ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ডিজিটাল যুগে এনালগ স্টাইলে শুরু এ্যাথলেটিক্স

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ২১ জুলাই ২০১৭

ডিজিটাল যুগে এনালগ স্টাইলে শুরু এ্যাথলেটিক্স

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এ যেন ডিজিটাল যুগে এনালগ স্টাইলে কাজ করা। আবারও মান্ধাতা আমলে ফিরছে দেশের এ্যাথলেটিক্স। সামার এ্যাথলেটিক্সে পিস্তল নয়, ব্যবহার করা হবে কাঠের স্টার্টার। কার্যনির্বাহী কমিটি বর্তমান এ্যাডহক কমিটিকে সম্পত্তি বুঝিয়ে না দেয়ায় তৈরি হয়েছে জটিলতা। কেবল পিস্তল নয়, ফেডারেশনের চেকবইসহ বিভিন্ন সরঞ্জামও নাকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ফেডারেশন থেকে বিষয়টি এখন পৌঁছেছে পুলিশের কাছেও। আজ শুক্রবার থেকে দুইদিনব্যাপী ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে সামার এ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ। কিন্তু পিস্তলের পরিবর্তে কাঠের স্টার্টার দিয়েই চালাতে হবে বিভিন্ন দৌড় ইভেন্ট। স্টার্টার পিস্তলসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের হদিস পাচ্ছে না এ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন। তিনমাস আগে কার্যনির্বাহী কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে এ্যাডহক কমিটি করা হলেও এখনও সম্পত্তি বুঝে পায়নি বর্তমান কমিটি। এ্যাথলেটিক্সের বড় ইভেন্ট দৌড়ের জন্য মানহীন ট্র্যাকের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। দায়িত্ব নিয়েই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে নতুন ট্র্যাক বসানোর আবেদন করেছে কমিটি। তবে শীঘ্রই নতুন ট্র্যাকের সম্ভাবনা নেই। সামার মিটেও থাকছে না ইলেক্ট্রনিক টাইমার। তবে আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ইলেকট্রনিক টাইমারের ব্যবহার অবশ্যই থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ফেডারেশন। তিন বছর বাদে আবারও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গ্রীষ্মকালীন এ্যাথলেটিক্সের ত্রয়োদশ আসর। সর্বশেষ ২০১৪ সালে ট্রাকে গড়িয়েছিল এই আসর। জাতীয় ও জুনিয়র আসরের মাঝামাঝি গরমের সময় এ আসরের আয়োজন হযে থাকে। দু’দিনের আসরে পুরুষ ও মহিলা গ্রুপে ৩৬ ইভেন্টে পদকের লড়াই হবে। বাংলাদেশ এ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের এ্যাফিলিয়েটেড সব জেলা, বিভাগ, শিক্ষাবোর্ড, সার্ভিসেস দল মিলিয়ে প্রায় ৬০০ প্রতিযোগী অংশ নেয়ার ব্যাপারে আশাবাদী ফেডারেশন (যদিও গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪০ দলের মাত্র ৩৯৫ এ্যাথলেট নিবন্ধন করেছেন)। এই প্রতিযোগিতা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ফেডারেশনের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আবদুর রকিব মন্টু। ফেডারেশনের সভাপতি এএসএম আলী কবিরের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি শাহ আলম। আজ সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করবেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার। এই প্রতিযোগিতায় এবার নতুন কোন জাতীয় রেকর্ড হবে কি না এ ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে পারেননি ফেডারেশনের কোন কর্মকর্তা। ফেডারেশনের সভাপতি এএসএম আলী কবির জানান, ‘ঝড়-বৃষ্টি থাকলেও প্রতিযোগিতা স্থগিত করা হবে না।’ দর্শকদের প্রতিযোগিতা উপভোগ করার জন্য স্টেডিয়ামের গেটগুলো খুলে দেয়া হবে। তাদের উদ্দেশে প্রচার করার জন্য স্টেডিয়ামের বাইরে দুইপ্রান্তে মাইকের মাধ্যমে ধারাভাষ্য প্রচার করারও পরিকল্পনা করেছে ফেডারেশন। এই প্রথম পোস্টারিংয়ের মাধ্যমে কোন এ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে যাচ্ছে ফেডারেশন। তবে সেই পোস্টার নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। পোস্টারে ব্যবহার করা হয়েছে বিদেশী নারী-পুরুষ এ্যাথলেটদের ছবি। দেশীয় তারকা কোন এ্যাথলেটদের ছবি কি দেয়া যেত না? বিষয়টি ভুল হয়েছে স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ফেডারেশনের সভাপতি। সেই সঙ্গে আগামীতে দেশীয় তারকাদের ছবি পোস্টারে ছাপানোর প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। প্রতিযোগিতার মোট বাজেট প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকার মধ্যে পৃষ্ঠপোষক এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক দেবে পাঁচ লাখ টাকা। বাকি টাকা দেবে ফেডারেশন। যদিও প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের থাকছে না কোন অর্থ পুরস্কার। এ ব্যাপারে ফেডারেশনের আত্মপক্ষ সমর্থন বক্তব্য, ‘আমাদের সাধ আছে, সাধ্য নেই।’ প্রতিযোগিতার আগে ফেডারেশন আয়োজন করেছে কোচ ও জাজদের দু’দিদের রিফ্রেশার্স কোর্স। দু’দিনের কোর্সে অংশগ্রহণকারী ১২০ জাজ এবারের আসর পরিচালনা করবেন। বর্তমান এ্যাডহক কমিটির প্রথম চ্যালেঞ্জ সামার মিট। সেই সঙ্গে আইএএএফের নির্দেশনা অনুযায়ী সব ঘরোয়া টুর্নামেন্ট আয়োজনেই বেশি মনোযোগ ফেডারেশনের।
×