ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

জন্মদিন উপলক্ষে কথা ও গানে আবদুল আলীমকে শ্রদ্ধাঞ্জলি

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ২১ জুলাই ২০১৭

জন্মদিন উপলক্ষে কথা ও গানে আবদুল আলীমকে শ্রদ্ধাঞ্জলি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলা লোকসঙ্গীতের এক উজ্জ্বলতম শিল্পী আব্দুল আলীম। তার মতো শিল্পীদের কণ্ঠেই এদেশে লোকগানের জাগরণ ঘটেছিল। প্রান্তিক পর্যায় ছাপিয়ে লোকসঙ্গীতের মহিমা ছড়িয়েছে সর্বস্তরের মানুষের অন্তরে। আগামী ২৭ জুলাই কিংবদন্তি এই লোকসঙ্গীত শিল্পীর জন্মদিন। আর ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পথিকৃৎ এই শিল্পীকে জানানো হলো শ্রদ্ধাঞ্জলি। সে আয়োজনে পরিবেশিত হলো শিল্পীর গাওয়া তুমুল জনপ্রিয় একগুচ্ছ গান। তার বর্ণাঢ্য জীবন নিয়ে কথনে অংশ নিলেন বিশিষ্টজনরা। আলোচনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় সাজানো অনুষ্ঠানে আব্দুল আলীমকে মরণোত্তর সম্মাননা প্রদান করা হয়। শিল্পীর পক্ষে সম্মাননা গ্রহণ করেন তার ছেলে জহির আলীম। বৃহস্পতিবার বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হলো আব্দুল আলীমের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণের এ অনুষ্ঠান। শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সারেগামাপা সঙ্গীত পরিষদ। আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব হুমায়ুন খালিদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য উপদেষ্টা (অব.) শওকত আলী খান, আব্দুল আলীমের ছেলে জহির আলীম প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন সারেগামাপা সঙ্গীত পরিষদের সভাপতি সুলতান হোসেন। বক্তারা বলেন, বাংলা লোকসঙ্গীতকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন আব্দুল আলীম। তার গানের সুরে জীবন জগতের সঙ্গে একাকার হয়ে গিয়েছিল ভাববাদী চিন্তা। আব্দুল আলীম তার আধ্যাত্মিক ও মরমি মুর্শিদী গানের জন্য অমর হয়ে থাকবেন। লোকসঙ্গীতের মাধ্যমে সমাজকে জাগিয়ে তোলার নিরন্তর সাধনা করে গেছেন আমৃত্যু। তাই শরীরী মৃত্যু হলেও আপন সুরের ভুবনে আমৃত্যু বেঁচে থাকবেন এই শিল্পী। বক্তারা আরও বলেন, উপমহাদেশের লোকসঙ্গীতের প্রবাদপ্রতিম শিল্পী আবদুল আলীম। তিনি পল্লীগীতি, বিচ্ছেদি, ভাটিয়ালি থেকে দেহতত্ত্ব, বাউল, মরমিÑ অসংখ্য গানে তিনি মন ভরিয়ে রেখেছিলেন অগণিত শ্রোতার। তার কণ্ঠমাধুর্য এসব গানকে বিশেষ ব্যঞ্জনা দিয়েছিল। সেই গানগুলো কালজয়ী আবেদন সৃষ্টি করেছে শ্রোতাদের কাছে। খুব অল্প বয়সেই বাংলার লোকসঙ্গীতের এই অমর শিল্পী গান গেয়ে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। মাত্র তেরো বছর বয়সে তার গানের প্রথম রেকর্ড হয়। তাঁর কণ্ঠমাধুর্য লোকগানকে বিশেষ ব্যঞ্জনা দিয়েছিল। সেই গানগুলো কালজয়ী আবেদন সৃষ্টি করেছে শ্রোতাদের কাছে। সম্মাননা প্রদান ও আলোচনা শেষে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এ পর্বে সারেগামাপা সঙ্গীত পরিষদের শিল্পীরা সম্মেলক কণ্ঠে গেয়ে শোনান ‘নোঙর ছাড়িয়া নায়ের’ ও ‘তীর হারা ঐ ঢেউয়ের সাগর’ শিরোনামের দু’টি গান। বাবার গাওয়া তুমুল জনপ্রিয় একটি গান গেয়ে শোনান জহির আলীম। উদাত্ত কণ্ঠে মিলনায়তনের শ্রোতাদের আলোড়িত করে শিল্পীর কণ্ঠে গীত হয় ‘হলুদিয়া পাখি, সোনারই বরণ/পাখিটি ছাড়িল কে’। এছাড়া একক কণ্ঠে গোলাম মোস্তফা পরিবেশন করেন ‘গহিন গাঙের ধরলাম পাড়ি’, আনিসুর রহমান ‘পরের জাগা পরের জমিন’, পলাশ ‘ও যার আপন খবর’, কাসপিয়া ‘হলুদিয়া পাখি’, সনেট ‘শোন গো রুপসী কন্যা’, রাকিব ‘কেহই করে বেচা কেনা’, মনিরা ইসলাম ‘আট কুঠুরী নয় দরজা’, আনোয়ার হোসেন ‘নবী মোর পরশ মনি’, পিংকু সাধক ‘অসময়ে কে বাজায়’, মল্লিকা ‘দোল দোল দোলনী’, নজরুল ইসলাম ‘দুয়ারে আইসাছে পালকি’, সোহান ‘মনে বড় আশা ছিল’, রাজকুমার ‘সিয়া বিন রাহেমী’, মোসলেমা আক্তার মির্জা ‘আমারে সাজাইয়া’, শাহনাজ পারভীন শিল্পী ‘কেনবা তারে সঁপে দিলাম’, ঝর্না ‘নাইয়ারে নায়ের বাদাম’ এবং মোঃ শহিদুল্লাহ গেয়ে শোনান ‘তুই বিনে আর বান্ধব’ শিরোনামের একগুচ্ছ গান।
×