ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চিরচেনা সড়ক অচেনা

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ২৫ জুলাই ২০১৭

চিরচেনা সড়ক অচেনা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২৪ জুলাই ॥ ছয় মাস আগেও ছিল পিচঢালা পথ। সড়কটিতে মানুষ চলাচল করত স্বাচ্ছন্দ্যে। স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর ছিলনা কোন ভোগান্তি। আর এখন তাদের চিরচেনা সড়কটি অচেনা হয়ে গেছে। শুধু খানা-খন্দ বললেও ভুল হবে। কার্পেটিংয়ের অস্তিত্ব খোঁজা মুশকিল। হাঁটু সমান কাদায় একাকার। বিরাট বিরাট গর্ত হয়ে গেছে। কোন যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। পায়ে হাঁটাচলাও যায় না। প্রাইমারীসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতি কমে গেছে যোগাযোগের দুরাবস্থার কারণে। লোন্দা-নমরহাট-কালুমিয়ার বাজার থেকে কলেজ বাজার পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার সড়কটি এখন আর সড়ক নেই। পরিণত হয়েছে চাষ করার ধানক্ষেতে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের দেয়া হিসেবে এই ১৯ কিমি সড়ক নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ছয় কোটি টাকা। তাও গচ্চা গেল। আওয়ামী লীগ সমর্থক অধ্যুষিত এই জনপদে সড়কটির কারণে সরকারের বদনাম করছে ভুক্তভোগী মানুষ। সড়কটির চরম বেহাল দশায় অন্তত ৩০ গ্রামের ত্রিশ হাজার মানুষের যোগাযোগ দুর্ভোগ এখন নিত্য দুর্যোগে পরিণত হয়েছে। নিতান্ত দায় ঠেকা ছাড়া কেউ ঘরবাড়ি থেকে বাইরে বের হন না। স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ সাধারণ মানুষের অভিযোগ ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের নির্মাণ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এনডিইসহ সিমেন্ট কোম্পানি মালামাল নিয়ে ভারি যানবাহন ছাড়াও ছয় চাকার দৈত্যাকৃতির অবৈধ যানবাহন চলাচলে সড়কটি সম্পূর্ণভাবে অচল হয়ে গেল। এ সড়কটি সংস্কারের দাবিতে স্থানীয়রা মানববন্ধন-সমাবেশ করেছে। কিন্তু কোন কাজে আসেনি। বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থা অচলের পাশাপাশি কৃষকরা তাদের নিত্যদিনের কৃষিপণ্য বাজারে বিক্রি করার জন্য হাট-বাজারে নিতে পারছে না। দুই শতাধিক ছোট-বড় দোকানি উপজেলা সদর থেকে মালামাল নিতে পারছেন না।মুদি দোকানি রেজাউল জানান, সড়কটিতে এখন চলাচল করা যায় না। মালামাল আনা-নেয়ার কাজ করতে পারছেন না। ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে। ধানখালী ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, এ সড়ক দিয়েই প্রতিদিন কলেজে আসা-যাওয়া করতে হয়। রাস্তাটির কারণে অতিরিক্ত সময় লাগছে। আর চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ইউপি চেয়ারম্যান গাজী আব্দুল লতিফ জানান, রাস্তাটি সম্পূর্ণ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। গাড়ি চালাতে না পেরে অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। ৫টি স্কুল ও ৩টি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমে গেছে আশঙ্কাজনক হারে। চেয়ারম্যানের অভিযোগ, তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এনডিই কোম্পানির অতিরিক্ত মালামাল বোঝাই গাড়ি চলাচলের কারণে রাস্তায় ছোট-বড় খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে।
×