ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

উন্নয়ন ব্যয় ৭৭ শতাংশ

ঢাকা দক্ষিণের ৩ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২৫ জুলাই ২০১৭

ঢাকা দক্ষিণের ৩ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রায় তিন হাজার ৩শ’ ৩৭ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। এটি ডিএসসিসির তৃতীয় বাজেট। প্রস্তাবিত বাজেটে এ অর্থের মধ্যে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে শতকরা ৭৭ শতাংশ। বাজেটের অর্থের মধ্যে সড়ক উন্নয়ন ও ট্রাফিক অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নে বাজেটের বড় অংশ ব্যয় করার ঘোষণা দেয়া হয়। এ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১শ’ ৩০ কোটি টাকা। সোমবার দুপুরে ডিএসসিসির নগর ভবনের মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মিলনায়তনে সংস্থাটির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন এ বাজেট ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের এক হাজার ৭শ’ ৮৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেটের অনুমোদন দেয়া হয়। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তিন হাজার ১৮৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকার বাজেট দিয়েছিল ডিএসসিসি। এর মধ্যে এক হাজার ৭শ’ ৮৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকার বাজেট বাস্তবায়ন হয়, যা শতকরা হিসাবে প্রায় ৫৬ ভাগ। ঘোষিত বাজেটে আয়ের খাতগুলোয় রয়েছেÑ রাজস্ব থেকে এক হাজার ৬৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা, নিজস্ব অন্যান্য খাত থেকে ৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, সরকারী ও বৈদেশিক উৎস থেকে দুই হাজার ১শ’ ২৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। বাজেট বক্তব্যে মেয়র বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে উন্নয়নমূলক কাজে ডিএসসিসি মোট দুই হাজার ৫৬৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয় করবে। এ টাকার মধ্যে নিজস্ব খাত থেকে এক হাজার ৬৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্যয় বিবরণী অনুযায়ী, বেতন-ভাতা বাবদ ২শ’ ৫০ কোটি, বিদ্যুত জ্বালানি পানি ও গ্যাসে ১শ’ ৪৩ কোটি ৫০ লাখ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণে ২৬ কোটি ২৫ লাখ, মশক নিধনে ২৫ কোটি ৬০ লাখ, সরবরাহ খাতে ৩২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয় করবে ডিএসসিসি। এছাড়া ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে ৩শ’ ৭৪ কোটি ৮০ লাখ, বিনোদনমূলক উন্নয়নে ১শ’ ৭৫ কোটি ৫০ লাখ, পরিবেশে ১শ’ ৯২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয় হবে। বাজেট বক্তৃতায় সাঈদ খোকন বলেন, আমরা দক্ষিণ সিটিকে আগামী ২০১৮ সালের মধ্যেই স্মার্ট সিটিতে রূপান্তর করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। আগামী বছরের শুরুতেই এর কাজ শুরু করব। চিকুনগুনিয়া রোগ নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা একযোগে কাজ করার কারণে বর্তমানে এর প্রকোপ কমে এসেছে। এ কাজ চলমান থাকবে। মেয়র বলেন, আগামী আগস্ট মাস থেকে ডিএসসিসির অন্যতম সমস্যা শান্তিনগরের জলাবদ্ধতা একদম থাকবে না। বর্তমানে এলইডি বাতি ৯০ ভাগ লাগানো হলে এ অর্থবছরেরর মধ্যে শতকরা ১০০ ভাগ বাতি ডিএসসিসির অলিগলিতে লাগানো হবে। ফলে আগামী অর্থবছরেই আলোর নগরীতে পরিণত করা হবে। ঢাকার আশপাশের নতুন যুক্ত হওয়া আটটি ইউনিয়ন সম্পর্কে মেয়র বলেন, আমরা নতুন আটটি ইউনিয়নকে উন্নত করতে প্রায় ২শ’ ১৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। গত শনিবার থেকেই আমরা এর কাজ শুরু করেছি। এর মধ্যে সারুলিয়া ইউনিয়নের সড়কবাতি ও রাস্তার কাজ শুরু করেছি। দখলে থাকা ডিএসসিসির বিভিন্ন মার্কেট সম্পর্কে মেয়র বলেন, অবৈধভাবে ডিএসসিসির বিভিন্ন স্থানের মার্কেটগুলোতে নিয়মের বাইরে গড়ে তোলা প্রায় সাড়ে তিন হাজার দোকান আমরা ভেঙ্গে ফেলব। এমনকি এসব দোকানের স্ট্রাকচার পর্যন্ত রাখা হবে না। মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, আমরা ঢাকাকে নতুন ও আধুনিক ঢাকায় রূপান্তরে কাজ করে যাচ্ছি। এজন্য কয়েকদিন আগে বিশ্বব্যাংকও আমাদের উন্নয়নে বেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বুড়িগঙ্গা নদী ও এর আশপাশের এলাকাকে কিভাবে বিনোদনের অন্যতম স্থান হিসেবে গড়ে তোলা যায় তার জন্য আমরা কাজ করছি। এজন্য সরকারের অন্যান্য সংস্থার সহায়তায় বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আমরা রাজধানীর জলাবদ্ধতা দূর করতে খালগুলোতে থাকা অবৈধ দখল উচ্ছেদ করছি। এছাড়াও ফুটপাথ, বিভিন্ন স্থাপনাসহ সব ধরনের অবৈধ দখল উচ্ছেদে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। সাঈদ খোকন বলেন, অর্থ সঙ্কট থাকায় গত অর্থবছরের বাজেট পুরোটা বাস্তবায়ন করা যায়নি।
×