ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচন

সর্বভারতীয় জোট গড়ার পরিকল্পনা বিজেপির

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২২ জুলাই ২০১৭

সর্বভারতীয় জোট গড়ার পরিকল্পনা বিজেপির

ইলেক্টোরাল কলেজ বা নির্বাকম-লীর দুই তৃতীয়াংশ ভোট পেয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি হিসেবে রামনাথ কোবিন্দের বিজয়ে শরিক দলগুলোর সঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) রাজনৈতিক পরিকল্পনায় বড় ধরনের পরিবর্তনের আভাস পাওয়া গেছে। দলটি এখন পরবর্তী নির্বাচন সামনে রেখে সর্বভারতীয় জোট গঠনের দিকে এগুচ্ছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার। মীরা কুমার বিরোধীদলীয় প্রার্থী হিসেবে অনেক বেশি ভোট পেয়েছেন, কংগ্রেস যখন এমন দাবি তোলে, তখন বিজেপির নির্বাচনী কর্মকর্তাদের উত্তেজনা বৃদ্ধি একেবারে অসঙ্গত কিছু নয়। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের রাজনৈতিক সমীকরণের উল্টোদিকটিই কেবল দেখিয়েছে। কিন্তু কোবিন্দের নির্বাচনী ব্যবস্থাপক ও বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ভুপেন্দ্র যাদব বলেন, ‘এ রকম প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিরোধী দল হিসেবে বিজেপির প্রার্থী এক তৃতীয়াংশেরও কম ভোট পেয়েছেন। তা সত্যি। কিন্তু সেসব এখন ভিন্ন হিসাব। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কোবিন্দ ব্যাপক সমর্থন পেয়েছেন। আঞ্চলিক ছোট দলগুলোও তাকে ভোট দিয়েছে। স্বাধীনভাবে চিন্তা করলে দেখা যাবে দেশজুড়ে আমাদের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে।’ বিজেপি নেতারা বলেন, ‘সেই হিসেব মাথায় রেখেই ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে একটি সর্বভারতীয় জোট গঠনের উদ্যোগ দিচ্ছেন তারা। তাদের যুক্তি, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজয় দলের জনপ্রিয়তা বর্তমান ভূরাজনৈতিক সীমারেখা ছাড়িয়ে নতুন করে বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে।’ আর এমন সুযোগ হাতছাড়া করতে চাচ্ছেন না তারা। নির্বাচনের ব্যবস্থাপক ভূপেন্দ যাদব বলেন, ‘কোবিন্দের ব্যক্তিত্বের কারণে নিজেদের হিসেবের বইরেও আমরা ১১৫ ভোট বেশি পেয়েছি। বিজেপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের (এনডিএ) আঠারোটি দলের সমর্থন পেয়েছে, সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু এর বাইরে আমরা কিছু আঞ্চলিক দলের সমর্থন অর্জন করেছি। ফলে আমরা জয়ী। ভোট গ্রহণের আগেই জয়ের নিশ্চয়তা পেয়েছি। জয়ের উচ্ছ্বাসে বিজেপি এখন আকাশে উড়ছে। কারণ তারা প্রগতিশীল ঐক্যজোট বা ইউপিএর আসন থেকেও সমর্থন পেয়েছে। যখন নির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্য ও বিধায়কদের নিয়ে যখন একটি দলের নির্বাচকম-লী গঠিত হয়, তখন সেটির রাষ্ট্রপতি প্রার্থীর পরাজয়ের শঙ্কা থাকার কথা না।’ এক জ্যেষ্ঠ বিজেপি নেতা বলেন, আমাদের হিসেবের বাইরে অতিরিক্ত ৩০ নির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্যের ভোট পেয়েছি। এমপিরা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কোবিন্দকে ভোট দিয়েছেন, সেই সংখ্যাটা মহারাষ্ট্রে বেশি ছিল। রাজ্যের ২৮৮ বিধায়কের মধ্যে একজন বাদে সবাই ভোট দিয়েছেন। সেখান থেকে ২০৮টি ভোট পেয়েছেন কোবিন্দ। আর ৭৭টি পেয়েছেন কংগ্রেসের মীরা কুমার। দুইটি ভোট ছিল বাতিল। কিন্তু সেখানে কোবিন্দের ভোট পাওয়ার কথা ছিল বিজেপি ও শিবসেনা মিলিয়ে ১৮৫টি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপি প্রধান অমিত শাহর জন্মস্থান গুজরাটেও দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ভোট দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। কংগ্রেসের অন্তত আট বিধায়ক এনডিএ প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন। গুজরাটে কোবিন্দ ১৩২টি ও মীরা কুমার ৪৯ বিধায়কের ভোট পেয়েছেন। অথচ গুজরাটে কংগ্রেসের বিধায়কের সংখ্যা ৫৭ জন। দলটির বিদ্রোহী নেতা শংকর শিংয়ের নেতৃত্বে কোবিন্দকে ভোট দিয়েছেন অত্যন্ত আট বিধায়ক।
×