ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিচারকদের শৃঙ্খলা বিধিমালা প্রকাশে আরও এক সপ্তাহ সময় পেল রাষ্ট্রপক্ষ

প্রকাশিত: ০৪:৫৩, ২৪ জুলাই ২০১৭

বিচারকদের শৃঙ্খলা বিধিমালা প্রকাশে আরও এক সপ্তাহ সময় পেল রাষ্ট্রপক্ষ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশে রাষ্ট্রপক্ষকে ফের এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে আপীল বিভাগ। রবিবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের আপীল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেছে। রবিবারে এ নিয়ে মোট ২২ বার রাষ্ট্রপক্ষকে সময় দিয়েছে আদালত। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের ছিলেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এ্যাটর্নি জেনারেল দুই সপ্তাহের সময়ের আবেদন করলে আদালত এক সপ্তাহের সময় প্রদান করেন। এর আগে আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, আমরা এ শৃঙ্খলা বিধিমালার গেজেট করার খুব কাছাকাছি চলে এসেছি। এ পর্যন্ত শৃঙ্খলা বিধির গেজেট প্রকাশে আপীল বিভাগ ২২ বার সময় নিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষকে। তবে গত ২ জুলাই রাজধানীতে এক অনুষ্ঠান শেষে আইনমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছিলেন, ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে এ গেজেট চূড়ান্ত হবে। এরপর তিনি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দুদফায় বৈঠক করেন। ২০ জুলাই এক বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অধস্তন আদালতের বিচারকদের আচরণ ও শৃঙ্খলা বিধিমালা নিয়ে আলোচনার যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে এবং আমরা এ শৃঙ্খলা বিধিমালার গেজেট করার খুব কাছাকাছি চলে এসেছি। এসব বিষয় নিয়ে একটু খুঁটিনাটি বোঝার প্রয়োজন ছিল এবং যেসব বিষয় নিয়ে দ্বিমত ছিল সেগুলো অনেকাংশে দূর হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই (চলতি সপ্তাহে) তা হতে পারে। কিন্তু সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবারও সময়ের আবেদনের পুনরাবৃত্তি ঘটে; রাষ্ট্রপক্ষকে এক সপ্তাহ সময়ও দেয়া হলো। গত ২ জুলাই সরকারকে দুই সপ্তাহ সময় দিয়ে আপীল বিভাগ বলেছিল, এটাই ‘শেষ সুযোগ’। যদিও আপীল বিভাগ এর আগে কয়েকবার ‘শেষ সুযোগ’ উল্লেখ করে সময় দেয়ার পরও রাষ্ট্রপক্ষ দফায় দফায় সময় নিয়েছে। নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরিক শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন না করায় আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবকে ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর তলবও করেছিলেন আপীল বিভাগ। ২০১৬ সালের ৭ নভেম্বর বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা ২৪ নবেম্ব^রের মধ্যে গেজেট আকারে প্রণয়ন করতে সরকারকে নির্দেশ দেন আপীল বিভাগ। ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেয়া হয়। ওই রায়ের আলোকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। ১২ দফার মধ্যে ইতোমধ্যে কয়েক দফা বাস্তবায়ন করেছে সরকার। এ জন্য বারবার আদেশ দিতে হয়েছে আপীল বিভাগকে। এমনকি ২০০৪ সালে আদালত অবমাননার মামলাও করতে হয়েছে বাদীপক্ষকে। এরপর ২০০৭ সালের ১ নবেম্বর বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক ঘোষণা করেন। এ অবস্থায় ২০১৫ সালের ১৫ মার্চ আপীল বিভাগ চার সপ্তাহ সময় দেন সরকারকে। এরপর গত বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় থেকে একটি খসড়া শৃঙ্খলা বিধি তৈরি করে সুপ্রীমকোর্টে পাঠানো হয়। কিন্তু তা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে না হওয়ায় সুপ্রীমকোর্ট কর্তৃপক্ষ একটি কমিটি গঠন করে আলাদা একটি শৃঙ্খলা বিধি তৈরি করেন। গত ২ জানুয়ারি এ বিষয়ে আপীল বিভাগে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৭ সালের ১০ জানুয়ারি আপীল বিভাগ বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ সংক্রান্ত চারটি বিধিমালা সাতদিনের মধ্যে গেজেট আকারে প্রকাশের নির্দেশ দেন। তবে এ সংক্রান্ত মামলাটি এখনও আপীল বিভাগে বিচারাধীন। ১২ দফা নির্দেশনার যেসব দফা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য তাগিদ রয়েছে।
×