ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিরাজদিখানের ভেঙ্গে পড়া ব্রিজ মেরামত কবে হবে?

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২৩ জুলাই ২০১৭

সিরাজদিখানের ভেঙ্গে পড়া ব্রিজ মেরামত কবে হবে?

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ সিরাজদিখানে ব্রিজ ভেঙ্গে চার গ্রামের সড়ক পথ বন্ধ রয়েছে। আর কচুরিপানায় বন্ধ রয়েছে নৌপথ। দুই বছর আগে বর্ষায় পাকা সেতু ধসে পড়ায় মহাবিপাকে পড়েছে গ্রামবাসী। যোগাযোগের অভাবে এখন অনেকটা বন্দী জীবনযাপন করছে কয়েক হাজার মানুষ। উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে পারছে না। এছাড়াও গ্রামের শিক্ষার্থীদের স্কুল কলেজে যাওয়া, গ্রামবাসীদের হাটবাজার, চিকিৎসাসেবা গ্রহণ সবক্ষেত্রেই চরম বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে। সিরাজদিখান উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের গুয়াখোলা, বাসাইল, উত্তর গুয়াখোলা, উত্তর রাঙ্গামালিয়াসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের এই চিত্র। রাজধানী ঢাকার ২০/২২ কিলোমিটার দক্ষিণের এ গ্রামগুলো দীর্ঘদিন যাবত অবহেলিত। গ্রামগুলোতে কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি বললেই চলে। এলাকাটি রাজধানী ঢাকার অতি নিকটবর্তী হওয়ায় এলাকার অনেক চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, ছাত্র-ছাত্রী প্রতিদিন ঢাকায় যাওয়া-আসা করে তাদের কর্ম সম্পাদন করে। এছাড়া এলাকাবাসীর হাটবাজার, উপজেলা ও জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের এই দুটো পথই একমাত্র ভরসা। এছাড়া এলাকায় দুটি হাই স্কুল, ৩টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি ব্যাংক, পোস্ট অফিস, কয়েকটি এনজিও অফিস, একটি হেলথ অফিস ও হাটও রয়েছে। কিন্তু ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ায় ও কচুরিপানায় নদী পথ বন্ধ হওয়ায় তাদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এলাকার ইছামতি নদীটি ৫/৬ বছর যাবত কচুরিপানায় পূর্ণ হয়ে নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এলাকাবাসীর নৌ পথে যাতায়াতের দুর্ভোগসহ শত শত নৌকা ও ট্রলারের মাঝি বেকার হয়ে পড়েছে। কৃষকদের জমিতে ফসল ফলানো ও কেটে বাড়িতে আনা প্রায় বন্ধের উপক্রম হয়েছে। তাই এলাকাবাসী প্রয়োজনের তাগিদে বাধ্য হয়ে এলজিইডি বিভাগের প্রায় ২৫ বছরের পুরনো ঝুঁকিপূর্ণ বাসাইল বাজার সংলগ্ন খালের ওপর সেতুটি দিয়ে যাতায়াত করত। কিন্তু গত ১২ আগস্ট ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটির একাংশ হঠাৎ নদীর ওপর চলমান একটি ট্রলারের ওপর ভেঙ্গে পড়ে যায়। এতে কয়েকজন মারাত্মকভাবে আহত হয়। ফলে যানবাহন চলাচলসহ এলাকাবাসীর পায়ে হেঁটে চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। ব্রিজটি ধসে পড়ায় চারদিকে নদীবেষ্টিত এলাকাটির ভেতরে অনেক প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন আটকে গেছে। ব্রিজ নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত ঐ গাড়িগুলো আর বের করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া ব্রিজটি ভেঙ্গে যাবার কারণে সরকারের কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এলজিইডি বিভাগের ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ১৬ ফুট প্রশন্ত রাস্তাটিও এলাকাবাসীর তেমন কাজে আসছে না। ব্রিজটির দুরবস্থা প্রায় ১০ বছর যাবত। এলাকাবাসীর দুর্ভোগের চিত্র দেখে ২০১০ সালে এলজিইডি বিভাগের তৎকালীন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী স্বাক্ষরিত চিঠিতে ব্রিজটি নির্মাণের নির্দেশ প্রদান করা হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর জিডিপি প্রকল্পের মাধ্যমে ব্রিজ নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু অনিবার্য কারণে বাতিল করা হয়। এ ব্যাপারে সিরাজদিখান উপজেলা প্রকৌশলী আমিনুর রহমান জানান, ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর এলজিইডি বিভাগের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ পরিদর্শন করেছে। পরে এলজিইডি বিভাগের গ্রেটার ঢাকা প্রকল্প ও বন্যা পুনর্বাসন প্রকল্পে ব্রিজটি নির্মাণের তাগিদ দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ পাস হয়ে আসলে কাজ দরপত্র আহ্বান করা যাবে।
×