবেদন আগামী ৩১ জুলাই উপস্থাপন করা হবে। কর্মজীবী নারীদের জন্য হোস্টেল নির্মাণ এবং শিশু এ্যাকাডেমির ভবন সম্প্রসারণে ডিসিরা প্রস্তাব রেখেছেন জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিসিদের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমগুলোকে কীভাবে সমন্বয় করব, কীভাবে তাদের আরও এ্যাকটিভ করব সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এই কার্য অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও অসুস্থতার জন্য তিনি এতে অংশ নেননি।
×