ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মালয়েশিয়ায় আটক কর্মীদের বিষয়ে কোন অগ্রগতি নেই

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১৯ জুলাই ২০১৭

মালয়েশিয়ায় আটক কর্মীদের বিষয়ে কোন অগ্রগতি নেই

ফিরোজ মান্না ॥ মালয়েশিয়ায় আটক বিদেশী কর্মীদের নিয়ে আলোচনায় কোন অগ্রগতি হয়নি। সোমবার আলোচনায় বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের কূটনৈতিকরা কর্মীদের বৈধ করার জন্য আরও এক দফা সময় বাড়ানোর অনুরোধ করেন। কিন্তু মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক অবৈধ কর্মীদের শৃঙ্খলার মধ্যে আনতেই এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে তিন দেশের কূটনৈতিকদের জানান। গ্রেফতারকৃত কর্মীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি বার বার আলোচনায় উঠে আসে। অবৈধ কর্মীদের নিয়ে দীর্ঘ বৈঠকের একপর্যায়ে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ সময় বাড়ানোর বিষয়ে বিবেচনা হতে পারে এমন আশ্বাস দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, আলোচনার দুয়ার এখনও বন্ধ হয়নি। আমরা মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আরও আলোচনা চালিয়ে যাব। আশা করছি অবৈধ কর্মীদের বৈধ করার চেষ্টা অব্যহত রাখব। তবে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ বলেন, বৈঠকের বিষয়ে আমরা এখনও পুরোপুরি অবহিত না। তাই এই মুহূর্তে আমার পক্ষে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। সূত্র জানিয়েছে, অবৈধ কর্মীদের বৈধ করার জন্য আরও এক দফা সময় বাড়ানোর বিষয়ে মালয়েশিয়া এতে কোন সায় দেয়নি। কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়ার অভিবাসন দফতরে মহাপরিচালক মুস্তাফার আলীর কাছে এই অনুরোধ জানায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোঃ শহীদুল ইসলাম। বৈঠকে মুস্তাফার আলী অবৈধ কর্মীদের সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, তার দেশ অবৈধভাবে কর্মরত কর্মীদের শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে চায়। এ কারণে গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। মালয়েশিয়া থেকে খবর মিলেছে, দফায় দফায় সময় দেয়ার পরও কেন অবৈধ কর্মীরা ই-কার্ড নেয়নি। যারা ই-কার্ডের আওতায় আসেনি তাদের নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে। সোমবারের বৈঠকে মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন প্রধান মুস্তাফার আলী বাংলাদেশের কর্মীদের বিষয়ে বলেন, মাত্র ২৩ শতাংশ কর্মী ই-কার্ডের সুবিধা নিয়েছে। বাকি ৭২ শতাংশ কর্মীই ই-কার্ডের সুযোগ নেয়নি। এ অবস্থায় আরেক দফা সময় বাড়ানোর কোন কারণ নেই। আরও কয়েক দফা সময় বাড়ানো হলেও অবৈধরা অবৈধই থেকে যাবে। এদিকে, সোমবারের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে হাইকমিশনার মোঃ শহীদুল ইসলাম মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানান। ইমিগ্রেশন বিভাগ তার এই অনুরোধে কোন সায় দেয়নি। আবার বাতিলও করে দেয়নি। মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রম কর্মকর্তা সায়েদুল ইসলাম বলেন, দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ আলোচনায় শুরুতে ইতিবাচকই ছিল। দীর্ঘ বৈঠকের এক পর্যায়ে দেশটির ইমিগ্রেশন দফতরে মহাপরিচালক মুস্তাফার আলী বলেন, তার দেশ শুধু বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের কর্মীদের বিষয়েই কথা বলবে না। আরও যে ১২টি সোর্স কান্ট্রি থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মীরা কাজ করেন তাদের বিষয়েও কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। পর্যায়ক্রমে ওই সব দেশের কূটনৈতিকদের সঙ্গেও আলোচনা করবে অভিবাসন দফতর। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে সময় বাড়ানোর বিষয়ে ইমিগ্রেশন বিভাগ কোন নেতিবাচক কথা বলেনি। এ জন্য আশা করা যাচ্ছে আরও আলোচনা হতে পারে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। বিষয়টি নিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কথা বলা সম্ভব হয়নি। পরে বিএমইটির ডিজি সেলিম রেজার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। পরে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ বলেন, আসলে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কি ধরনের আলোচনা হয়েছে তা আমরা পুরোপুরি অবহিত না। কারণ এখনও আলোচনার সুযোগ আছে বলে হাইকমিশন জানিয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, মালয়েশিয়ায় নিয়োগকর্তা ও দালালের মাধ্যমে নিবন্ধনের সুযোগ নিতে গিয়ে বাংলাদেশের কর্মীরা অবৈধ হয়ে পড়েছেন। যেহেতু মালিক ও দালালদের কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাই এসব কর্মীদের বৈধতার জন্য বাংলাদেশকে আবার সুযোগ দেয়ার অনুরোধ করা হয়।
×