ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

হুমায়ূন আহমেদের প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে ‘নদ্দিউ নতিম’ নাটকের প্রদর্শনী কাল

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২০ জুলাই ২০১৭

হুমায়ূন আহমেদের প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে ‘নদ্দিউ নতিম’ নাটকের প্রদর্শনী কাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাঙালী জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম হুমায়ূন আহমেদ। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও তিনি সমাদৃত। সত্তর দশকের শেষভাগে থেকে শুরু করে মৃত্যু অবধি তিনি ছিলেন বাংলা গল্প-উপন্যাসের অপ্রতিদ্বন্দ্বী কারিগর। নন্দিত এ কথা সাহিত্যিকের পঞ্চম প্রয়াণবার্ষিকী ছিল বুধবার। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে ম্যাড থেটার বিশেষ নাট্য প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে আগামীকাল শুক্রবার। শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মঞ্চায়ন হবে হুমায়ূন আহমেদের ‘কে কথা কয়’ উপন্যাস অবলম্বনে ‘নদ্দিউ নতিম’ নাটকের বিশেষ প্রদর্শনী। নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন আসাদুল ইসলাম। দলীয়সূত্রে জানা যায়, নাটক প্রদর্শনীর আগে হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। নাটকের নির্দেশক আসাদুল ইসলাম বলেন, যে তিনটি কারণে নাটকটি দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এবং তীব্র আগ্রহের জন্ম দিয়েছে, তা হলোÑ প্রথমত বাংলাদেশের মূলধারার নাটকে ‘নদ্দিউ নতিম’ই প্রথম নাটক যেখানে একজন শিশু একটি কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছে। দ্বিতীয়ত বর্তমান সময়ে একজন মানুষ অন্য একজনকে হত্যার জন্য নিজেকে আত্মাহুতি দিচ্ছে। এ নাটকে দেখা যায় একজন মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুকে বাঁচাতে একজন কবির নির্বিকার আত্মাহুতি। অর্থাৎ অন্যকে হত্যা করতে নয় বরং বাঁচাতেই আরেক মানুষের জীবন উৎসর্গ, যা এ সময়ের জন্য এক অনন্য আদর্শ হিসেবে পরিগণিত। তৃতীয়ত এ নাটকে একটি কাল্পনিক পরিবারের কাহিনী মঞ্চস্থ হয় যা একটি বাস্তব পরিবারের সদস্যরা অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকের সামনে ফুটিয়ে তোলে। নাটকের কাহিনী সম্পর্কে নির্দেশক বলেন, মতিন একজন কবি। মনে মনে নিজেকে কল্পনা করে নেয় সে একজন উজবেক কবি। নিজেই সে নিজেকে স্বপ্ন দেখেÑ ধবধবে ফর্সা গায়ের রং, পরনে জোব্বার মতো একটা পোশাক, লম্বাটে মুখ, চোখ তীক্ষè। মতিনের মধ্যে বাস করে অন্য এক মতিন। দিনে দিনে মতিন উদ্দিন হয়ে ওঠে নদ্দিউ নতিম। মতিনের হৃদয়ের সবটুকু দখল করে থাকে সহপাঠিনী নিশু। ভাবের ভেলায় ভেসে বেড়ালেও ভাবাবেগে মতিন ডুবে যায় না, সে বুঝতে পারে নিশুর মতো স্কলার মেয়ের যোগ্য সে নয়। মতিনের একদিন চোখে পড়ে পত্রিকার পাতায় তিন লাইনের ছোট্ট একটা বিজ্ঞাপন-একজন সার্বক্ষণিক টিউটর প্রয়োজন, টিউটরের সৃজনশীলতা ব্যক্তিগত যোগ্যতা হিসেবে ধরা হবে, বেতন আকর্ষণীয়। বেতনের আকর্ষণীয় ক্ষমতায় মতিন তার কবি সত্ত্বাকে সাময়িক স্মিমিত রেখে কমল নামের একজন মানসিক প্রতিবন্ধী বাচ্চার টিউটর পদে অভিসিক্ত হয়। মতিনের কর্মকা-ে অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হওয়ায় তাকে টিউটর পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু প্রতিবন্ধী বাচ্চাটি কবিকে ভুলে না। বাচ্চাটি কবির সঙ্গে কথা বলতে চায়, কিন্তু সে সুযোগ তো আর নেই। কবি চলে গেছে। বাচ্চাটি জেদ ধরে সে কথা বলবেই। একপর্যায়ে সুযোগ হয় কবির সঙ্গে কথা বলার। কমল মতিনের সঙ্গে তার জীবনের একটি সিক্রেট শেয়ার করে, যে সিক্রেটের জন্য মতিনকে জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়াতে হয়। হাসপাতালের এক হিমশীতল ঘরে সে শুয়ে থাকে। তার কাছে মনে হয়, সে যেন অনন্তকাল এভাবেই শুয়ে ছিল। কী সেই সিক্রেট যার জন্য কবিকে জীবন দিতে হলো? এ প্রশ্নের জবাব খুঁজতেই এই নাটক। নাটকটির সহযোগী নির্দেশক আনিসুল হক বরুণ। নাটকের তিনটি চরিত্রে অভিনয় করছেন আসাদুল ইসলাম, সোনিয়া হাসান ও আর্য মেঘদূত।
×