ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তামণিকে দেখতে ঢামেক হাসপাতালে মুশফিক

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২৩ জুলাই ২০১৭

মুক্তামণিকে দেখতে ঢামেক হাসপাতালে মুশফিক

জান্নাতুল মাওয়া সুইটি ॥ ‘লিমফেটিক ম্যালফরমশেন’ রোগে আক্রান্ত শিশু মুক্তামণিকে দেখতে শনিবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছিলেন ক্রিকেট দলের টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম। শনিবার দুপুর দেড়টায় তিনি ঢামেকের বার্ন ইউনিটে মুক্তার কেবিনে যান। মুক্তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়কারী ডাঃ সামন্তলাল সেন। এ সময় মুশফিককে দেখে বেশ উৎফুল্ল হয় মুক্তামণি। মুশফিক তার মাথায় হাত দিয়ে তাকে সুস্থ হয়ে উঠার সাহস দেন। মুশফিক মুক্তামণিকে বলেন, ‘তুমি সুস্থ হয়ে উঠবে। সবাই তোমার জন্য দোয়া করছে। আমার সঙ্গে যার দেখা হয় তাকেই তোমার কথা বলি, তোমার জন্য দোয়া চাই।’ হাসপাতালে আসার আগে মুক্তামণির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন মুশফিক। এ কথা জানিয়ে মুশফিকুর রহীম বলেন, ‘ফোনে কথা বলার পর ওকে দেখতে ইচ্ছে করেছে। মুক্তামণির বাবার (ইব্রাহীম হোসেন) সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছি। তাদের বলেছিলাম হাসপাতালে আসব। তাই এসেছি।’ মুশফিককে দেখেই তাকে চিনতে পারে মুক্তামণি। সে বলে, টেলিভিশনে মুশফিককে অনেক দেখেছে। এখন কাছ থেকে দেখতে পেয়ে ভাল লাগছে। সে মুশফিককে বলে, আপনি তো খেলা করেন। তখন একগাল হেসে মুশফিক তাকে বলে, ‘আমি তো খেলা পারি না।’ এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক সামন্তলাল সেন। মুশফিক তাকে বলেন, এ ধরনের রোগীদের পাশে সে সবসময় থাকতে চান। কিন্তু সব সময় সুযোগ হয় না। তাই কোন কোন সময় লোকমারফত খোঁজখবর নেন এবং সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করেন। এ দিকে ২০ জুলাই মুক্তামণির চিকিৎসায় গঠিত নয় সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড দ্বিতীয় দফায় বৈঠক করেন। তারা বিভিন্ন মেডিক্যাল টেস্টের ফলাফল নিয়ে তা আলোচনা করেন এবং তার বায়োপসি করার সিদ্ধান্ত নেন। এ সপ্তাহের মধ্যেই তার বায়োপসি করা হবে। এর আগে ১৮ জুলাই মুক্তামণির শারীরিক অবস্থার সাময়িক অবনতি ঘটে। তবে এখন সে সুস্থ আছে। চিকিৎসকের মতে, অস্ত্রোপচারের জন্য তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়া জরুরী। ইতোমধ্যেই তার শরীরে ৩ ব্যাগ এ নেগেটিভ রক্ত দেয়া হয়েছে। তাকে পুষ্টিসম্মত খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। মুক্তামণির রোগ নিয়ে স¤প্রতি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। ব্যাপক আলোচনা চলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ১১ জুলাই মুক্তামণিকে ভর্তি করা হয় বার্ন ইউনিটে। তারপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তামণির চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। মুক্তামণির পরিবারের সদস্যরা জানান, জন্মের দেড়বছর পর থেকে মুক্তামণির ডান হাতের সমস্যার শুরু। প্রথমে হাতে টিউমারের মতো হয়। ছয় বছর বয়স পর্যন্ত টিউমারটি তেমন বড় হয়নি। কিন্তু পরে মুক্তামণির ডান হাতটি ফুলে যায়। মুক্তামণি বিছানাবন্দী হয়ে পড়ে। হাতে পুঁজ জমে থাকায় তা থেকে সব সময় দুর্গন্ধ বের হতো। সাতক্ষীরা, ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় নানা চিকিৎসা চলে তার। তবে ভাল হয়নি বা ভাল হবে, সে কথা কেউ কখনও বলেননি। বার্ন ইউনিটে ভর্তির পর এখন হাতটি বার বার ড্রেসিংয়ের পর ব্যান্ডেজ করে রাখার কারণে তেমন কোন গন্ধ বের হচ্ছে না। বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক সামন্তলাল সেন আশার কথা শুনিয়েছেন মুক্তামণি ও তার পরিবারকে। তিনি বলেছেন, চিকিৎসকরা আশাবাদী, মুক্তামণি সুস্থ হয়ে যাবে।
×