ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আমতলীতে ভিজিএফের গম বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ২০ জুলাই ২০১৭

আমতলীতে ভিজিএফের গম বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ১৯ জুলাই ॥ আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নে ঈদ সহায়তা বিশেষ ভিজিএফের খাদ্যশস্য গম বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জনপ্রতি বরাদ্দ ১৩.২৭ কেজি হলেও দুস্থরা পেয়েছে ৯ কেজি। এছাড়া প্রকৃত দুস্থরা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বরাদ্দকৃত গমের সঠিক তথ্য ইউপি সদস্যরা জানেন না। জানা গেছে, উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৩৫ হাজার ৬০০ ৪৭ জন অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য জনপ্রতি ১৩.২৭ কেজি গম হিসেবে ৪৭৩ টন গম বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে গুলিশাখালী ইউনিয়নে ৫ হাজার ১৪৮ জনের জন্য ৬৮.৩১৩ টন, কুকুয়া ইউনিয়নে ৪ হাজার ৬০০ জনের জন্য ৬১.৪২ টন, আঠারগাছিয়া ইউনিয়নে ৪ হাজার ৫২৩ জনের জন্য ৬০.২০ টন, হলদিয়া ইউনিয়নে ৫ হাজার ১৮২ জনের জন্য ৬৮. ৭৬৫ টন, চাওড়া ইউনিয়নে ৪ হাজার ১৩৭ জনের জন্য ৫৪. ৮৯৭ টন, আমতলী সদর ইউনিয়নে ৪ হাজার ৬৩৪ জনের জন্য ৬১.৪৯৩ টন, আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নে ২ হাজার ৭৪১ জনের জন্য ৩৬.৩৭০ টন এবং আমতলী পৌরসভায় ৪ হাজার ৬৮২ জনের জন্য ৬২.১৩০ টন গম বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ইউনিয়নে গম বিতরণ করা হয়েছে। বিতরণকালে জনপ্রতি বরাদ্দকৃত গম ওজনে ৪ কেজি কম দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ১৩.২৭ কেজির গমের পরিবর্তে জনপ্রতি দেয়া হচ্ছে ৯ কেজি। অভিযোগ রয়েছে প্রকৃত দুস্থরা গম পাচ্ছেন না। গুলিশাখালী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য কাজী নিজামুল বলেন, সরকার কত টন গম বরাদ্দ দিয়েছে তা আমরা ইউপি সদস্যরা জানি না। চেয়ারম্যান সাহেব আমাকে ২০০ জনের নামের তালিকা দিতে বলছে, সেভাবে তালিকা দিয়েছি। তালিকার সকলে গম পেলেও কেউ ১৩.২৭ কেজি পায়নি। ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব আমাকে ২০০ জনের নামের তালিকা দিতে বলেছিল। এতে আমার ওয়ার্ডের দুস্থদের মধ্যে সঙ্কুলান না হওয়ায় আমি তালিকা দেইনি। চেয়ারম্যান তার অনুগত কর্মীদের দিয়ে তালিকা করে গম বিতরণ করছেন। সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য হাওয়া আক্তার বলেন, আমার তিনটি ওয়ার্ডে ২০০ জনের নামের তালিকার বিপরীতে ৪০ বস্তা গম দিয়েছিল। ওই গম বালতি দিয়ে বিতরণ করেছি। খেকুয়ানী গুচ্ছ গ্রামের বদু মিয়া ও লাভলী বেগম বলেন, সবাইকে একটি প্লাস্টিকের বালতি দিয়ে এক বালতি করে গম দিয়েছে। দোকানে গিয়ে মেপে দেখি ওজনে কম ৯ কেজি হয়েছে। গুলিশাখালী ইউনিয়নের কালিবাড়ী গ্রামের হাসিনা বেগম, জাকির হোসেন, ফকিরখালী গ্রামের চাঁনু ও মোতালেব মিয়া বলেন ১৩.২৭ কেজির তালিকায় টিপ নিলেও পেয়েছি ৯ কেজি। ওই ইউনিয়নের জব্বার গাজী ও ফুলনেছা বলেন, আমরা প্রকৃত দুস্থ হওয়া সত্ত্বেও গম পাইনি। গুলিশাখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ্যাড. নূরুল ইসলাম মিয়া বলেন, সঠিকভাবেই গম বিতরণ করা হয়েছে। কোথাও কোন অনিয়ম হয়নি। ট্যাগ অফিসার উপজেলা প্রকৌলশী মোঃ নজরুল ইসলামের উপস্থিতিতে গম বিতরণ করা হয়েছে। গুলিশাখালী ইউনিয়নে দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, আমি যাইনি, সহকারী প্রকৌশলী নিজাম উদ্দিনকে পাঠিয়েছিলাম। ওজনে কম দেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুশফিকুর রহমান বলেন সঠিকভাবে বিতরণের জন্য সকল ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×