ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

স্মৃতিচারণ ও গানে লাকি আখান্দকে শ্রদ্ধাঞ্জলি

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৩ জুলাই ২০১৭

স্মৃতিচারণ ও গানে লাকি আখান্দকে শ্রদ্ধাঞ্জলি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাতের নিস্তব্ধতার মাঝে ছড়িয়ে পড়ে সুরের সরবতা। আগে যদি জানতাম তবে মন ফিরে চাইতাম/এই জ্বালা আর প্রাণে সহে না/ও মন রে ..। কিংবদন্তী শিল্পী লাকি আখান্দের সুরারোপিত ও গাওয়া সঙ্গীতানুরাগীদের চিরচেনা গানটি কণ্ঠে তুলে নেন ফেরদৌস ওয়াহিদ। আলোড়িত হয়ে ওঠে মিলনায়তন পরিপূর্ণ শ্রোতা। তাদের মাঝে অনেকেই আবার কণ্ঠ মেলান ওই সুরের সঙ্গে। এভাবেই গানে গানে এবং আলোচনা ও স্মৃতিচারণে শ্রদ্ধা জানানো হলো বাংলা গানের নীল মণিহার খ্যাতিপ্রাপ্ত শিল্পী লাকি আখান্দকে। স্মৃতিচারণে বক্তারা বললেন, লাকি আখান্দ এদেশের সঙ্গীতভুবনকে ঋদ্ধ করেছিলেন নতুন এক সঙ্গীতধারায়। তার রেখে যাওয়া গানগুলো যতদিন মানুষ বাঁচবে ততদিন গাইবে বলেও মত দেন তারা। সে সঙ্গে লাকি আখান্দ সৃজনকে সংরক্ষণেরও দাবি জানিয়েছেন তারা। শনিবার সন্ধ্যায় লাকি আখান্দের সৃষ্টিকর্ম উদ্্যাপন ও তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এ নাগরিক শ্রদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করে শিল্পকলা একাডেমি। একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সহেযাগিতায় ছিল বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ডস এ্যাসোসিয়েশন (বামবা) এবং শিল্পীর পাশে ফাউন্ডেশন। অনুষ্ঠানে সদ্যপ্রয়াত এ বিরলপ্রজ শিল্পীকে হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসা জানাতে হাজির হয়েছিলেন দেশের শিল্প ও সংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। তাদের স্মৃতিচারণে উঠে আসে লাকি আখান্দের বর্ণাঢ্য সঙ্গীত জীবনের নানা অধ্যায়। সেই সঙ্গে উচ্চারিত হয় স্বদেশের দায়বদ্ধ এক মুক্তিযোদ্ধা শিল্পীর প্রতি গভীর অনুরাগ। লাকি আখান্দকে নিবেদিত স্মৃতিচারণ ও আলোচনায় অংশ নেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র আনিসুল হক। এছাড়া শিল্পীর শিল্প প্রতিভা নিয়ে কথা বলেন তার সহযোদ্ধা শিল্পীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। তাদের মধ্যে ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি, বিএসএমএমইউ’র প্যালিয়েটিভ কেয়ার সেন্টারের চেয়ারম্যান ড. নিজাম উদ্দিন আহমেদ, গীতিকবি কাওসার আহমেদ চৌধুরী ও বামবার পক্ষে ফোয়াদ নাসের বাবু। হাসানুল হক ইনু বলেন, আমাদের সবাইকে চলে যেতে হবে, কিন্তু সময়ের আগে চলে গেলে তা মানুষকে কাঁদায়। আমরা রাজনীতি করি, তাদের বেশিরভাগকে মানুষ ভুলে যায়। কিন্তু লাকি আখান্দের মতো শিল্পী কালোত্তীর্ণ। একশ বছর পরেও মানুষ তাকে মনে রাখবে। আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আমাদের দেশের সঙ্গীতাঙ্গনে যখন ভাটা ছিল, কথা ও সুরে শক্তি ছিল না ঠিক সে সময়ই লাকি আখান্দ নতুন কথা ও সুর নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিল। তিনি আধুনিক গানে আধুনিকতা ফিরিয়ে এনেছিলেন। বর্তমান সময়ে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে উদ্বুদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ করতে তিনি বড় ভূমিকা রাখতে পারতেন। নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে লাকি আখান্দের জীবনভিত্তিক একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শিত হয়। লাকি আখান্দের বাল্যবন্ধু নন্দিত কণ্ঠশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ গেয়ে শোনান লাকি আখান্দের ‘আগে যদি জানতাম’ ও ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’ গান দুটি। সব শেষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্যালিয়েটিভ কেয়ার সেন্টারে থাকাকালীন শিল্পী লাকি আখান্দের সুর করা তার জীবনের শেষ গানটির ভিডিওচিত্রও প্রদর্শিত হয় আয়োজনে। গৌরাঙ্গ আদিত্যের জন্য নাট্য প্রদর্শনী গৌরাঙ্গ আদিত্য নামেন মানুষটি যেন অনেকটা অজানা এক ইতিহাসের নাম। যাত্রাপালায় তার বিবেকের বাণী মানুষকে ভাবিয়েছে, কাঁদিয়েছে। তার কণ্ঠের গান ছুঁয়ে গেছে মানুষের হৃদয়। হঠাৎ অসুস্থতায় শরীরের বামপাশ এখন পক্ষাঘাতগ্রস্ত। গুণী এ মানুষটির চিকিৎসার সাহায্যার্থে এগিয়ে এসেছে দেশের নাট্যদলগুলো। গতকাল শনিবার থেকে তার চিকিৎসা সহায়তার জন্য শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হয়েছে চারদিনের বিশেষ নাট্য প্রদর্শনীর আয়োজন। যৌথভাবে এ নাট্য প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে থিয়েটার আর্ট ইউনিট. প্রাচ্যনাট স্কুল অব এ্যাকটিং এ্যান্ড ডিজাইন, লোকনাট্য দল (বনানী), সুবচন নাট্য সংসদ এবং ম্যাড থেটার। প্রাণের তাগিদে আয়োজিত এ নাট্য প্রদর্শনীর কোন প্রকার আনুষ্ঠানিকতা ছিল না। অনানুষ্ঠানিকভাবে শনিবার একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে প্রদর্শিত হয় থিয়েটার আর্ট ইউনিটের ‘মষ্যকাম’। আকিকা মাহিনের লেখা নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন রোকেয়া রফিক বেবী। মষ্যকাম তিন অঙ্কের নাটক। তিনটি পৃথক অঙ্কে চক্রাকারে পুনরাবৃত্ত হয় একই নাটক, তিনটি ভিন্ন রূপে। প্রতিটি অঙ্কে বারবার ফিরে আসে একই সব চরিত্র প্রেসিডেন্ট, অর্থমন্ত্রী, সচিব, জেনারেল ও ‘মিস্টার এক্স’ নামের একটি বিশেষ চরিত্র। চলতে থাকে রাজনীতি ও ক্ষমতার খেলা, যার একমাত্র নিয়ন্ত্রক কোন এক অদৃশ্য পরাশক্তির প্রতিনিধি ‘মিস্টার এক্স’। দিনু ঠাকুরের গানের সঙ্কলন ‘আমার বেদনা লহ বুঝি’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দিনু ঠাকুরকে বলতেন ‘আমার গানের ভা-ারী’। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীতভবনের তিনিই ছিলেন প্রথম দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। দিনু ঠাকুরের গান নিয়ে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত হলো শিল্পী সুকান্ত চক্রবর্তী ও অভিজিৎ মজুমদারের কণ্ঠে ধারণকৃত সঙ্গীত সঙ্কলন ‘আমার বেদনা লহ বুঝি’। শনিবার সন্ধ্যায় ছায়ানট মিলনায়তনে এ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন করেন রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মিতা হক। অনুষ্ঠানে সুকান্ত চক্রবর্তী ও অভিজিৎ মজুমদার সঙ্গীত পরিবেশন করবেন। রবীন্দ্রনাথ ও দিনেন্দ্রনাথের লেখা থেকে পাঠ করেন ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। বিমসটেক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু প্রথমবারের মতো শুরু হলো বিমসটেক চলচ্চিত্র উৎসব। ‘বিমসটেক’র ২০ বছর উদযাপনের অংশ হিসেবে, রেইনবো চলচ্চিত্রে সংসদের সহযোগিতায় শনিবার গুলশানে বিমসটেক কার্যালয়ে শুরু হয়েছে এ উৎসব। উৎসবে ‘বিমসটেক’ অধিভুক্ত ৭টি দেশের মোট ১৬টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। আগামী ২৬ জুলাই পর্যন্ত উৎসবটি চলবে। উৎসবে ‘বিমসটেক’ অধিভুক্ত ৭টি দেশের মোট ১৬টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।
×