ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

টানা বর্ষণে চরম দুর্ভোগ রাজধানীবাসীর

প্রকাশিত: ০১:৪৩, ২৬ জুলাই ২০১৭

টানা বর্ষণে চরম দুর্ভোগ রাজধানীবাসীর

জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ কয়েকদিনের টানা ও ভারী বৃষ্টিতে রাজধানীবাসীসহ সারাদেশের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। কখনো থেমে থেমে বৃষ্টি আবার কখনো টানা বৃষ্টি পড়ছে। বৃষ্টির কারণে অফিসগামী লোকজন ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা পড়েছে বিপাকে। সারাদিনের বৃষ্টিতে অনেকে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। বৃষ্টির কারণে রাজধানীর প্রায় অধিকাংশ সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। শহরের অলি-গলিতে কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও দেখা যাচ্ছে কোমর পানি। এ অবস্থায় যান-বাহনও চলার অবস্থায় নেই সিটি করপোরেশনের রাস্তাগুলোতে। যানবাহনের সংকটের কারণে অনেকেই হেঁটে রওনা দেন কর্মস্থলের দিকে। সুযোগ বুঝে রিকশাওয়ালা ও সিএনজিচালকেরা ভাড়া হাঁকেন দ্বিগুণেরও বেশি। বাধ্য হয়ে তাঁদের দাবিই মেনে নিতে হয় যাত্রীদের। বৃষ্টির ভোগান্তির পাশাপাশি রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকদের এমন ব্যবহারে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। লঘুচাপের প্রভাবে ঢাকাসহ সারা দেশেই গত রবিবার থেকে ভারি বর্ষণ চলছে। টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পানি জমে যাওয়ায় যানবাহনের গতি কমে সৃষ্টি হচ্ছে জট। বিভিন্ন এলাকায় উন্নয়ন কাজের জন্য বেহাল রাস্তায় ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটছে। এর মধ্যে গণপরিবহন কম থাকায় চরম আকার ধারণ করেছে মানুষের দুর্ভোগ। সকালে বৃষ্টির মধ্যে প্রায় কেউই সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারেননি। সকালে বাচ্চা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় বৃষ্টি বিড়ম্বনায় পরে ৫০ টাকায় রিক্সা ভাড়া ১২০ টাকায় যান মাহমুদা খানম। তবে গতির পানি রিক্সার উপরেও উঠে আসছিল বলেও জানান তিনি। বেসরকারি চাকুরিজীবী আলিম। যিনি মিরপুর থেকে বাংলামোটর আসতে সময় লেগেছে বেশি ভাড়াও দিয়ে এসেছেন বেশি। তিনি জানান, কিছুই করার ছিলো না কোন সিএনজি আসেত চায়না। তাই বেশি ভাড়া গুনতে হয়েছে আমাকে। এরকম অবস্থা রাজধানীর অধিকাংশ নাগারিকেরই। রাজধানীর মগবাজারের একটু সামনে রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করে গাড়ির ভেতর থেকে পানি বের করতে দেখা গেছে এক ড্রাইভারকে। পাশেই দাঁড়িয়ে প্রাইভেটকারের মালিক জানান তিনি যে পথ দিয়ে এসেছেন সেখানে প্রাইভেট ভিতরে পানি প্রবেশ করেছে কিছুই করার ছিলো না, এতো পানি বুঝতে পারিনাই প্রথমে। এদিকে, বৃষ্টির কারণে যানজট লেগে আছে সারাদিন ধরে। বৃষ্টির সঙ্গে যানজট জনজীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। একাদিক যাত্রী ও ড্রাইভারদের কাছে জানা গেছে, ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়কে সকাল সাতটা থেকেই গাড়ি চলাচল প্রায় বন্ধ। সাত মসজিদ সড়কসহ আশপাশের এলাকার রাস্তাগুলোও ছিল চরম যানজটের কবলে। এদিকে, জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের অনেকটা এলাকাজুড়ে পানি জমে যাওয়ায় মিরপুর, গাবতলী ও মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে আসা ব্যক্তিগত গাড়িগুলো ওই সড়কে না গিয়ে সোজা যাওয়ার চেষ্টা করছে। এ কারণে মিরপুর সড়কে অতিরিক্ত চাপ পড়ায় আসাদগেট এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে চরম যানজট। এ ছাড়া মিরপুর, বাড্ডা, রাজারবাগ, পুরান ঢাকাসহ অধিকাংশ এলাকায় কোথাও হাঁটু পানি কোথাও হাঁটুর উপরে। এদিকে, দুপুরের পর থেকে আকাশ মেঘলা থাকলেও বৃষ্টি নেই রাজধানীতে। আবহাওয়া অফিসও জানিয়েছে একই কথা। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টি কমে যেতে পারে। যার লক্ষণ দেখা যেতে পারে বুধবার দুপুরের পর থেকেই। আজ বুধবার সকাল থেকে সমুদ্রবন্দরগুলো থেকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত নামিয়ে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
×