ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা খর্ব করতে কংগ্রেসে নতুন বিল ॥ মতৈক্যে উভয় দলের নেতৃবৃন্দ

রাশিয়ার বিরুদ্ধে শীঘ্রই নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত: ০৩:৩১, ২৪ জুলাই ২০১৭

রাশিয়ার বিরুদ্ধে শীঘ্রই নিষেধাজ্ঞা

মার্কিন কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দ রাশিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে একটি নিষেধাজ্ঞা বিলের বিষয়ে একমত হয়েছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ ও প্রতিবেশী দেশগুলোতে আগ্রাসন চালানোর জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে কংগ্রেস, শনিবার সিনিয়র নেতারা এ কথা জানান। রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার স্বার্থে বিলটিতে কিছু নমনীয়তা বজায় রাখতে হোয়াইট হাউসের আহ্বানে সাড়া দেয়নি কংগ্রেস। নিউইয়র্ক টাইমস ও ওয়াশিংটন পোস্ট। নতুন বিলটি নিষেধাজ্ঞা আরোপ বা স্থগিত রাখার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা খর্ব করবে। বিলটি পাস করানোর উদ্দেশ্যে সেটি এমন এক সময় কংগ্রেসে উত্থাপিত হলো যখন নির্বাচন পূর্ব সময়ের কর্মকা- নিয়ে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ লোকজন তদন্তের মুখে রয়েছেন। ট্রাম্প খুব শীঘ্রই এমন একটি পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন যেখানে হয় তিনি বিলটিতে সই দিয়ে একে আইনে পরিণত করবেন অথবা বিলে ভেটো দেবেন। ভেটো দিলে রাশিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে বিতর্ক আরও জোরদার হবে। সবাই ধারণা করবে তার প্রশাসন রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে আগ্রহী নয়। হোয়াইট হাউস প্রস্তাবটির বিরুদ্ধে এখনও সরাসরি কিছু বলেনি। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের দুই সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, তারা মনে করেন না প্রেসিডেন্ট বিলটিতে ভেটো দেবেন। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সেটি ট্রাম্পের জন্য খুব সহজ হবে বলে তারা মনে করেন না। এমনকি স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা ক্ষেত্রে এটি নির্বাহী ক্ষমতাকে ব্যাহত করতে পারে মনে হলেও তিনি সেটি নাও করতে পারেন। তবে ট্রাম্প আসলেই কি করবেন তা নিশ্চিত নয়। এই বিল ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথমবারের মতো কঠিন এক সিদ্ধান্তের মুখোমুখি দাঁড় করাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিলটিতে শুধু রাশিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে তা নয়, উত্তর কেরিয়া এবং ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাও এতে রয়েছে। এ কারণে এতে তাৎক্ষণিকভাবে ভেটো দেয়া ট্রাম্পের জন্য কঠিন হবে। উত্তর কেরিয়া এবং ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ট্রাম্প সব সময়ই আগ্রহ দেখিয়ে এসেছেন। রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ওই বিলটি গত মাসে সিনেটে প্রায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হওয়ার পর প্রতিনিধি পরিষদে কয়েক সপ্তাহ আটকে থাকে। ডেমোক্র্যাটরা অভিযোগ করেন ট্রাম্প প্রশাসনকে সুবিধা করে দিতে রিপাবলিকানরা বিলটি আটকে রেখেছে। জ্বালানি কোম্পানি, প্রতিরক্ষা ঠিকাদার ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিলে কিছুটা নমনীয়তা আনার জন্য অনুরোধ করেছিল। তাদের কথা ছিল বিলটি পাস হলে সেটি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা বাণিজ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তেল ও গ্যাস কোম্পানিগুলোর অনুরোধে প্রতিনিধি পরিষদে বিলটিতে সামান্য কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে হোয়াইট হাউস যেভাবে চেয়েছিল সে রকম পরিবর্তন আনেননি রিপাবলিকানরা। বিলটি এখন উভয়দলের সমর্থন পেয়েছে। এতে কেবল ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নাই বরং কৃষ্ণ সাগরীয় দ্বীপ ক্রিমিয়া দখল করে সেখানে সামরিক তৎপরতা চালানো, পূর্ব ইউক্রেনে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো, সিরিয়ার শাসক বাশার আল আসাদকে সামরিকভাবে সহায়তা করা এবং সাইবার নিরাপত্তা অগ্রাহ্য করার মতো কারণগুলোও বিবেচনায় রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার বিলটির ওপর ভোটাভুটি হবে বলে প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত রিপাবলিকান দলীয় সদস্য কেভিন ম্যাকার্থি জানিয়েছেন। সিনেটে ফরেন রিলেশন্স কমিটির প্রধান মেরিল্যান্ড থেকে নির্বাচিত ডেমোক্র্যাট দলীয় সদস্য সিনেটর বেন কার্ডিন বলেছেন, কিছু পরিবর্তন সত্ত্বেও বিলটি দুই দলের সমর্থন পাওয়া তিনি খুশি। তিনি মনে করেন উভয়পক্ষের পারস্পরিক ব্যাপক আলোচনার ফলেই এটি সম্ভব হয়েছে। তিনি মনে করেন, এর ফলে অস্থিতিশীলতা বাধানোর জন্য ক্রেমলিনকে জবাবদিহিতার মুখে দাঁড় করানো যাবে।
×