ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত-চীন সীমান্ত বিরোধ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আশা যুক্তরাষ্ট্রের

সরাসরি সংলাপে বসুন

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ২৩ জুলাই ২০১৭

সরাসরি সংলাপে বসুন

যুক্তরাষ্ট্র ভারত ও চীনকে সরাসরি সংলাপের মাধ্যমে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব নিরসনের আহ্বান জানিয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর শুক্রবার এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিবেশী প্রায় সব কটি দেশই চীনের বিরুদ্ধে সীমান্তে বিরোধ বাধানোর অভিযোগ এনেছে। পিটিআই। ‘পারস্পরিক বিবাদ নিরসনের লক্ষ্যে শক্তি প্রয়োগের পথে না গিয়ে সরাসরি সংলাপে বসাকে আমরা উৎসাহিত করি’ মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের মুখপাত্র গ্যারি রস ভারতের বার্তাসংস্থা পিটিআইকে একথা বলেছেন। পররাষ্ট্র দফতরও গত কিছুদিন যাবত একই রকম বিবৃতি দিয়ে এলেও প্রতিরক্ষা দফতর থেকে প্রথম এ ধরনের বিবৃতি এলো। লক্ষণীয় গত কয়েক বছরে চীন প্রতিবেশী প্রায় সব কটি দেশের সঙ্গেই সীমান্ত নিয়ে বিবাদে জড়িয়েছে। সর্বশেষ সিকিম এলাকায় চীন ও ভারতের মাসব্যাপী সীমান্ত দ্বন্দ্ব চীনের শক্তি প্রদর্শনের নীতি হিসেবেই দেখা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, বেইজিং ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে সীমান্ত এলাকার স্থিতাবস্থা বদলানোর চেষ্টা করছে। চীনের সামরিক শক্তি প্রদর্শনের জবাবে ভারতও অনুরূপ পদক্ষেপ নিয়েছে। অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসের এক সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল চলতি মাসে আরও পরের দিকে চীন যাবেন। সম্মেলনের অবসরে দোভাল তার চীনা প্রতিপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। চীন ও ভারতের মধ্যে সাম্প্রতিক দ্বন্দ্বে যুক্তরাষ্ট্র নির্দিষ্টভাবে কোন পক্ষকে সমর্থন করতে অস্বীকার করেছে। এ ছাড়া দুদেশের মধ্যে বিবাদ আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা আছে কি না সে বিষয়ও কোন মন্তব্য করেনি পেন্টাগন। দুপক্ষের মধ্য দ্বন্দ্ব বাড়ার সম্ভাবনা আছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে রস বলেন, ‘আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করাকে আমরা উৎসাহিত করি। এ বিষয়ে খুব বেশি পূর্ব অনুমান করতে আমরা চাই না।’ গত সপ্তাহে পেন্টাগনের সিনয়র কমান্ডার জেনারেল পল সেলভা কংগ্রেস সদস্যদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘অর্থনৈতিক সামর্থ্য কাজে লাগিয়ে আঞ্চলিক রাজনীতিতে নিজের একটি সুবিধাজনক অবস্থা তৈরির চেষ্টা করছে চীন। সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়ন অব্যাহত রেখেছে চীন। চীনের আঞ্চলিক শক্তি হয়ে ওঠার চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক মিত্রদের জন্য উদ্বেগ তৈরি করেছে।’ চীন যেন ইচ্ছাকৃতভাবে উত্তেজনা না ছড়ায় সেজন্য সামরিক মহড়া ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার ওপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। এদিকে চীনের সঙ্গে সীমান্ত বিবাদ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ পার্লামেন্টে মিথ্যাচার করেছেন বলে চীনের গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে। গ্লোবাল টাইমস পত্রিকায় সিকিমের দোকালামকে চীনের অংশ দাবি করে বলা হয়েছে, ‘কোন দেশই ভারতের এই আগ্রাসন সমর্থন করেনি’। উল্লেখ্য, গ্লোবাল টাইমস চীন সরকারের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। এতে বলা হয়েছে, ‘সুষমা স্বরাজ বৃহস্পতিবার ভারতের পার্লামেন্টে বলেছেন, ত্রিদেশীয় জংশনে (সিকিমের চীন-ভারত বিরোধপূর্ণ স্থানে) ভারত সেনা সমাবেশ করে ভুল করেনি। সব দেশ আমাদের সঙ্গে আছে।’ সুষমার এ মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে গ্লোবাল টাইমস বলেছে, ‘ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পার্লামেন্টে মিথ্যা কথা বলেছেন।’ ওই পত্রিকায় বলা হয়, প্রকৃত সত্য হল ভারত চীনের ভূখ-ে আগ্রাসন চালিয়েছে। ভারতকে অবশ্যই দোকালাম দীর্ঘদিন আটকে রাখার আশা পরিত্যাগ করতে হবে। দোকালামকে চীন নিজের ভূখ- বিবেচনা করে থাকে। ভারতের এসব কর্মকা-ের প্রতিক্রিয়া চীন এখনও পর্যন্ত ধৈর্য্য ও সহনশীলতা দেখিয়েছে। কিন্তু ভারত যদি অনির্র্দিষ্টকাল পর্যন্ত চীনের ভূখ-ে আগ্রাসন অব্যাহত রাখে তবে বেইজিং সামরিক পদক্ষেপের কথা বিবেচনা করতে পারে বলে এতে হুঁশিয়ার করে দেয়া হয়।
×