ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বেরোবিতে ছাত্রলীগ দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, অর্ধশত কক্ষ ভাংচুর ॥ তদন্ত কমিটি গঠন

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ২১ জুলাই ২০১৭

বেরোবিতে ছাত্রলীগ দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, অর্ধশত কক্ষ ভাংচুর ॥ তদন্ত কমিটি গঠন

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর, ২০ জুলাই ॥ হলের সিট দখল করাকে কেন্দ্র করে বুধবার মধ্যরাতে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নোবেল শেখসহ ১০ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আহতদের রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় সহকারী প্রক্টর সদরুল ইসলাম সরকারকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার আদেশ দেয়া হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইবরাহিম কবীর জানিয়েছেন। পুলিশ জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তুষার কিবরিয়া নিয়ন্ত্রিত শহীদ মুখতার এলাহী হলে সাধারণ সম্পাদক নোবেল শেখ সমর্থক এক ছাত্রলীগকর্মীকে জোর করে তুলে দিতে যায় তার সমর্থক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এতে সভাপতি তুষার কিবরিয়া সমর্থকরা বাধা দিলে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। রাত সোয়া বারোটা থেকে সোয়া একটা পর্যন্ত চলা সংঘর্ষে দফায় দফায় শহীদ মুখতার এলাহী ছাত্রবাসে হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে ওই হলের অর্ধশতাধিক কক্ষের জানালা-দরজাসহ আসবাবপত্র ভাংচুর করা হয়। সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি এবিএম জাহিদুল ইসলাম পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। অন্যদিকে, সংঘর্ষ চলার প্রায় এক ঘণ্টা পর দুই হলের দুজন সহকারী প্রভোস্ট ঘটনাস্থলে আসেন। শহীদ মুখতার এলাহী হলের সহকারী প্রভোস্ট জিন্নাতুল বাসার জানান, এখানে ছাত্রলীগের মধ্যে কোন সংঘর্ষ হয়নি। এ হামলা বহিরাগতরা চালিয়েছে বলে দাবি তার। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা জানতে চান বহিরাগতরা গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক পার হয়ে কিভাবে হল আক্রমণ করল। এর কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেনি হল কর্তৃপক্ষ। ওই সহকারী প্রভোস্ট আরও দাবি করেন, সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নোবেল শেখ আহত হয়েছে। তবে বঙ্গবন্ধু হলের সহকারী প্রভোস্ট আপেল মাহমুদ এ ঘটনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবদমান দুই দল ছাত্রের সংঘর্ষ বলে স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। পরে পুলিশের সহায়তায় রাত সোয়া দুটোর দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি জাহিদুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের যথাসময়ে খবর না দেয়ায় তারা ক্যাম্পাসে আসতে পারেননি। সার্বিক বিষয় জানতে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান ও সম্পাদক নোবেলের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
×