ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সোনামসজিদ বন্দর রাজস্ব আদায়ে গতি পাচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২০ জুলাই ২০১৭

সোনামসজিদ বন্দর রাজস্ব আদায়ে গতি পাচ্ছে

ডিএম তালেবুন নবী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর সোনামসজিদে উত্তর উত্তর বাড়ছে রাজস্ব। আমদানি পণ্যভর্তি ট্রাক ঢোকা মাত্র নজরদারি, পাশাপাশি রুখে দেয়া হয়েছে বন্দরের গণচাঁদাবাজি ও রাজস্ব কর্মকর্তাদের অবৈধ অর্জনের নানা পন্থা বা অছিলা। যার কারণে বড় ধরনের সাফল্য এসেছে। গত অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের টার্গেটকে ছাড়িয়ে গেছে। টার্গেট ছিল ৩৩৮ কোটি ৫৬ লাখ ৮২ হাজার টাকা। এর বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫১৫ কোটি ২২ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। এই অতিরিক্ত ১৪৬ কোটি ৬৫ লাখ ৮৭ হাজার টাকা অর্জনের অন্যতম কারণ ভারতের মহদিপুর বন্দর ছেড়ে আমদানি পণ্যভর্তি ট্রাক সোনামসজিদ জিরো পয়েন্টে থেকে সরাসরি ওজন স্কেলে নেয়া হয় পাহারা দিয়ে। এই পদক্ষেপকে যুগান্তকারী আখ্যা দিয়ে সূত্র বলছে পণ্যবাহী ট্রাকের ওজন কারচুপি রুখে দেয়া সম্ভব হয়েছে। অথচও এই বন্দরের প্রধান আমদানি পণ্য নানা ধরনের ফলমূল। গত অর্থবছরে নানা কারণে ফল আমদানি কম হলেও রাজস্বের ওপর কোন প্রভাব পড়েনি। অন্যতম কারণ সব ধরনের অনিয়ম ঠেকিয়ে মাপযন্ত্রের অনিয়ম ওরা করতে পারেনি। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগতদের চাঁদাবাজি বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে আংশিকভাবে। এমনকি দীর্ঘদিন ধরে রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের অবৈধ পথে অর্জন বা পকেট ভর্তিও বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। আর এসব অবৈধ পন্থা বন্ধে বড় ধরনের সহযোগিতা দিয়েছে সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশন। তাদের কারণেই বৃদ্ধি পেয়েছে সোনামসজিদ বন্দরে রাজস্বের পরিমাণ। যার ফলে দেখা গেছে গত বছরের জুলাইয়ে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। কিন্তু আদায় হয়েছে ২০ কোটি ৪৮ লাখ ৭ হাজার টাকা। আগস্ট মাসে তা দ্বিগুণ ছাড়িয়ে যায়। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২২ কোটি ১১ লাখ ৩২ হাজার টাকা। আদায় হয়েছে ৫৪ কোটি ৪৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। একই ভাবে লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ ছাড়িয়েছে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নবেম্বর, ডিসেম্বরসহ গত ছয় মাসের। এ ধারা অব্যাহত রয়েছে এখনও। এসব পদক্ষেপের কারণে পণ্যবাহী ট্রাকের ওজন কারচুপি বন্ধ হলেও রাজস্ব ফাঁকির ক্ষেত্রে সোনামসজিদে দুর্নীতি এখনও বন্ধ হয়নি। সূত্র বলছে রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও বহিরাগত তথাকথিত রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের চাঁদাবাজি এখনও নানান স্টাইলে চলছে। এই দুটি খাতের দুর্নীতি বন্ধ হলে রাজস্বের পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে। বন্দরের কাস্টমসের জনৈক কমিশনারের দাবি, ভারত থেকে আমদানিকৃত প্রতিটি পণ্যের চালান যাচাই-বাছাই করে পণ্য খালাস দেয়া হলেও কিছু প্রভাবশালীরা এতে নাক গলানোর চেষ্টা করছে। এছাড়াও ওজনের বিষয়ে কঠোর তদারকি অব্যাহত রয়েছে। যে কারণে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে বলেন এখানে রাজস্ব বিভাগ, সিএ্যান্ডএফ ও আমদানি কারকরা একই পরিবারের সদস্য হিসাবে যতটুকু সহযোগিতার প্রয়োজন ততটুকুই করা হচ্ছে। তবে রাজস্ব কর্মকর্তারা কোন ধরনের দুর্নীতি করছে না এ বন্দরে। নানান মহলের চাঁদাবাজির বিষয়টি দমনে তাদের কোন এখতিয়ার নেই।
×