ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিহত রাজুকে কারাগার থেকে বের হওয়ার পর তুলে নেয়ার অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ২৩ জুলাই ২০১৭

নিহত রাজুকে কারাগার থেকে বের হওয়ার পর তুলে নেয়ার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর এলাকা থেকে উদ্ধার গুলিবিদ্ধ লাশটির পরিচয় মিলেছে। তিনি যশোরের চৌগাছা উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে রাজু আহমেদ (৩৫)। গত বুধবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হওয়ার পর একটি গাড়িতে করে তাকে উঠিয়ে নিয়ে যায় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। শুক্রবার রাতে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পরিবারের সদস্যরা মরদেহ শনাক্ত করেন। তার বিরুদ্ধে চৌগাছা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও সিংহঝুলি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশা হত্যাসহ প্রায় এক ডজন মামলা রয়েছে। গত শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে খুলনা-সাতক্ষীরা সীমান্তের ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগরের কাছে কাঞ্চনপুর গ্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত রাজুর গলায় গুলির চিহ্ন রয়েছে। একটি মামলায় মঙ্গলবার যশোর আদালত থেকে সে জামিন পাই। পরদিন বুধবার কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে আটক করে নিয়ে যায়। যশোরের চৌগাছার স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, গত ১৬ মে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা চত্বর থেকে একটি মোটরসাইকেল চুরি হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় পান্তাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন মহেশপুর থানায় মামলা করেন। পরে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে মোটরসাইকেল চুরির সঙ্গে জড়িত বলে রাজুকে শনাক্ত করা হয়। গত ১৮ মে মহেশপুর উপজেলার তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাফুর রহমান চৌগাছা থানা পুলিশের সহযোগিতায় যশোরের চৌগাছা থেকে রাজু আহমেদকে গ্রেফতার করেন। ১৯ মে তাকে ঝিনাইদহের আদালতে পাঠানো হয়। এরপর যশোরের বিভিন্ন মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে তাকে ঝিনাইদহ থেকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর পরই অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে আটক করে নিয়ে যায়। নিহত রাজুর ভগ্নিপতি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গঙ্গানন্দপুর ইউপি চেয়ারম্যান বদরউদ্দীন রহমান বিল্টু শুক্রবার রাতে তার লাশ শনাক্ত করেন। নিহত রাজু চৌগাছার সিংহঝুলি ইউপি চেয়ারম্যান ও যুব লীগ নেতা আশরাফ হোসেন আশা ও দিঘড়ি গ্রামের সামাদ মোল্লা হত্যা মামলার আসামি। তার বিরুদ্ধে আরও বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। প্রতিবেশী আতিকুর রহমান জানান, রাজুর স্ত্রী সেতু বুধবার বেলা ১১টার দিকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে যান। দুপুর ১টা পর্যন্ত কারাগারের ফটকে অপেক্ষা করলেও রাজুর দেখা পাননি তিনি। এদিকে কারাগার থেকে বলা হয়, রাজু মুক্তি পেয়েছেন এবং বেরিয়ে গেছেন। পরে সেতু ফটকের কাছে একাধিক ব্যক্তির কাছে শুনতে পান মুক্তি লাভের পর রাজুকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাজশাহীতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে তুলে নেয়ার অভিযোগ স্টাফ রিপোর্টার রাজশাহী থেকে জানান, পবা উপজেলার অপরসরপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবল মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিনের ছেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল ফারুক রাহিদকে র‌্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার পরিবার। বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ছয়দিন পরও রাহিদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। শনিবার রাজশাহী মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন রাহিদের পিতা জহির উদ্দিন। তিনি জানান, রাহিদ এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। কাল (আজ রবিবার) তার রেজাল্ট। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রাহিদের পিতা জহির উদ্দিন জানান, গত ১৮ জুলাই সন্ধ্যা ৭টার দিকে পবার হরিপুর ভাটাপাড়া এলাকার তরিকুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বিদ্যুত মেরামত কাজের কথা বলে তার বাড়িতে রাহিদকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর কিছুক্ষণের মধ্যে তরিকুলের বাসা থেকে র‌্যাব পরিচয়ে ৬ থেকে ৭ জন একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে রাহিদকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করে রাহিদের সন্ধান মিলেনি। রাহিদের খোঁজে পবা থানা ও র‌্যাব অফিসে যোগাযোগ করা হলে তারা বিষয়টি জানেন না বলে জানান। রাহিদের পিতার অভিযোগ, আমরা ধারণা করছি র‌্যাবের সদস্যরা রাহিদকে ধরে নিয়ে গেছে। কারণ যার বাড়ি থেকে রাহিদকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়, সেই তরিকুল র‌্যাবের সোর্স হিসেবে এলাকায় পরিচিত। রাহিদের পিতা জানান, মারামারির ঘটনায় ২০১৩ সালে র‌্যাব বাদী হয়ে রাহিদ ও এলাকার আরও অনেকের বিরুদ্ধে পবা থানায় একটি মামলা করে সেই মামলায় রাহিদ আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিত। সে জামিনে মুক্ত রয়েছে। রাহিদের পরিবারের ধারণা সেই মামলায় তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হতে পারে।
×