ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্প-পুতিন ‘গোপন’ বৈঠক

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২০ জুলাই ২০১৭

ট্রাম্প-পুতিন ‘গোপন’ বৈঠক

হোয়াইট হাউস নিশ্চিত করেছে, জি-২০ সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে আরেক দফা কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ খবর আগে প্রকাশ করা হয়নি। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ৬-৭ জুলাই জার্মানির হামবুর্গে জি-২০ সম্মেলনে ট্রাম্প এবং পুতিন আনুষ্ঠানিক মিলিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর তারা ফের কথা বলেন, যা এ পর্যন্ত গোপন রাখা হয়েছিল। হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে একে ‘সংক্ষিপ্ত আলোচনা’ বলা হলেও একে ‘দ্বিতীয় বৈঠক’ বলা হয়নি। এএফপি, ওয়াশিংটন পোস্ট ও গার্ডিয়ান। ট্রাম্প একজন রুশ অনুবাদকের মাধ্যমে পুতিনের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা কথা বলেন। ওই সম্মেলনে ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের সোয়া দুই ঘণ্টার বৈঠকটি গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পেয়েছিল। এরপর সম্মেলনের নৈশভোজের সময় দুই নেতার মধ্যে অনির্ধারিত কিছু কথাবার্তা হয়। তারা কি নিয়ে আলাপ করেছিলেন সে সম্পর্কে হোয়াইট হাউস কিছু জানায়নি। জি-২০ সম্মেলনে নৈশভোজের একপর্যায়ে ট্রাম্প নিজের আসন থেকে উঠে গিয়ে পুতিনের পাশে বসেন। এ সময় পুতিনের দোভাষী ছাড়া আর কেউ সেখানে ছিলেন না। এমন সময় এ খবর প্রকাশিত হলো যখন ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছিল কি না, তা নিয়ে ওয়াশিংটনে তদন্ত চলছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন এ তদন্ত চলাকালে পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের এ ধরনের আলাপচারিতা প্রকাশের ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিতে পারে। মঙ্গলবার রাতে হোয়াইট থেকে দেয়া ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ট্রাম্প আর পুতিনের মধ্যে দ্বিতীয় কোন বৈঠক হয়নি। নৈশভোজ শেষে দুজনের মধ্যে সংক্ষিপ্ত আলাপ হয়েছে মাত্র। তাদের মধ্যে দ্বিতীয় কোন বৈঠক হয়নি। এগুলো ভুয়া, অপপ্রচার মাত্র।’ মঙ্গলবার রাতে টুইটে ট্রাম্প বলেন, ‘পুতিনের সঙ্গে গোপন নৈশভোজের ভুয়া সংবাদের গল্প বিভ্রান্তিকর। জার্মানির চ্যান্সেলর জি-২০ এ অংশ গ্রহণকারী সব নেতা ও তাদের স্ত্রীদের আমন্ত্রণ করেছিলেন। সাংবাদিকরা সেটি জানেন’। নিউইয়র্কভিত্তিক ইউরেশিয়া গ্রুপের প্রধান ইয়ান ব্রেমার সোমবার প্রথম ওই বৈঠকের কথা ফাঁস করেন। তিনি বলেন, খাবার যখন প্রায় শেষ পর্যায়ে তখন ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে আলোচনা শুরু হয় যা চলে প্রায় এক ঘণ্টা। তিনি জানিয়েছেন, নৈশভোজের মাঝপথে ট্রাম্প নিজের আসন ছেড়ে পুতিনের কাছে যান এবং প্রায় এক ঘণ্টা ‘একান্তে প্রাণবন্তভাবে’ কথাবার্তা বলেন, এ সময় ‘পুতিনের নিজস্ব অনুবাদকরা ছাড়া আর কেউ সেখানে ছিলেন না’। এতে মার্কিন অনুবাদকদের অনুপস্থিতি নৈশভোজে উপস্থিত অন্য নেতারা বিস্মিত হন বলে দাবি করেছেন ব্রেমার। তিনি এ ঘটনাকে জাতীয় নিরাপত্তা প্রটোকল লঙ্ঘন বলেও অভিহিত করেন। তবে হোয়াইট হাউস একে ‘প্রায় স্বাভাবিক’ ঘটনা বরে মন্তব্য করে। কারণ বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখা মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। ওই নৈশভোজে প্রত্যেক দেশের নেতা এবং তাদের স্ত্রীদের জন্য মাত্র একজন দোভাষী রাখার অনুমতি ছিল। জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের স্ত্রীর পাশে ট্রাম্প বসেছিলেন, ট্রাম্পের আরেক পাশে বসেন শিনজো আবে। অন্যদিকে ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প বসেন পুতিনের পাশে। সেখানে উপস্থিত মার্কিন দোভাষী কেবল জাপানি ভাষাই জানতেন। ট্রাম্প যখন পুতিনের সঙ্গে কথা বলেন তখন তারা রুশ দোভাষী ব্যবহার করেছেন, কারণ মার্কিন দোভাষী রুশ ভাষা জানতেন না। ওই ভোজসভায় নেতৃবৃন্দ ও অনুবাদক ছাড়া কোন দেশের কোন কর্মকর্তা বা মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন না। কোন মার্কিন দোভাষী না থাকায় তাদের মধ্যে আসলে কি কথা হয়েছে সেটি জানার সুযোগ আর নেই। ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র মাইকেল এ্যান্টন বলছেন, ট্রাম্প-পুতিন আলাপচারিতার সময় সেখানে কোন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন না। তবে সম্মেলনের অংশ নেয়া নেতৃবৃন্দ ও তাদের স্ত্রীদের দৃষ্টির সামনেই দুই নেতা কথা বলেন।
×