ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মৎস্যমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুহিত

মৎস্য সম্পদে দেশের উন্নয়ন সত্যিই গর্বের বিষয়

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ২১ জুলাই ২০১৭

মৎস্য সম্পদে দেশের উন্নয়ন সত্যিই গর্বের বিষয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাছ উৎপাদনে দেশ ক্রমান্বয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে যাচ্ছে। বর্তমানে দেশে মাছের উৎপাদন প্রায় ৩৯ লাখ টন। আগামী তিন বছরেই অতিরিক্ত ছয় লাখ টন মাছ উৎপাদন হবে। ২০২১ সালের মধ্যে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৪৫ লাখ টনে উন্নীত করার লক্ষ্য থাকলেও এর আগেই তা অতিক্রম করা সম্ভব হবে। দেশের মৎস্য খাতের পরিবর্তন ক্রমেই লক্ষণীয় হয়ে উঠছে। ধারাবাহিক গড় প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান বৃদ্ধির কারণে খাতটি বর্তমানে প্রশংসনীয়। তবে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে বিজ্ঞানসম্মত ও প্রযুক্তিবান্ধব উপায়ে মাছ চাষ করতে হবে। এক্ষেত্রে সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে। মাছ চাষের প্রান্তিক পর্যায়ে প্রযুক্তির প্রসার ঘটাতে হবে। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে ‘কেন্দ্রীয় মৎস্য মেলা ২০১৭’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদফতরের যৌথ উদ্যোগে এ মেলার আয়োজন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ফিতা কেটে মেলার উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। পরে তিনি অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে মেলার স্টল ঘুরে দেখেন। মেলায় সরকারী-বেসরকারী একাধিক প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে। কোন কোন স্টল থেকে ক্রেতারা পাবেন মাছ কেনার সুযোগও। এছাড়াও মাছের পোনা, প্রযুক্তিবান্ধব মাছ চাষের পক্রিয়া ও মৎস্যসম্পদের উন্নয়নে বিভিন্ন এলাকায় নেয়া সরকারের কর্মকা-ও তুলে ধরা হয়েছে মেলায়। পাঁচ দিনব্যাপী চলমান এ মেলা শেষ হবে আগামী ২৪ জুলাই। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, মৎস্যসম্পদে দেশের যে উন্নয়ন তা সত্যিই গর্বের বিষয়। দেশে বর্তমানে ৩৯ লাখ টন মাছ উৎপাদন হলেও ২০২১ সালের মধ্যে তা ৪৫ লাখ টনে উন্নীত করা হবে। কিন্তু দেশে যে হারে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আগামী তিন বছরেই এ অতিরিক্ত ৬ লাখ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন করা সম্ভব হবে। মাছ উৎপাদনে দেশ মোটামুটি স্বয়ংসম্পূর্ণ। বর্তমানে আমরা কিছু মাছ আমদানি করছি আর কিছু মাছ রফতানি করছি। স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন শেষে ভবিষ্যতে মাছের রফতানি আরও বৃদ্ধি করা হবে। তিনি বলেন, মাছে যে পরিবর্তন তা খুবই লক্ষণীয়। মাছ রফতানিতে গড় প্রবৃদ্ধিও বেড়েছে। কৃষির যে উন্নয়ন তা সম্ভব হয়েছে প্রযুক্তি ব্যবহারে। মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতেও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। দেশে মাছ ও সবজির উৎপাদন যেভাবে বাড়ছে তা পুষ্টিতে বড় অবদান রাখছে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক বলেন, বর্তমানে বাজারে মাছের কোন অভাব নেই। গত বছর অলিগলিতে ইলিশ পাওয়া গেছে। এ বছরও ইলিশ ধরা পড়ছে। ইলিশ আমাদের ঐতিহ্যের ধারক-বাহক। সরকারের গৃহীত ব্যবস্থাপনা ও কৌশলের কারণে দেশে ক্রমাগত ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। তিনি বলেন, প্রতিদিন গড়ে যদি আমরা ৫৫ থেকে ৬০ গ্রাম মাছ খাই তাহলে আমাদের ৬২ লাখ টন মাছের প্রয়োজন। বর্তমানে আমাদের উৎপাদন ৪০ লাখ টন। বর্তমানে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও দেশে মাছের উৎপাদন বেশি হচ্ছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র বলেন, ’২১ সালের মধ্যে ৪৫ লাখ টন মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও আমরা এরচেয়ে বেশি উৎপাদন করতে পারব। দেশ মাছ উৎপাদনে ক্রমান্বয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে যাচ্ছে। তিনি বলেন, যারা সমুদ্রে মাছ ধরতে যায় তাদের অনেক সময় মহাজনের কাছ থেকে নৌকা ও জাল নিতে হয়। আমরা যদি দরিদ্র জেলেদের নৌকা ও জাল কেনার জন্য ঋণ দিতে পারি তাহলে তাদের দারিদ্র্যতা কমে আসবে।
×