ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘সব ধরনের পোশাকেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি’

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ২১ জুলাই ২০১৭

‘সব ধরনের পোশাকেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি’

তার প্রিয় কবি জীবনানন্দ দাশ আর আল মাহমুদ। বিশ্বসাহিত্যের খবর বলতে গিয়ে দিশা হারিয়ে ফেলেন বার বার। প্রিয় তালিকায় আছেন বোরেস, মার্কেজ, রুশদী, মুরাকামী, কোয়েক্স, বেনত্রি, ওরহান পামুক। লেখাপড়ার বৃত্তটি অনেক বড় স্বীকার করতেই হয়। বাংলার তরুণতম লেখক থেকে শুরু করে প্রাচীন সাহিত্য নিয়ে রাখেন পরিষ্কার ধারণা। বর্তমানে কর্মরত আছেন বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিকের গ্রুপ ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর পদে। সিঙ্গাপুর ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফ্যাস্টিভ্যাল উৎসবে সিলভার স্ক্রিন এ্যাওয়ার্ড এ বেস্ট পারফর্মার হিসেবে নির্বাচিত হয়ে নিজেকে যেমন নিয়ে গেছেন অন্য মাত্রায় তেমনি বিশ্বের চলচ্চিত্র জগতে দেশকে চিনিয়েছেন নতুন করে। তিনি মোস্তফা মনোয়ার। সৃষ্টিশীল আর সৃজনশীলতার মিশেলে গড়ে ওঠা এক পরিণত অভিনেতা। ফ্যাশন নিয়ে আছে যার নিজস্ব ভাবনা। চির তরুণ এই মানুষটির ফ্যাশন ভাবনা থাকছে আজকের সংখ্যায়। লিখেছেনÑ মাহির দীপন একজন তরুণ হিসেবে ফ্যাশনের সঙ্গায়নটা কেমন হবে? ফ্যাশন আমার কাছে অনেকটা ভাষার মতো। ভাষা যেমন আমাদের পরিচয় তৈরি করে, আমাদের চিন্তা-ভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে, ফ্যাশনও ঠিক একই কাজ করে। আর একটা মিল হচ্ছে এই দুইটি জিনিসই আমাদের মাঝে বেঁচে থাকে নানা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে। একজন অভিনেতা এবং কর্পোরেট জগতের কর্মব্যস্ত মানুষ আপনি। চাইলেও সব সময় নিজের পছন্দের পোশাকটা বেছে নেয়া যায় না কাজের স্বার্থে। সেক্ষেত্রে অনুভূতিটা কেমন হয়? ফ্যাশন বলতে আমাদের মাথায় প্রথমেই আসে পোশাকের কথা। কারণ, আমাদের শারীরিক অস্তিত্বের সঙ্গে সবচেয়ে কাছের সম্পর্ক হচ্ছে আমাদের পোশাক-আশাকের। তাই আমরা যা পরি তাই হয়ে দাঁড়ায় আমাদের আইডেন্টিটির একটা এক্সটেনশন। আমি এডভার্টাইজিং সেক্টরের ক্রিয়েটিভ ডিপার্টমেন্টে কাজ করি। সেখানে পোশাক নিয়ে কোন বাধা-ধরা নিয়ম নেই। তাই অফিসের ক্ষেত্রে পছন্দের পোশাক বেছে নিতে কোন সমস্যা নেই। অভিনয়ের ক্ষেত্রে অবশ্য পছন্দের প্যারামিটারটা ভিন্ন। সেক্ষেত্রে চরিত্রের সঙ্গে মানানসই পোশাকই আমার পছন্দ হয়ে দাঁড়ায়। পছন্দের রং হিসেবে কোনটিকে কিংবা কোনগুলোকে বেছে নেবেন? পছন্দের রঙের কথা আসলে সাদা, কালো, নীল, কমলা, লাল, বেগুনি এগুলোই কোন্ ধরনের পোশাকে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন- দেশীয় নাকি পশ্চিমা? দেশী-পশ্চিমা সব ধরনের পোশাকেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। তবে পশ্চিমা পোশাকই বেশি পরা হয়। যেমন- শার্ট, টি-শার্ট, জিন্স। প্রিয় ফ্যাশন অনুষঙ্গ হিসেবে কোন্ জিনিসগুলো পছন্দের তালিকা দখল করে আছে? প্রিয় ফ্যাশন অনুষঙ্গের কথা আসলে প্রথমেই রিস্টওয়াচের কথা আসবে। রিস্টওয়াচ নিয়ে আমার আলাদা ফ্যাসিনেশন আছে। এছাড়া স্যু-স্যান্ডেল ও ব্যাগ এগুলোর দিকেও ঝোঁক আছে। পছন্দের ব্র্যান্ডের কথা আসলে কাদের বেছে নেবেন? নাইকি, কনভার্স, আরমানি, হুগো বস, ফসিল, জি-শক মূলত এগুলোই আমার পছন্দের ব্র্যান্ড। অনেক তরুণের কাছে বইপড়া কিংবা লেখালেখি করাটাও ফ্যাশনের অংশ- বিষয়টাকে কিভাবে দেখছেন? বইপড়া, লেখালেখি করাটা আমার কাছে ফ্যাশনের অংশ মনে হয় না। ফয়াসনেরমূল ক্যারেক্টারিস্টিক হচ্ছে পরিবর্তন। পড়া ও লেখাকে যদি ফ্যাশন হিসেবে দেখা হয় তবে তার পরিণতি আজ আছে কাল নেই। বরং কে কীভাবে পড়ছে বা কিভাবে লিখছে তার সঙ্গে ফ্যাশনের একটা সম্পর্ক থাকতে পারে। যেমন- একটা বই আমি আইপ্যাডে পড়ছি নাকি কিন্ডেলে পড়ছি, নাকি হার্ডকপি পড়ছি। ব্যক্তি মোস্তফা মনোয়ার যখন পর্দার অভিনেতায় রূপ নেন তখন নিজের ফ্যাশনকে প্রাধান্য দেয়ার সুযোগ কতটুকু? অভিনয় করার ক্ষেত্রে নিজের ব্যক্তিগত ফ্যাশনকে প্রাধান্য দেয়ার কোন সুযোগ নেই, প্রয়োজনও নেই। কিন্তু ফ্যাশন সেন্স থাকাটা প্রতিটি অভিনেতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অভিনেতা হিসেবে আপনি অনেক তরুণের কাছেই আদর্শ। সেক্ষেত্রে তাদের ফ্যাশন ভাবনাটা কেমন হওয়া উচিত বলে মনে করেন? আমার মনে হয় যার যার ফ্যাশন ভাবনা তার তার মতোই হওয়া উচিত। তবে এক্ষেত্রে মনে রাখা উচিত ব্যাপারটা যেন দৃষ্টিকটু না হয়।
×