ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

কথা কাব্য ও গানে নেলসন ম্যান্ডেলাকে শ্রদ্ধাঞ্জলি

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১৯ জুলাই ২০১৭

কথা কাব্য ও গানে নেলসন ম্যান্ডেলাকে শ্রদ্ধাঞ্জলি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা। আফ্রিকায় জন্ম নেয়া মানুষটি বিশ্ববাসীর কাছে হয়ে আছেন মুক্তির প্রতীক। সেই সুবাদে এদেশেরও মুক্তিকামী মানুষের হৃদয়ে ঠাঁই পেয়েছেন। মঙ্গলবার ছিল বরেণ্য এই বিশ্বনেতা ও দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতির জন্মদিন। জন্মদিনে তাকে জানানো হলো অপার ভালবাসার সঙ্গে শ্রদ্ধাঞ্জলি। গানের সুরে, কবিতার ছন্দে ও বক্তার আলোচনায় উঠে এলো তার কীর্তির কথা। ম্যান্ডেলার জন্মদিনের বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী। আয়োজনের শিরোনাম ছিল ‘তোমার ঢাকের শব্দ আজও দ্রিমি দ্রিমি বাজে/তোমার দেহই তোমার ঢাল আফ্রিকা’। অনুষ্ঠানের শুরুতেই পরিবেশিত হয় ম্যান্ডেলাকে নিয়ে উদ্বোধনী সঙ্গীত। ঋষিজের শিল্প সম্মেলক কণ্ঠে গেয়ে শোনায় ‘ম্যান্ডেলা, নেলসন ম্যান্ডেলা/ জয় জয় জয়তু ম্যান্ডেলা’। দুই পর্বে বিভক্ত অনুষ্ঠানমালার প্রথম পর্বে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। আলোচক ছিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি আখতার-উজ-জামান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীর। রাশেদ খান মেনন বলেন, আমার সৌভাগ্য হয়েছিল নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে সাক্ষাতের। তিনি যখন বাংলাদেশে আসেন তখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং বঙ্গভবনে তার সঙ্গে হাত মেলানোর সুযোগ পাই। তার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে তিনি লড়াই করেছেন, কিন্তু সাদাদের ঘৃণা করতে শেখাননি। সশস্ত্র লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে এক কঠিন জীবনযাপন করেছেন তিনি। শাহরিয়ার আলম বলেন, বর্তমান বিশ্বে যারা রাজনীতি করেন, তাদের মধ্যে অনুপ্রেরণা হিসেবে নেয়ার মতো মানুষ খুব একটা অবশিষ্ট নেই। নেলসন ম্যান্ডেলা ও বঙ্গবন্ধু কাছাকাছি সময়েরই নেতা। তারা আমাদের আদর্শ। আখতার-উজ-জামান বলেন, নেলসন ম্যান্ডেলা, মহাত্মা গান্ধী, চে’ গুয়েভারা, ফিদেল কাস্ট্রো- এ ধরনের রাজনীতিকরা হাজার বছরে আসেন। তাদের মতো মহামানবরা একজনই পুরো পৃথিবীকে আলোকিত করতে পারেন। আমরা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এগিয়ে যেতে চাই। মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার রুবেন আইল্যান্ডের যেখানে নেলসন ম্যান্ডেলা বন্দী ছিলেন, সেখানে আমি গিয়েছিলাম। আর সম্প্রতি পড়েছি বঙ্গবন্ধুর “কারাগারের রোজনামচা”। এ দুই মহামানবের জেলজীবনের সম্পর্কে যতদূর জেনেছি, তাদের অনেক বিষয়ের মধ্যে মিল পাই। এটাই হয়তো মহামানবদের মিলের জায়গা। গোলাম কুদ্দুছ বলেন, তিনি একটি আদর্শে পরিণত হয়েছেন। মানুষ সাদা-কালো ও অন্যকিছু নয়, এক ও অভিন্ন। অধিকারের প্রশ্নের তিনি কখনও আপোস করেননি। ফকির আলমগীর বলেন, তার হাত ধরে আমি গান গেয়েছি, নেচেছি। এই সৌভাগ্য আমার হয়েছে। তার আদর্শের পথ ধরে আমরা এগিয়ে যাব। আগামী বছর তার জন্মশতবর্ষ আরও বৃহৎ পরিসরে আয়োজন করব। স্মরণে শামসুল হক ও আজহার ইসলাম শিশু সাহিত্যিক ও গবেষক শামসুল হক এবং প্রাবন্ধিক ও গবেষক আজহার ইসলামকে স্মরণ করেছে বাংলা একাডেমি। মঙ্গলবার বিকেলে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে এ স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রয়াতদের স্মৃতিচারণ ও মূল্যায়নভিত্তিক আলোচনায় অংশ নেন কবি আসাদ চৌধুরী, অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল কাইউম, কথাসাহিত্যিক সুব্রত বড়ুয়া ও শিশু সাহিত্যিক আলী ইমাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। ‘আমি নাসিফ বলছি’ গ্রন্থের প্রকাশনা প্রকাশিত হলো মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম এনডিসি রচিত গ্রন্থ ‘আমি নাসিফ বলছি। অটিজম জীবনের সাহসী যাত্রার কথা মেলে ধরা বইটির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয় মঙ্গলবার। এদিন বিকেলে শিশু একাডেমি মিলনায়তনে গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদের উদ্যোগে এ প্রকাশনা উৎসবের সহযোগিতায় ছিল বাংলাদেশ শিশু একাডেমি। প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
×