ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

উচ্ছেদের ৯ দিন পর আবার বহাল তবিয়তে

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ২২ জুলাই ২০১৭

উচ্ছেদের ৯ দিন পর আবার বহাল তবিয়তে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘স্যার আপনারে কইছিলাম না, আবার বইতে দিব। নিরাপত্তার কথা কইয়া খামাখা কয়ডা দিন গরিবের পেটে লাথি দিল। ঠিকই তো আবার ম্যানেজ অইল।’ শিশু একাডেমির উল্টো দিকের ফুটপাথে দাঁড়িয়ে এক নার্সারি দোকানের কর্মচারী এসব কথা বলছিল। মাত্র নয়দিন আগে গত ৩ জুলাই সকালে শাহবাগ থানা পুলিশ নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে শিশু একাডেমির সামনে থেকে হাইকোর্ট মোড় পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশের ফুটপাথ সম্পূর্ণ দখলমুক্ত করে। সেদিন এই কর্মচারী অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছিলেন তারা আবারও এ ফুটপাথে বসতে পারবেন। নয়দিন পর আবারও তার সঙ্গে দেখা হলে তিনি সেদিনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে কথাগুলো বলেন। তার সঙ্গে সেদিন একাধিক নার্সারি দোকান মালিক-কর্মচারীও একই কথা বলেছিলেন। ওই কর্মচারী বলেন, মালিকরা কারে ধইরা জানি ম্যানেজ করছে। হেয় কইছে রাস্তাঘাট হাঁটাচলার লাইগ্যা রাইখ্যা ফুলগাছ সাজাইতে। তবে মালিকরা কে বা কাদের ম্যানেজ করে ফুটপাথে বসেছে তা তিনি জানেন না, জানলেও বলবেন না বলে জানান। উচ্ছেদের দিন দোকানিরা অভিযোগ করেছিলেন, ঈদের ছুটিতে বাড়ি থেকে তখনও ফিরে না আসায় অনেক নার্সারি মালিক বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও ফলের গাছ সরিয়ে নেয়ারও সময় পাননি। পুলিশ ওইদিন ট্রাকভর্তি করে ফুলগাছ থানায় নিয়ে যায়। সেদিন ফুলগাছ সরিয়ে নেয়ার সময়টুকুও দেয়া হয়নি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) ও শাহবাগ থানা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা সেদিন আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে বলেছিলেন, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফুটপাত উচ্ছেদ ও সেখানে আবার বসতে না দেয়ার ব্যাপারে মেয়র শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। শিশু একাডেমির সামনে থেকে হাইকোর্ট পর্যন্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হওয়ায় এখানেও বসতে দেয়া হবে না। তবে নার্সারি উচ্ছেদ করে আবার বসতে দেয়া ও দু’পাশ ভাসমান ভিখারিদের দখলে চলে যাওয়ায় পথচারীদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে দেখা গেছে। আলাপকালে সচিবালয়ে কর্মরত এক কর্মকর্তা বলেন, দু’পাশের ফুটপাথ ফাঁকা হওয়ায় পরিবেশটা কত সুন্দর হয়েছিল কিন্তু এখন আবার ঘিঞ্জি ঘিঞ্জি লাগছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের সায়েমা হোসেন নামে এক ছাত্রী বলেন, যদি উচ্ছেদ করার পর বসতেই দেয়া হবে, তবে কেন সেদিন গাছগুলো অযতেœ-অবহেলায় ছুড়ে ছুড়ে ট্রাকে তোলা হয়েছিল। উচ্ছেদ উচ্ছেদ নাটকের কী দরকার ছিল। শেষ পর্যন্ত তো হকারদের কথাই সত্যি হলো। ডিএসসিসি ও পুলিশের এই দ্বৈত ভূমিকা মেনে নেয়া যায় না।
×