ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কক্সবাজারে থামানো যাচ্ছে না পাহাড় কাটা

প্রকাশিত: ০৪:৪৭, ২৭ জুলাই ২০১৭

কক্সবাজারে থামানো যাচ্ছে না পাহাড় কাটা

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার থেকে ॥ পাহাড়ধসে মৃত্যুর ঝুঁকি থেকে লোকজনকে রক্ষায় প্রশাসন তৎপরতা অব্যাহত রাখলেও কোনভাবেই থামানো যাচ্ছে না পাহাড় কাটা। পাহাড়ের চূড়ায় ও পাদেশে বসবাসকারীদের উচ্ছেদের ব্যবস্থা নেয়া হলেও কতিপয় ধান্ধাবাজ নেতা এবং কৌশলে পাহাড় দখলকারীদের কারণে স্থানীয় প্রশাসন কুলিয়ে উঠতে পারছে না বলে জানা গেছে। কক্সবাজার পৌরসভার পাহাড়তলীসহ শহরের একাধিক স্পটে বর্ষাকালীন পাহাড় কাটার হিড়িক চলছে। পাহাড় কেটে লোকজনের জায়গা দখল করছে ভূমিদস্যু প্রভাবশালী চক্র। ওসব জায়গা দখল ও সেখানে রোহিঙ্গা পরিবার এনে পাহারা দিয়ে প্লট আকারে বিক্রি করছে অনেকে। পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের জেলা প্রশাসন উচ্ছেদের ব্যবস্থা নিলে আড়ালে থেকে প্রভাবশালী চক্র শতাধিক মহিলা জড়ো করে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী ঘোষণা করে। এতে প্রশাসনের তৎপরতা অনেকটা থমকে যায়। সূত্র জানায়, খাস জায়গায় বসবাসকারীরা ভাসমান বাসিন্দা হলেও কক্সবাজারে পাহাড়ী ও সমতল ভূমি (খাস জায়গা) দখলকারী অধিকাংশই প্রভাবশালী চক্র। দখলকৃত জায়গায় গরিব লোকজন ও রোহিঙ্গাদের আপাতত বসবাস করতে দিয়ে সুযোগ বুঝে চড়া দামে বিক্রি করছে তারা। উত্তরণ গৃহায়ন সমিতির নামে দীর্ঘদিন ধরে দখলে রাখা কোটি কোটি টাকা মূল্যের খাস জমি প্রভাবশালীদের দখলে রাখা হয়েছে। পাহাড়তলীর আলী আহমদের পুত্র জাফর আলম নামে এক ব্যক্তি দাপট কাটিয়ে প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে অন্যের জায়গা দখল করে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, নির্বিচারে পাহাড় কাটার ফলে পাশের পাকাসহ চারটি বসতবাড়ি ধসে পড়তে পারে যে কোন মুহূর্তে। এছাড়াও বৈদ্যরঘোনা, কলাতলী, লাইট হাউসপাড়া, উত্তরণ আবাসিক এলাকা, বড়ছরা, দরিয়ানগর, লারপাড়া, ডিককুল, বিসিক, পাহাড়তলী, দক্ষিণ রোমালিয়ারছড়া, সাহিত্যিকাপল্লী ও কলেজ গেট এলাকায় বর্ষা মৌসুমকে পুঁজি করে পাহাড় কাটার ধুম পড়েছে। কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও প্রভাবশালী চক্র এসব বিষয় আমলে নিচ্ছে না মোটেও। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাহাড়তলী ইউসুফ আলী ঘোনায় মসজিদের দক্ষিণ-পশ্চিমে হাজী কাসেম আলী সড়ক সংলগ্ন স্থানে এক গ-া জায়গা কিনেছে জাফর আলম। ওই জায়গাটি পাহাড়ী হওয়ায় গত এক মাস ধরে শ্রমিক দিয়ে পাহাড় কেটে সমতল করে নেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন ৮-১০ জন শ্রমিক দিনে রাতে সমানতালে পাহাড় কেটে চলছে। ইতোমধ্যে ভারি যন্ত্র দিয়ে নির্বিচারে পাহাড়টি অধিকাংশ কেটে ফেলা হয়েছে। স্থানীয় সমাজ কমিটির নেতারা জানান, তাকে কয়েকবার নিষেধ করলেও তিনি প্রভাব দেখিয়ে মানছে না কারও কথা। পাহাড় কাটার পানি নেমে জনচলাচলের রাস্তাটি নষ্ট হয়ে গেছে। জাফর আলম বলেন, আমি কারও জায়গা দখল করছি না।
×