ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

কয়েকটি রুটে বাস চলাচল বন্ধ

বাসচালক রুহুল হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল সায়েদাবাদ

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ২১ জুলাই ২০১৭

বাসচালক রুহুল হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল সায়েদাবাদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাসচালক রুহুল আমিন হত্যার প্রতিবাদে ক্ষোভে-বিক্ষোভে উত্তাল রাজধানীর সায়েদাবাদসহ টার্মিনালের আশপাশের এলাকা। বন্ধ রয়েছে কুমিল্লাসহ বেশ কয়েকটি রুটের বাস চলাচল। বৃহস্পতিবার হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে টার্মিনালে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে শ্রমিকরা। এছাড়া কালো ব্যাজ ধারণসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। এদিকে ঘটনার চারদিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। শুধু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দায় এড়াতে চায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে মালিক পক্ষ। হত্যা মামলা দায়ের না করতে তার পরিবারকে হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। চাপ দেয়া হচ্ছে অর্থের বিনিময়ে সমঝোতায় আসারও। গত ১৬ জুলাই রাতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চালক রুস্তম আলীর ওপর হামলা চালায় তিশা পরিবহনের মালিক মোঃ খোকনসহ আরও কয়েকজন। এরপর তার মৃত্যু হয়। বিপ্লবী সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলী রেজা ঘটনার পরদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে চালক হত্যাকা-ের তীব্র প্রতিবাদ জানান। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে যুক্ত পরিবহন মালিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানিয়েছেন তিনি। শ্রমিক নেতারা জানান, গত শনিবার রাত ৮টায় ঢাকা-কোম্পানীগঞ্জ রোডের তিশা পরিবহনের চালক মোঃ রুহুল আমিন গাড়ি নিয়ে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে আসেন। এরপর গাড়ির মালিক মোঃ জামাল হোসেন ভূঁইয়া খোকনের সঙ্গে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রুহুল আমিনের বাগ্বিত-া হয়। একপর্যায়ে বাস মালিক তার ভাইসহ সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে রুহুল আমিনের ওপর হামলা চালান। এরপর মারাত্মক আহত অবস্থায় তাকে রাজধানীর কোন হাসপাতালে না পাঠিয়ে কুমিল্লার দেবিদ্বার থানার মির্জানগর গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে বাড়ি যাবার পর রুহুল আমিনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে স্বজনরা কুমিল্লার হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। এ বিষয়ে দেবিদ্বার থানায় মৃত মোঃ রুহুল আমিনের বাবা একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এজাহারটি যাত্রাবাড়ী থানায় পাঠানোর পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও অভিযুক্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার করতে হবে। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে। প্রয়োজনে বাস চালানোও বন্ধ রাখবে শ্রমিকরা। রুহুল আমিন হত্যার প্রতিবাদে ২২ জুলাই সায়েদাবাদ টার্মিনালে বিক্ষোভ কর্মসূচীর ঘোষণা দিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, একটি পক্ষ ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা কোন ধামাচাপা চাই না। হত্যাকা-ের সুষ্ঠু বিচার চাই। শ্রমিক নেতারা অভিযোগ করে বলেন, আসামিরা টার্মিনালে না আসলেও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। সায়েদাবাস বাস টার্মিনাল শ্রমিক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী শোভার সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল অদুদ নয়ন, সাধারণ সম্পাদক করম আলী, সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, শেখ রিপন, আলী আকবর বাবুল, জাহাঙ্গীর কবীর, শরীফ হোসেন, দেলোয়ার হোসেন মজিদ, ইদ্রিস মোল্লা, কাজী সেলিম প্রমুখ।
×