বিভিন্ন সামাজিক মাপকাঠিতে বাংলাদেশ এখন ভারতের চেয়ে এগিয়ে বলে মন্তব্য করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। ভারতীয় দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সাম্প্রদায়িকতা তো বামপন্থী আদর্শের অন্যতম প্রধান শত্রু। কারণ, শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে সে কেবল ভেদাভেদ সৃষ্টি করে না বরং অত্যন্ত কুৎসিত, নিষ্ঠুর ও হিংস্র ভেদাভেদ তৈরি করে। এমনই এক প্রশ্নে অমর্ত্য সেন বলেন, এখানে বাংলাদেশের কথাটা খুব প্রাসঙ্গিক বলে মনে করি। সেখানে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে বিরাট লড়াই চলছে। যারা সেই লড়াই করছেন, তারা প্রচ- সমস্যা এবং আক্রমণের শিকার হয়েও মাথা নত করেননি।
তিনি আরও বলেন, সেখানকার (বাংলাদেশের) মানুষ যে এই লড়াইটা করতে পারছেন, তার কতক কারণ আছে। এক, দেশভাগের সময় একটা ব্যাপার হয়েছিল। বেশিরভাগ জমিদার হিন্দু ছিলেন, তারা পালিয়ে গেলেন, ফলে বিনাযুদ্ধে একটা ভূমি সংস্কার হয়ে গেল। যেটা আর্থিক ভেদাভেদ অনেকটা কমিয়ে দিল এবং তার ফলে সমবেত আন্দোলন গড়ে তোলার তুলনায় সহজ হলো। দুই, বাংলা ভাষা নিয়ে আন্দোলনে সমাজের নানা দিক থেকে বহু মানুষ একসঙ্গে যোগ দিলেন। এর ফলে পরবর্তীকালে শিক্ষা বা স্বাস্থ্যের মতো নানা ক্ষেত্রে সামাজিক অগ্রগতি সহজ হলো। বিশেষ করে মেয়েদের ভূমিকা অনেক জোরদার হতে পারল। অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন সাক্ষাতকারে জানান, বিভিন্ন সামাজিক মাপকাঠিতে বাংলাদেশ এখন ভারতের চেয়ে এগিয়ে। এর পেছনে অনেকে মিলে কাজ করার এই ধারাটি খুব বড় ভূমিকা নিয়েছে এবং এটাই আবার বিভিন্নস্তরের মানুষকে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে একজোট হতে সাহায্য করেছে। এ থেকে আমাদের অবশ্যই শিক্ষা নেয়া জরুরী এবং আমার ধারণা, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে যে সংহতি গড়ে তুলতে পারি সেখানে বিভিন্ন শ্রেণী থেকে লোক থাকবেন।
