ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফারহানা ইয়াসমিন জুঁথী

ভুলেও প্রহার নয়

প্রকাশিত: ০৩:৪২, ২৭ জুলাই ২০১৭

ভুলেও প্রহার নয়

সমাজে এখনো উদাহরণ দেয়ার মত বহু পরিবার রয়েছে। যেখানে গৃহকর্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গীর জন্য শিক্ষা, খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা, বাসস্থানসহ নির্মল বিনোদনের সুযোগ নিশ্চিত হয়েছে গৃহকর্মীর। এমন পরিবারে কেউ বেড়াতে এলে বুঝতেই পারে না কোন শিশু তাদের, আর কোন শিশুটি ঘরের কাজে সহায়তা করে। রাজধানীতে স্থায়ীভাবে প্রায় চার দশক ধরে বসবাস করছেন আমার পরিচিত এক ভদ্রমহিলা। তিনি এখনো যৌথ পরিবার ধরে রেখেছেন ভালোবাসাকে আশ্রয় করে। তিনি তার ছেলে মেয়েদেরও এভাবেই সুশিক্ষিত করেছেন যে তারাও কোথাও বেড়াতে গেলে নিজেদের শিশুদের সঙ্গে এই শিশুদের নেন, এমনকি জামা খেলনা কেনা এবং বাইরে খাওয়ার সময়ও সবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তাঁর সাংসারিক জীবনে তিনি প্রায় আট/দশজন শিশুকে এমন করেই পর্যায়ক্রমে সঙ্গে রেখেছেন। প্রাথমিক শিক্ষা, ধর্মীয় শিক্ষা এমনকি পারিবারিক মূল্যবোধের শিক্ষাও নিশ্চিত করেছেন তিনি। এদের মধ্যে কেউই স্বেচ্ছায় তার পরিবার ছাড়েনি। যারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছিলো তিনি তাদের বিয়ে দিয়ে সুখি জীবন গড়ায় সহযোগিতা করেছেন বলে এখনো তারা যোগাযোগ করে এই নারীর সঙ্গে। তাঁর মতে এরা আমাকে সাহায্য করে, আমার পরিবারের সদস্যদের ভালোবাসে। আর এদের ভালোবাসলে তারা মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হয়ে উঠবে, অভাবী মানুষদের মধ্যে যে অপরাধ প্রবণতা থাকে, তা কমবে। আর একটু ভালো আচরণ, জীবন সহজ করবে। এতে জীবন থেকে কিছুই কমবে না। আমরা কি পারি না নিজ পরিবারের সদস্যদের মতোই এইসব গৃহকর্মীর দিকে মানবিক দৃষ্টি দিতে। সদস্যদের মাপকাঠিতে না রাখলেও মানবিক জায়গায় ন্যূনতম স্নেহময় মনোভাব পোষণ করলেই কমে আসবে গৃহকর্মী নির্যাতন। গৃহকর্মীদের উপর যে নির্মমতা কয়েকদিন ধরে গণমাধ্যমে উঠে আসছে তার সিকি ভাগ নির্যাতন নিজ সন্তানের বেলায় আমরা মেনে নিতে পারবো না। তাহলে অন্য কোন মায়ের সন্তানের ওপর কোন অধিকারে এমন হীন কাজে লিপ্ত হবো? ভুল তো সবার হয়। গৃহকর্মীর কাজেও ভুল হয়। ভুলগুলোকে কর্মকৌশলে গৃহিণী পারেন শুধরে নিতে। প্রয়োজনে বুঝিয়ে বলার পাশাপাশি শাসনও করা যায়। তাই বলে শারীরিক শাস্তি কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। শরীয়তপুর থেকে
×