ছড়া সাহিত্যের আদি শাখা। লিখিত রূপে সাহিত্য রচনার আগেই ছড়া রচিত হয়েছে। অর্থাৎ যখন সাহিত্যের লিখিত রূপ ছিল না তখনও মানুষ মৌখিক ছড়ার মধ্য দিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করতেন। তখন ছড়াই ছিল লোকসমাজে ভাব প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম। আমরা যদি বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন ‘চর্যাগীতি’র দিকে দৃষ্টি দেই- তাহলেও দেখি এর প্রথম পদটি ছড়ার স্বরবৃত্ত ছন্দ বা মিলে রচিত। অনেকের মতে এটিই বাংলা সাহিত্যের প্রথম ছড়া। কাজেই বলতে দ্বিধা নেই- ছড়ার ইতিহাস অনেক সুদীর্ঘ। দেড় হাজার বছরাধিককাল ধরে ছড়া প্রবহমান নদীর মতো বয়ে চলেছে।
** হচ্ছেটা কী?
হচ্ছেটা কী বাপ-
দিনে দিনে মাথার ওপর বাড়ছে বুঝি চাপ
খুন-খারাবি দিব্যি করে সন্ত্রাসী পায় মাফ্!
হচ্ছেটা কী দাদা-
প্রতিবাদী মুখগুলো আজ শক্ত করে বাধা
দিন-দুপুরে জিম্মি করে নিচ্ছে যে-কেউ চাঁদা।
হচ্ছেটা কী দাদু-
চোরের বিচার নেই সমাজে, শাস্তি যে পায় সাধু
কম বেতনের কেরানি পায় আলাদিনের যাদু।
হচ্ছেটা কী ফ্রেন্ড-
কিসের টাকায় রাস্তা কাঁপায় গাড়ির দামী ব্রেন্ড
এটা কি এ যুগের রীতি, এটাই তবে ট্রেন্ড?
হচ্ছেটা কী মামু-
অযোগ্যদের গ্যাঁড়াকলে আর কত মার খামু
ন্যায় ও নীতির দাম সমাজের কোথায় গেলে পামু?
**
ঘুষ
ঘুষ না দিলে হুঁশ মিলে না
মন বসে না কাজে,
ঘুষ না দিলে ঘুষখোরদের
জ্বলে ওঠে গা-যে!
ঘুষ না দিলে ফাইল চলে না
হয় যে জমে স্তূপ,
ঘুষ না দিলে বড়-কর্তার
মুখটা থাকে চুপ!
ঘুষ না দিলে চাকরি হয় না
হয় না পদোন্নতি,
ঘুষ না দিলে নীতিবানের
করুণ পরিণতি।
ঘুষ না দিলে রাজনীতিকের
গরম থাকে মাথা,
বাংলাদেশের সবখানেতে
ঘুষেরই ফাঁদ পাতা।
ঘুষ না দিলে জোশ থাকে না
দিল পায় না হুঁশ,
এই দুনিয়ায় সব খাবারের
সেরা খাবার ঘুষ।
** ও চেয়ারম্যান
সিলিপ মেরে রিলিফ খেলি
আরও খেলি ‘কাবিখা’
ও চেয়ারম্যান মনে যা চায়
লুটেপুটে খাবি- খা।
খা রে বাবা পেটপুরে খা
খালি পেট তো সয় না
তোর বিবিরে দে বানিয়ে
গিনি সোনার গয়না।
বিধবাদের ভাতা খা তুই
ঘরহারাদের টিন-
উসুল নেব কড়া-গ-ায়
আসলে ভোটের দিন।
** জিজ্ঞাসা
দিচ্ছে কারা মদদ তাদের
দিচ্ছে কে আস্কারা-
নির্বিচারে মানুষ মেরে
করছে ক্যান্ লাশ তারা?
পাচ্ছে কোথায় গোলা-বারুদ
পাচ্ছে কোথায় শক্তি-
পিছন থেকে পাচ্ছে কারা
দিবা-নিশি ভক্তি?
কাদের টাকায় জঙ্গি চলে
মরাই কেনো স্বভাব-
জানতে চেয়ে পাই না কেনো
প্রশ্নগুলোর জবাব?
আসুন সবে নাটের গুরু
করি এবার চিহ্নিত-
এই নাটাদের মগজ জুড়েই
জঙ্গীবাদের জীন্ নী
** মমতার ভাগাভাগি
কন তো দাদা ভাগের সময়
চান না কে আজ সমতা?
সবার প্রিয় ভগ্নি তিনি
পাশের বাড়ির মমতা।
নামের সঙ্গে মিল দেখি না
কথা কিংবা কাজে
ভাগের ফাইল আটকে রাখেন
লাল মলাটের ভাঁজে।
নিজের ভাগটা বুঝেন ভালো
পরকে করেন বঞ্চিত
এই মমতার জন্যে সবার
হচ্ছে যে ক্ষোভ সঞ্চিত
ভাগের সময় কন তো দাদা
দেখান কে তার ক্ষমতা?
সবার প্রিয় ভগ্নি তিনি
পাশের বাড়ির মমতা।